ক্রাচে ভর করে নারায়ণগঞ্জ আদালতে উঠলেন হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হক। এসময় তাকে ‘আল্লাহু আকবার’ তাকবির দিতে শোনা যায়। আদালত থেকে বের হয়ে পুলিশ ভ্যানে ওঠার সময়ও তিনি একই তাকবির দিতে থাকেন।
Advertisement
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য তোলা হয় মামুনুল হককে।
এসময় আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত মামুনুল হকের অনুসারীরাও স্লোগান দেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের থামিয়ে দূরে সরিয়ে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবীরা জানান, মামুনুল হককে আদালতে ওঠানোর পুরো সময়জুড়েই ‘আল্লাহু আকবার’ তাকবির বলতে শোনা গেছে।
Advertisement
মামুনুল হকের আইনজীবী একেএম ওমর ফারুক নয়ন জাগো নিউজকে বলেন, ‘মামুনুল হক অসুস্থ। তিনি হাঁটতে পারেন না। এজন্য তাকে ক্রাচে ভর করে হাঁটতে হয়েছে।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশ ভ্যানে তোলার সময়ে মামুনুল হক তার অনুসারীদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘তোমরা সত্যের ওপর অবিচল থাকো। একদিন সত্যের বিজয় হবে।’
এদিন মামুনুল হকের বিরুদ্ধে তিন পুলিশ কর্মকর্তা সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা হলেন চার্জশিটের ২৩ নম্বর সাক্ষী এএসআই আনিসুর রহমান, ২৪ নম্বর সাক্ষী এএসআই কর্ণকুমার হালদার ও ২৫ নম্বর সাক্ষী এএসআই শেখ ফরিদ।
এ পর্যন্ত এ মামলায় মোট ১৮ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। আগামী ২৫ এপ্রিল পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।
Advertisement
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আজ মামুনুল হকের বিরুদ্ধে তিনজনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৮ জনের সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত। যারাই সাক্ষী দিয়েছেন তারা বলেছেন, মামুনুল হক ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত।’
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য মামুনুল হককে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়েছিল। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আবার তাকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।
২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে তাকে ঘেরাও করেন। পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ব্যাপক ভাঙচুর করেন এবং তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান।
ঘটনার পর থেকেই মামুনুল হক মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় অবস্থান করে আসছিলেন। এসময় পুলিশ তাকে নজরদারির মধ্যে রাখে। এরপর ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় মামুনুলকে। পরে এ ঘটনায় (৩০ এপ্রিল) সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা করেন ওই নারী। তবে ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক।
মোবাশ্বির শ্রাবণ/এসআর/জিকেএস