উপহারের মাইক্রোবাস বুঝিয়ে দিতে বাড়িতে আয়োজন করেন হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার নরপতি গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক মাওলানা এম মোখলিছুর রহমান। অনুষ্ঠানস্থলে এসেই মঞ্চে ওঠেন বহুল আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। এ সময় মঞ্চে থাকা লোকজনকে নেমে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
Advertisement
হিরো আলম বলেন, ‘কিছুদিন আগে একটি স্টেজ ভেঙে পড়ার ভিডিও দেখেছি। এখানে যেন এমন ঘটনা না ঘটে। তাই স্টেজ থেকে কিছু লোক কমলে ভালো হয়। যেকোনো কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। আমরা এরকম ঘটনার শিকার হতে চাই না।’
আরও পড়ুন: উপহারের গাড়ি নিতে গিয়ে জরিমানা গুনলেন হিরো আলম
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে হাজী আবদুল জব্বার জি এল একাডেমি অ্যান্ড হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক এম মোখলিছুর রহমানের কাছ থেকে উপহারের গাড়ি আনতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
Advertisement
শিক্ষকের কাছ থেকে গাড়ির কাগজপত্র ও চাবি নেওয়ার পর হিরো আলম বলেন, শিক্ষক মোখলিছুর আমার ভাই। তিনি ভালোবেসে আমাকে একটি গাড়ি উপহার দিয়েছেন। আমি ব্যস্ত থাকার কারণে আসতে বিলম্ব হয়েছে। দেশ-বিদেশ থেকে অনেকেই আমাকে বলেছেন কেউ উপহার দিলে তা গ্রহণ করতে হয়। আমি গাড়িটি গ্রহণ করেছি। কিন্তু এটির অবস্থা বেশি ভালো নয়। তবে যেমনই হোক, অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে দান করে দিলাম।
আরও পড়ুন: উপহারের মাইক্রোবাস অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে দান করলেন হিরো আলম
তিনি আরও বলেন, অনেক গরিব, অসহায় মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকেন। চিকিৎসা করানোর সুযোগ থাকে না। হাসপাতালে নিতে পারেন না। তাদের সেবার জন্য গাড়িটি ব্যবহৃত হবে। গাড়িতে নম্বর থাকবে। কেউ ফোন দিলেই দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে।
এ সময় প্রধান শিক্ষক এম মোখলিছুর বলেন, হিরো আলম আমার ভাই। বগুড়ার অনেক আলেম তার পক্ষে বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। তাদের দেখেই তার প্রতি আমার ভালোবাসা জন্মায়। আমিও সিদ্ধান্ত নেই সিলেট থেকে তাকে যদি আমার গাড়িটি উপহার হিসেবে দিতে পারি তবে বগুড়াবাসী ভোট দিতে হয়তো আরও উদ্বুদ্ধ হবেন।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, আমার বিরুদ্ধে অনেকেই প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েছে। কিন্তু আমি এটি প্রমাণ করেছি সিলেটবাসীর মন এত ছোট নয়। আমার পরিবারও উদ্বুদ্ধ করছে যেন আমি গাড়িটি দ্রুত দিয়ে দিই। আমার সন্তানরা বলছে আমি যে ওয়াদা দিয়েছি সেটি দ্রুত পূরণ করতে। গাড়িটি তাকে উপহার হিসেবে দিতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।
আরও পড়ুন: অসহায় রোগী ফোন দিলেই পৌঁছে যাবে উপহারের গাড়িটি: হিরো আলম
মোখলিছুর বলেন, গাড়িটি ২০১৮ সালে সাড়ে ৫ লাখ টাকায় কিনেছিলাম। কিন্তু গাড়িটির কাগজপত্র ২০১৩ সাল থেকে আপডেট করা হয়নি। এখন সেটি আপডেট করতে প্রায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা লাগতে পারে।
এদিকে গাড়ি হস্তান্তর উপলক্ষে সকাল থেকেই মাওলানা এম মোখলিছুর রহমানের বাড়িতে বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত হয়। গাড়িটিও সাজানো হয়। তৈরি করা হয় একটি মঞ্চ। শতাধিক চেয়ার সাজানো হয়। মানুষের মধ্যে উৎসবের আমেজ দেখা দেয়।
সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এসজে/এমএস