জাতীয়

অন্যের নামে ট্রেনের টিকিট কেটে দ্বিগুণ দামে বিক্রি, গ্রেফতার ৪

ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের মূলহোতাসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে ট্রেনের ৪২টি টিকিট উদ্ধার করা হয়। চক্রটির সদস্যরা রেলস্টেশনে লাইনে দাঁড়িয়ে এবং অনলাইনে বিভিন্ন এনআইডি ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে টিকিট সংগ্রহ করতেন। পরে সেগুলো ট্রেন ছাড়ার আগে দ্বিগুণ দামে বিক্রি করতেন। অনেক ক্ষেত্রে তারা টিকিটের দাম আরও বাড়িয়ে দিতেন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

এর আগে বুধবার রাজধানীর কমলাপুর এবং বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ৪২টি কালোবাজারি টিকিট (৫৬ আসন), তিনটি মোবাইল ফোন, একটি সিমকার্ড এবং নগদ এক হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতাররা হলেন চক্রের মূলহোতা উত্তম দাস (৩২), মো. ইলিয়াস (৫৯), মো. শাহ আলম (৩৪) ও মো. খোকন মিয়া (৫৫)।

Advertisement

লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, রাজধানীর কমলাপুর এবং বিমানবন্দর রেলস্টেশনসহ সারাদেশের বিভিন্ন রেলস্টেশনে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করছে একটি চক্র। তারা অধিক মুনাফার আশায় দীর্ঘদিন ধরে এ কাজ করছে। কমলাপুর রেলস্টেশনে এই কালোবাজারি চক্রের একজন অন্যতম মূলহোতা উত্তম দাস এবং অন্য সদস্যরা মিলে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করতেন। এছাড়া তারা অনলাইনে বিভিন্ন পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও মুঠোফোন নম্বর ব্যবহার করেও টিকিট সংগ্রহ করতেন। এরপর উত্তম দাসের নেতৃত্বে সেগুলো ট্রেন ছাড়ার ৩-৪ ঘণ্টা আগে থেকে অধিক মূল্যে বিক্রি শুরু করতেন। ট্রেন ছাড়ার সময় যত ঘনিয়ে আসতো তাদের মজুত করা কালোবাজারি টিকিটের দাম তত বাড়তো। তারা সাধারণত দ্বিগুণ মূল্যে টিকিট বিক্রি করতেন। সুযোগ এবং সময় বুঝে অনেক ক্ষেত্রে তারা টিকিটের দাম আরও বাড়িয়ে দিতেন।

তিনি বলেন, চক্রটি মূলত সোনার বাংলা, কালনী এক্সপ্রেস, চট্টলা এক্সপ্রেস, তূর্ণা নিশিথা, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস, তিস্তা এক্সপ্রেস, মহানগর প্রভাতী, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস এবং পারাবত এক্সপ্রেসের টিকিট কালোবাজারি করতো। এই চক্রের আরও সদস্য ইউনিট রয়েছে। প্রতিটি ইউনিটে পাঁচ থেকে সাতজন করে সক্রিয় সদস্য রয়েছেন।

র‌্যাব জানায়, চক্রের মূলহোতা উত্তম দাস নিজ জেলা কুমিল্লার বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তির পরিচয় ব্যবহার করে এবং রেলস্টেশনে কর্মরত অসাধু চক্রের যোগসাজশে ২০১৮ সালে টিকিট কালোবাজারি শুরু করেন। তবে তিনি নিজে টিকিট কাটতেন না। তার অধিনস্ত চার-পাঁচজন কর্মীর মাধ্যমে বিভিন্নভাবে টিকিট সংগ্রহ করে চড়ামূল্যে সেগুলো বিক্রি করতেন। এর আগে দুবার গ্রেফতার হন উত্তম দাস। বিভিন্ন মেয়াদে সাজা খেটে জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও একই কাজে জড়ান তিনি।

গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক।

Advertisement

আরএসএম/কেএসআর/জেআইএম