তথ্যপ্রযুক্তি

যে কারণে সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে চ্যাটজিপিটি

বিশ্বের অন্যতম ধনকুবের ইলন মাস্কের আরেক চমকের নাম চ্যাটজিপিটি। গুগলের চেয়েও দ্রুত ও নির্ভুল উত্তর দেওয়ার কারণে এখন সবার কাছেই প্রিয় হয়ে উঠেছে চ্যাটজিপিটি। গুগলে কোনো কিছু সার্চ দিলে আপনাকে সেই সংক্রান্ত অনেকগুলো লিংক দেখাবে। কিন্তু চ্যাটজিপিটি সরাসরি তার উত্তর জানিয়ে দেবে।

Advertisement

বিশ্বে আলোড়ল সৃষ্টি করেছে এই নতুন চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি। আপনার মনের সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন এখানে। এমনকি গান, কবিতা লিখতে চাইলে তাও লিখে দেবে চ্যাটজিটিপি। প্রচলিত কম্পিউটার সফটওয়্যার বা অ্যাপলিকেশনের বাইরে গিয়ে সেখানে সে নিজের মতো বুদ্ধিমত্তা বা মানবিকতার ছোঁয়াও দিতে পারে। এজন্য সবার আগ্রহ এখন চ্যাটজিপিটি নিয়ে।

আরও পড়ুন: ভার্সিটির রিপোর্ট-প্রেজেন্টেশন তৈরি করে দেবে চ্যাটজিপিটি 

কীভাবে কাজ করছে চ্যাটজিপিটি। কী কী কাজ করছে। এসব প্রশ্নের উত্তর এখন সবার মনেই ঘুরপাক খাচ্ছে। রেসিপি থেকে শুরু করে গণিত সমাধান সবই পাবেন এই চ্যাটবটে। এমনকি গুগলের মতো একাধিক লিংক দিয়ে আপনাকে একেবারেই দ্বিধা করবে না চ্যাটজিপিটি।

Advertisement

ভার্সিটির অ্যাসাইনমেন্ট, রিপোর্টের সব ধরনের তথ্য পাবেন এখানে। এমনকি এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই চ্যাটবট আপনার রিপোর্ট-প্রেজেন্টেশন তৈরি করে দেবে মুহূর্তেই। চ্যাটজিপিটি রচনা লিখতে পারে, চাকরির বা ছুটির আবেদন, চুক্তিপত্র, কোন ঘটনা সম্পর্কে ব্যাখ্যা, ছোটখাটো প্রতিবেদন তৈরি করে দিতে পারে। এটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম, গান বা কবিতাও লিখে দিতে পারে ব্যবহারকারীর জন্য।

আপনার সিভি ও কভার লেটার লিখিয়ে নিতে পারবেন চ্যাটজিটিপির থেকে। অনেকেই বলছেন চ্যাটজিপিটি হচ্ছে একটি লাইব্রেরি। যেটি খোলা থাকে ২৪ ঘণ্টা। যখন খুশি যে কোনো বই পাবেন এখানে। এটি তার তথ্যভাণ্ডারে থাকা নানা তথ্য-উপাত্ত নিয়ে লিখিত প্রশ্নের জবাব হাজির করে। যে ফরম্যাটে বা যেভাবে চাওয়া হয়, অনেকটা সেভাবেই সে এসব উত্তর দেয়।

গত বছরের নভেম্বরে তৈরি হওয়ার পর সারা বিশ্বেই এখন চ্যাটজিপিটি নিয়ে একটা আগ্রহ তৈরি হয়েছে। শুধু জানুয়ারি মাসেই বিশ্বের প্রায় ১০ কোটি মানুষ চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করেছে। এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার একটি চ্যাটবট সিস্টেম বা আলাপচারিতা করার অ্যাপলিকেশন। সার্চ ইঞ্জিন হলে অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনের থেকে অনেকটাই আলাদা এই চ্যাটবটি।

আরও পড়ুন: চ্যাটজিপিটি ও আমাদের ভবিষ্যৎ 

Advertisement

চ্যাটজিপিটির পূর্ণ রূপ হচ্ছে চ্যাট জেনারেটিভ প্রি-ট্রেইনড ট্রান্সফর্মার। এটি হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এমন একটি অ্যাপলিকেশন যাকে বলা হয় ‘লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল টুলস’। এটি চালু করেছে ওপেনএআই। ওপেনআই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি কোম্পানি, যার একজন প্রতিষ্ঠাতা হলেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। ২০১৫ সালে কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ইলন মাস্ক এবং স্যাম অ্যাল্টম্যানসহ আরও কয়েকজন। এই প্রতিষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য হলো ‘নিরাপদ এবং সুবিধার’ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থা তৈরি করা। তারই একটি হচ্ছে এই চ্যাটজিপিটি।

তবে অন্য সার্চ ইঞ্জিনের মতো চ্যাটজিপিটি এখনো লাইভ বা সরাসরি ইন্টারনেটে কাজ করে না। ইন্টারনেটে ২০২১ সাল পর্যন্ত যেসব তথ্য রয়েছে, শুধু সেগুলোই তার তথ্যভাণ্ডারে রয়েছে। তবে একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, চ্যাটজিপিটি আসলে নিজে থেকে কিছু জানে না। তাকে এমনভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বা তৈরি করা হয়েছে যে, সে তার তথ্যভাণ্ডারে থাকা তথ্য-উপাত্ত খুঁজে উত্তরটি তৈরি করে।

সূত্র: বিবিসি/দ্য ভার্জ/মেক ইউজ অব

কেএসকে/জিকেএস