বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুরের একটি অসহায় পরিবারের মুখে হাসি ফোটালো ‘উৎস সোস্যাল অরগানাইজেশন’ নামে একটি সামাজিক সংগঠন। জন্মের কয়েক মাস পরে অসুস্থ হয়ে প্রতিবন্ধিত্ব বরণ করা শফিকুলকে একটি দোকান ঘরসহ দোকানের মালপত্র কিনে ও নগদ টাকা দিয়েছেন উৎসের সদস্যরা।
Advertisement
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ফরিদপুর শহরতলীর কানাইপুর বাজারে বিভিন্ন মালপত্রসহ শফিকুলকে একটি দোকান ঘর সাজিয়ে দেওয়া হয়। দোকানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আশার আলো-২’ স্টোর।
জানা গেছে, মধুখালী উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের কারন্যপুর গ্রামের মো. শফিকুল ইসলাম (৪৯) জন্মের কয়েক মাস পরে টাইফয়েডে আক্রান্ত হলে ডান হাত ও ডান পা অকেজো হয়ে যায়। বাম পা ও হাত দিয়ে কোনোমতে মুদি দোকান করে সংসার চালাতেন। কিন্তু টাকার অভাবে দোকানটি হারিয়ে তিনি নিঃস্ব হয়ে পড়েন।
চার সদস্যের সংসারে দুই মেয়েকে নিয়ে বহু কষ্টে দিন পার করছিলেন তিনি। এই অসহায় পরিবারের কথা উৎস জানতে পারে। তারপর তার জন্য কিছু করার উদ্যোগ গ্রহণ করে সংগঠনটি। সেই ভাবনা বাস্তবায়ন করার জন্য বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে সংগঠনটি শফিকুলের পাশে ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দেয়।
Advertisement
শফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আমার জন্মের কয়েকমাস পরে টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে ডান হাত-পা অকেজো হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করি। স্বাভাবিক কোনো কাজ করারও শক্তি নেই। স্ত্রী, দুই মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে খেয়ে না খেয়ে দিন চলতো।
তিনি বলেন, উৎস আমার পাশে দাঁড়িয়ে বেঁচে থাকার আশা দেখিয়েছে। দোকানভর্তি মালপত্র তুলে দিয়েছে। নগদ টাকাও দিয়েছে। আমরা যতদিন বেঁচে থাকবো তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। ভালোবাসা দিবসে তারা যে ভালোবাসা দেখিয়েছে সৃষ্টিকর্তা তাদের মঙ্গল করুক।
এ বিষয়ে সংগঠনটির সভাপতি দিদারুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, শফিকুল ইসলাম স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে খুবই অসহায় জীবনযাপন করতেন। আমরা খোঁজ পেয়ে আমাদের সাধ্যমতো তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতার চেষ্টা করেছি। ভালোবাসা দিবসে এটা আমাদের অন্যরকম ভালোবাসা। এছাড়া আমরা সবসময় সমাজের অসহায়, দুস্থ মানুষের পাশে থাকতে চেষ্টা করি। আমরা সবার সহযোগিতা পেলে আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবো।
এ বিষয়ে কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফকির বেলায়েত হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ভালোবাসা দিবসে তাদের ভিন্নরকমের ভালোবাসা একজন অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। তাদের ধন্যবাদ জানাই। তাদের মতো আমাদের সবার সাধ্যমতো সমাজের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করা উচিত।
Advertisement
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটন ঢালী জাগো নিউজকে বলেন, সত্যি সংগঠনটি প্রশংসার দাবিদার। ভালোবাসা দিবসে তারা অসহায় একটি পরিবারের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
এন কে বি নয়ন/এমআরআর/এএসএম