জাতীয়

দেশে বড় ভূমিকম্প হলে মাটির নিচের গ্যাস-বিদ্যুৎই জীবননাশের হুমকি

তুরস্কের মতো বাংলাদেশে বড় কোনো ভূমিকম্প হলে মাটির নিচে সুয়ারেজ লাইনের গ্যাস ও বিদ্যুতের কারণে জীবননাশের বড় হুমকি রয়েছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন।

Advertisement

তিনি বলেছেন, ভূমিকম্পের ঝাঁকুনিতে গ্যাসের লাইনে আগুন ধরে বড় ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। এক্ষেত্রে উদ্ধারকাজ চালানোও কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ফায়ার সার্ভিস সদরদপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

আরও পড়ুন: বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক

Advertisement

সংস্থাটির ডিজি বলেন, ঢাকা শহরে বড় ভূমিকম্প ঘটতে পারে। আমরা সে চিন্তা করে বিভিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি কিনেছি। আমাদের জনবল প্রশিক্ষিত করছি। পাশাপাশি আমাদের সঙ্গে যারা কাজ করবেন তাদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন যেভাবে হচ্ছে, তা আমাদের জন্য ঝুঁকি। আমাদের প্রশিক্ষিত জনবল ও যন্ত্রপাতি থাকবে, কিন্তু ভূমিকম্প হলে পুরান ঢাকার মতো জায়গাগুলোতে আমরা কীভাবে পৌঁছাবো?

আরও পড়ুন: ফুরিয়ে আসছে সময়, মৃত্যু ১০ হাজার ছুঁইছুঁই

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন আরও বলেন, আমাদের মাটির নিচে সুয়ারেজ লাইনের গ্যাস ও বিদ্যুৎ সিস্টেম রয়েছে। যখন ভূমিকম্প হবে তখন এগুলোর কী হবে! ভূমিকম্প হলে সেবামূলক সিস্টেমগুলোই আমাদের জীবননাশের জন্য হুমকি হবে। এজন্য গ্যাস অটো ভাল্ব সিস্টেম থাকতে হবে, যেন ভূমিকম্পের ঝাঁকুনিতে অটোমেটিক্যালি গ্যাস সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে অগ্নিকাণ্ড ঘটবে না। আমাদের সচেতন হতে হবে এবং আরও অনেক কাজ করতে হবে।

Advertisement

ফায়ার সার্ভিসের ১২ সদস্যসহ ৬০ জনের একটি টিম বুধবার রাতে তুরস্কে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, তুরস্কে ভূমিকম্পের ঘটনায় উদ্ধারকাজে যোগ দিতে বাংলাদেশ থেকে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ১২ জন সদস্যসহ ৬০ জনের একটি উদ্ধারকারী দল পাঠানো হচ্ছে। এতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ জন, ১০ জন চিকিৎসক ও ১৪ জন ক্রু থাকবেন।

সাতদিনের টার্গেটে তুরস্কে ভূমিকম্পে উদ্ধারে আজ বুধবার রাত ১০টায় ফায়ার সার্ভিসের ১২ জনসহ মোট ৬০ জনের একটি উদ্ধারকারী দল সি-১৩০ বিমানে করে তুরস্কে যাত্রা করবে বলেও জানান ফায়ার সার্ভিস ডিজি।

‘উদ্ধারকাজে অত্যাধুনিক যন্ত্র পাঠানো হচ্ছে, যেগুলো উন্নত বিশ্বে ব্যবহার হয়ে থাকে’- যোগ করেন তিনি।

আরও পড়ুন: তুরস্ক যাচ্ছে বাংলাদেশের উদ্ধারকারী দল

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ফায়ার সার্ভিসের যে ১২ জন উদ্ধারকাজে তুরস্কে যাচ্ছেন তারা মালেয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। অল্প জায়গায় বেশি মানুষ হলে কাজে বিপত্তি হয় বলে কেবল উন্নত প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের পাঠানো হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সানুগ্রহ নির্দেশনায় সম্মিলিত উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসকে অন্তর্ভুক্ত করায় আমরা সম্মানিত বোধ করছি। বর্তমান সরকারের সময়ে ২০১৫ সালে নেপালে সংঘটিত ভূমিকম্পে পর্যবেক্ষক হিসেবে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নিয়েছিল। তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্ধারকাজ পরিচালনার জন্য ফায়ার সার্ভিসের ১২ সদস্যের উদ্ধারকারী দলের এটিই প্রথম বিদেশ গমন।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও পেশাদারত্বের এটি একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। এটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জন্য একটি অভাবনীয় স্বীকৃতি। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রতিটি সদস্য এজন্য গর্বিত বোধ করছে। আমি বিশ্বাস করি, ফায়ার সার্ভিসের সব সদস্য নিজের সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আস্থার প্রতিদান দেবেন।

টিটি/এমকেআর/জিকেএস