বিনোদন

সালমান শাহর ‘তুমি আমার’ সিনেমা আশানুরূপ দর্শক পায়নি

নব্বই দশকের তুমুল জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহর সিনেমা প্রদর্শন করে দর্শক খরা কাটানোর আশা করেছিলেন বরিশালের ‘অভিরুচি’ সিনেমা হলের মালিক। কিন্তু আশানুরূপ দর্শকের দেখা মেলেনি বরিশালের একমাত্র এ সিনেমা হলে।

Advertisement

শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) নগরীর সদর রোডস্থ ‘অভিরুচি’ সিনেমা হলে সাড়ে তিনটার শোতে গিয়ে দেখা যায় মাত্র ১২ জন দর্শক টিকেট কেটেছে সালমান শাহ শাবনূরের ‘তুমি আমার’ সিনেমা দেখার জন্য।

‘অভিরুচি’ হল কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৯৯৪ সালের কোরবানির ঈদে মুক্তি পেয়েছিল সালমান-শাবনূরের ‘তুমি আমার’ সিনেমাটি। সালমানের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ছিল এটি। এ ছবির মাধ্যমেই প্রথমবার বড় পর্দায় জুটি বেঁধে কাজ শুরু করেছিলেন সালমান-শাবনূর। দেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে রাজ্জাক-কবরী জুটির পরই রাখা হয় তাদের।

দীর্ঘদিন পর সালমান শাহর সিনেমার মাধ্যমে ভেবেছিলাম দর্শক খরা কাটবে। কিন্তু শুক্রবার হওয়া সত্ত্বেও প্রত্যাশা অনুযায়ী দর্শক আসেনি। প্রথম শোতে মাত্র দুটি টিকিট বিক্রি হয়েছে। আর বিকেলের শোতে ১২টি টিকিট বিক্রি হয়েছে।

Advertisement

‘তুমি আমার’ দেখতে আসা নগরীর কাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা মেহেদী জাগো নিউজকে বলেন, সময়ের থেকে এগিয়ে থাকা এক নায়ক ছিলেন সালমান শাহ। আমি তার অনেক বড় একজন ভক্ত। তাই সালমান শাহর সিনেমার কথা শুনেই চলে এসেছি। ভেবেছিলাম হলে অনেক দর্শক হবে। কিন্তু পুরো হল খালি দেখে হতাশ হয়েছি।

আরেক দর্শক সিরাজ বলেন, আমরা তিন বন্ধু ১০০ টাকা করে টিকিট কেটে হলে প্রবেশ করেছি। কিন্তু আমরা ছাড়া হলে শুধু আর দুই গ্ৰুপ এসেছে। ভেবেছিলাম সময়ের সাথে সাথে লোকজন বাড়বে। কিন্তু না পুরো হলে মাত্র ১০-১২ জন লোক সিনেমা দেখছি।

বরিশালের একমাত্র সিনেমা হল ‘অভিরুচি’র ম্যানেজার রেজাউল কবির জাগো নিউজকে বলেন, সিনেমা এখন ইতিহাসের মতো হয়ে গেছে, যেমন মানুষ বাসা বাড়িতে ছবি বাঁধিয়ে রাখে, ঠিক তেমন হয়ে গেছে সিনেমা। বরিশালে একটা সময় ৫টি সিনেমা হল ছিল। দর্শক খরায় সব বন্ধ হয়ে এখন রয়েছে শুধু একটি। তাও প্রায় বন্ধের পথে। করোনার আগে থেকেই এ অবস্থায় চলছে।

তিনি আরও বলেন, সিনেমা দেখার দর্শক বাংলাদেশে এখনো আছে, কিন্তু নির্মাতারা দর্শকের মন মতো ছবি তৈরি করতে পারছে না বলেই দর্শকরা হল থেকে দূরে রয়েছে। পাশাপাশি সিনেমা শিল্প ধ্বংসের কিছু কারণ রয়েছে। তার অন্যতম কারণ হাতের মোবাইল ফোন, কিছু টিভি চ্যানেল এবং স্যাটেলাইট। এক সময় দেশে ৫০০-৬০০ সিনেমা হল ছিলো। এখন ১০০ হলও আছে কিনা সন্দেহ। যেগুলো আছে তাও দেখবেন হল আছে, দর্শক নেই।

Advertisement

রেজাউল কবির আরও বলেন, সালমান শাহর সিনেমার দর্শক রয়েছে। কিন্তু সিনেমাগুলো যদি হাতে হাতে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায় তাহলে মানুষ কেনো হলে আসবে। এছাড়া সালমান শাহর সিনেমার যে গল্প কাহিনি এমন ঘরানার সিনেমা যদি নির্মাতারা তৈরি করে তাহলে মানুষ আবারও হল মুখী হবেন।

তিনি আরও বলেন, ভালো সিনেমা তৈরি হলে মানুষ যে হল মুখী হয় তার উদাহরণ ‘হাওয়া’ ও ‘পরাণ’ সিনেমা। এই দুটি সিনেমা চমক দেখিয়েছে। নির্মাতারা আসলে দর্শকদের চাহিদা অনুযায়ী সিনেমা তৈরি করতে পারছে না।

এমএমএফ/জিকেএস