প্রবাস

ব্রিটেনের রাজাকে নেচে গেয়ে অভ্যর্থনা বাঙালি তরুণীদের

ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস ও কুইন কনসোর্ট ক্যামিলা পূর্ব লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের আলতাব আলী পার্ক ও ব্রিকলেনে সফর করেছেন। বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় তারা পূর্ব লন্ডনে পৌঁছান।

Advertisement

এ সময় রাজাকে স্বাগত জানান টাওয়ার হ্যামলেটসের স্পিকার সাফি আহমদ। অনুষ্ঠানে বাঙালি কমিউনিটির অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের লন্ডনের বাঙালিপাড়ায় অবস্থিত ব্রিটেনে বর্ণবাদী আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত আলতাব আলী পার্কে অবস্থিত শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়া হয়।

কুশল বিনিময় পর্বে ৮০র দশকে এই এলাকা থেকে বর্ণবাদ তাড়ানোর আন্দোলনে স্থানীয় বাঙালিদের গৌরবোজ্জ্বল আন্দোলনের গল্প শোনান বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের কর্মী সাবেক কাউন্সিলর রাজন উদ্দিন জালাল, হেলাল উদ্দিন আব্বাস এ আনসার আহমেদ উল্লা।

এ সময় বাঙালির ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস পর্যায়ক্রমে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি নবাব উদ্দিন ও টিভি প্রেজেন্টার ও আবৃত্তি শিল্পী উর্মি মাজহারের কাছ থেকে আগ্রহ সহকারে শোনেন। পরে আলতাব আলী পার্কে তিনি একটি গাছের চারা রোপন করেন।

Advertisement

আলতাব আলী পার্ক থেকে রাজা তৃতীয় চার্লস ও কুইন কনসোর্ট ক্যামিলা গাড়িতে করে ব্রিকলেইন বাংলা টাউনে যান। বাংলাটাউনে ব্রিটেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম রাজাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।

এ সময় এই সফরের আয়োজক ব্রিটিশ বাংলাদেশি পাওয়ার অ্যান্ড ইন্সপিরেশন (বিবিপিআই)-এর প্রতিষ্ঠাতা আয়েশা কোরেশী এমবিই, জেপি ও টাওয়ার হ্যামলেটসের কাউন্সিলর আবদাল উল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।

আলতাব আলী পার্ক থেকে ব্রিকলেনে প্রবেশকালে রাস্তার দুইপাশে হাজার হাজার স্থানীয় বাসিন্দা রাজা ও কুইন কনসোর্টকে স্বাগত জানান। বাংলাদেশি তরুণীরা নৃত্যের তালে তালে নেচে গেয়ে রাজাকে অভ্যর্থনা জানান।

রাজার সফর উপলক্ষে ব্রিকলেনের সড়কগুলো সজ্জিত হয় নান্দনিক রূপে। নান্দনিকতার সর্বত্রই ছিল বাঙালিয়ানার ছোঁয়া। সেখানে রাজা রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং ব্রিকলেনে বাংলাদেশি মালিকানাধীন ‘গ্রাম বাংলা রেস্টুরেন্টে’ যান। সেখানে রাজার জন্য দেশীয় খাবারের আয়োজন করা হয় রাজা সন্দেশ ও ইলিশ মাছের স্বাদ নেন তিনি।

Advertisement

এ সময় বিবিপিআই জামদানি নেটওয়ার্কের নারীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। কুইন কনসোর্টকে বাংলাদেশি ঐতিহ্যের স্মারক জামদানি শাড়ি উপহার দেওয়া হয়। সেখান থেকে বের হয়ে রাজা ঐতিহাসিক ব্রিকলেন জামে মসজিদের বিভিন্ন কার্যক্রম ঘুরে দেখেন এবং মসজিদ কমিটি ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়া করোনাকালে ব্রিকলেন জামে মসজিদের ফিউনারেল কার্যক্রমের প্রশংসা করেন।

রাজার দায়িত্ব পালন শুরুর পর বাঙালিপাড়ায় এবারই প্রথম সফরে আসেন রাজা চার্লস। রাজা হওয়ার আগে প্রিন্স চার্লস ২০০১ সালে ইস্ট লন্ডন মসজিদ পরিদর্শনে এসেছিলেন। তারও আগে ১৯৮৭ সালে ব্রিকলেনে একটি প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শনে এসেছিলেন তিনি।

বাংলাদেশি কমিউনিটির ব্রিটেনে চার প্রজন্মের সংগ্রামের ইতিহাসের পথ বেয়ে বিভিন্ন অর্জন, ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের ব্রিটেনের উন্নয়নে বিভিন্ন খাতে অভাবনীয় সাফল্যকে অনুপ্রাণিত করতে বাঙালি পারায় রাজার এই সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

এমআরএম/এমএস