গণমাধ্যম

সাগর-রুনি হত্যার প্রতিবেদন দিতে র‌্যাবের স্বদিচ্ছার অভাব

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার প্রতিবেদন দিতে র‌্যাবের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সাংবাদিক নেতারা। তারা বলেন, সাগর-রুনির হত্যার পর থেকে সাংবাদিক সমাজ বিচারের দাবিতে সোচ্চার রয়েছে। নির্মম এ হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিক আন্দোলন চলবে।

Advertisement

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে এ কথা বলেন তারা। রাজধানীর সেগুনবাগচায় ডিআরইউ চত্বরে সাগর-রুনি হত্যার ১১তম বার্ষিকীতে এ কর্মসূচি করা হয়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ডিআরইউ সভাপতি মুরসালিন নোমানী। তিনি বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যার পর ডিআরইউ সব সাংবাদিক সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। এ হত্যার প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধভাবে কর্মসূচি করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১১ বছর ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি করা হচ্ছে। কিন্তু এ হত্যার বিচার এখনো হয়নি। এ হত্যা মামলার তদন্ত করছে র‌্যাব। তারা আদালতের কাছে ৯৫ বার সময় চেয়েছেন। আদালত তাদের সময় দিয়েছেন। কিন্তু র‌্যাব যদি না পারে, তাহলে উনারা আদালতকে বলুক যে, তারা পারছেন না।’

আরও পড়ুন: সরকারের সদিচ্ছা ছাড়া সাগর-রুনি হত্যার বিচার সম্ভব নয়

Advertisement

মুরসালিন নোমানী বলেন, ‘সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির ক্ষেত্রে যারাই যখন ক্ষমতায় থাকুক না কেন, সবার আচরণ অভিন্ন। এর অবশ্য কারণও রয়েছে, তা হলো- সাংবাদিকরা তাদের লেখনির মাধ্যমে সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলেন। এজন্য অন্য সব হত্যার বিচার হলেও সাংবাদিক হত্যার বিচার হয় না। তবে সাগর-রুনি হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা এ দাবি থেকে সরে যাবো না। বিচারের দাবিতে ডিআরইউ ধারাবাহিক আন্দোলন ও সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।’

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘রাষ্ট্র ও আইনের গল্প করার চেষ্টা করবেন না। প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে তদন্ত প্রতিবেদন যদি দাখিল করেন, তাহলে র‌্যাবের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করবো। নিজেদের এলিট ফোর্স দাবি করেন। অথচ সাগর-রুনি হত্যার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৯৫ বার সময় নেন। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয় যে, সাগর-রুনির হত্যার প্রতিবেদন দাখিলে র‌্যাবের সদিচ্ছার অভাব আছে। আমরা প্রত্যাশা করি, র‌্যাবের বোধোদয় হবে। তারা স্বচ্ছ প্রতিবেদন দাখিল করবেন।’

আরও পড়ুন>> সাগর-রুনি হত্যার প্রতিবেদন দ্রুত দিতে র‌্যাবকে নির্দেশ দেওয়া হবে

ডিআরইউর সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ বলেন, সাগর-রুনি হত্যার ১১ বছর পার হয়েছে। এ হত্যার বিচার এখনো আমরা পাইনি। এ হত্যার বিচার না হওয়ার কারণে আরও ৫৪ জন সাংবাদিক হত্যার ঘটনা ঘটেছে। যদি সাগর-রুনির হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার হতো, তাহলে এসব সাংবাদিক হত্যার শিকার হতেন না।

Advertisement

সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ডিআরইউ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল। অন্যদের বক্তব্য দেন সহ-সভাপতি দীপু সারোয়ার, যুগ্ম সম্পাদক মঈনুল আহসান, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক কাওসার আজম, নারীবিষয়ক সম্পাদক মরিয়ম মনি সেঁজুতি, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মনির মিল্লাত, ইসমাঈল হোসাইন রাসেল, কিরণ শেখ, আলী ইব্রাহিম, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী বোরহান উদ্দিন, ডিআরইউর স্থায়ী সদস্য কাজী জাহিদুল হাসান, মাজহারুল হক মান্না, তৌহিদুর রহমান, মো. আসাদুজ্জামান, মো. আবু দাউদ খান।

আরও পড়ুন>> ৯৫ বার পেছালো সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিআরইউ-এর প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কামাল উদ্দিন সুমন, কার্যনির্বাহী সদস্য মোজাম্মেল হক তুহিন, এস এম মোস্তাফিজুর রহমান সুমন ও সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক এমদাদুল হক খান প্রমুখ।

এনএইচ/এএএইচ/এমএস