আগামী রমজান উপলক্ষে এক কোটি হতদরিদ্র মানুষকে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় চাল সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান মন্ত্রী। আগামী রমজানে মানুষ অন্তত চালের জন্য বিব্রতকর অবস্থায় পড়বে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৪ মার্চ দেশে শুরু হবে মুসলমানদের সিয়াম সাধনার মাস রমজান।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এ বছর সর্ববৃহৎ বিতরণ কার্যক্রম চলছে। প্রায় ২ হাজার ৫০০ ডিলারের মাধ্যমে চাল ও আটা বিতরণ চলছে। এ সময় সাধারণত ওএমএস বন্ধ থাকে। ওএমএসে নিম্ন আয়ের মানুষ ৩০ টাকা কেজিতে চাল ও ২৪ টাকা কেজিতে আটা পাচ্ছে। ওএমএস চলতে থাকবে।
Advertisement
আরও পড়ুন: চাল নিয়ে সিন্ডিকেটের ‘চালবাজি’
তিনি বলেন, আগামী মার্চ থেকে ৫০ লাখ পরিবার ১৫ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি চাল পাবে। মার্চ, এপ্রিল, মে এবং সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর- এ পাঁচ মাস খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চলবে। ওএমএসে আটার বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে বলেও জানান খাদ্যমন্ত্রী।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আগামী রমজানে মানুষ অন্তত চালের জন্য বিব্রতকর অবস্থায় পড়বে বলে আমি মনে করি না। পাশাপাশি বেসরকারি আমদানিটা আমাদের খোলা রয়েছে। তবে কম আসছে। আমাদের দেশেও প্রচুর চালের মজুত আছে।
‘আমাদের সরকারি মজুতও প্রচুর। স্বাধীনতার পর থেকে এখন আমাদের সবচেয়ে বেশি মজুত। ১৫ ফেব্রুয়ারির তথ্য অনুযায়ী ২০ লাখ ৩৩ হাজার টন সরকারি খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে।’
Advertisement
আমনে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে আমাদের পাঁচ লাখ টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে এখন পর্যন্ত তিন লাখ ৭৪ হাজার ৩০ টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। চার লাখ ৬২ হাজার ৪৭৩ টন চাল কেনার জন্য মিলারদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। আশাকরি ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।’
কৃষক বাজারে ভালো দাম পাচ্ছে, তাই সরকার ধান কিনতে পারছে না বলেও জানান মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বছরে রপ্তানি হচ্ছে ১০ হাজার টন সুগন্ধি চাল
বাংলাদেশে বৈশ্বিক সংকটের প্রভাব পড়বে না জানিয়ে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘আমনে আমাদের বাম্পার ফলন হয়েছে। দুর্বিপাক না হলে বোরোতেও যদি বাম্পার ফলন হয় তাহলে আমদানির আর প্রয়োজন হবে বলে আমি মনে করি না।’
রমজান উপলক্ষে এক কোটির বেশি পরিবারকে ভিজিএফ দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই রমজানের মধ্যে সুন্দর আতপ চাল দেবো, যেটা আমরা মিয়ানমার থেকে আমদানি করেছি।’
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়টি (রমজানে এক কোটি পরিবারকে ভিজিএফে চাল) আমাদের কাছে আসছে। আমাদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। এটি বিতরণ করবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।’
এ বিশেষ ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় এক কোটি মানুষকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে বলেও খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: দেশে খাদ্যের কোনো ঘাটতি নেই: সংসদে মন্ত্রী
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে, কোনো হাহাকার নেই। এটাই আমাদের জন্য বড় পাওয়া।’
চালের বস্তায় ধানের জাত লেখা বাধ্যতামূলক করতে একটি আইন হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আইনটি আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ে আছে। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের বৈঠক আছে। আইনমন্ত্রী ভেটিং করে ছেড়ে দিলেই মন্ত্রিসভার পর পরবর্তী সংসদ অধিবেশনে যাবে।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘চাল কতটুকু ছাঁটাই করা যাবে তাও আইনে থাকবে। অবৈধ মজুতের শাস্তি যাবজ্জীবন আছে। আরও বেশিও হতে পারে, ভেটিংয়ে যদি আসে।’
আরএমএম/এমএইচআর/বিএ/জিকেএস