ধৃমল দত্ত, কলকাতা:ভারত থেকে বাংলাদেশে আদানি গোষ্ঠীর বিদ্যুৎ রপ্তানির বিষয়ে জটিলতা কাটলো না মঙ্গলবারও (৭ ফেব্রুয়ারি)। বাংলাদেশে আদানি গোষ্ঠীর বিদ্যুৎ রপ্তানি প্রকল্পে স্থগিতাদেশ চেয়ে গত ৩১ জানুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থের মামলা দায়ের হয়েছিল। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি।
Advertisement
মামলাটি দায়ের করেছেন পশ্চিমবঙ্গের ৩০ জন ফল চাষি এবং অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেকশন অব ডেমোক্রেটিক রাইটস (এপিডিআর) নামে একটি সংস্থা। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে মামলাটির শুনানি শুরু হয়। কিন্তু শুরুতেই আদানি গোষ্ঠীর আইনজীবীরা জানান, তাদের কাছে এই মামলার আবেদনের কোনো নথি সরবরাহ করা হয়নি।
আরও পড়ুন>> আদানির সঙ্গে চুক্তি সংশোধন চায় বাংলাদেশ, ভারত বললো ‘জড়িত নই’
তবে বাদী পক্ষের আইনজীবী ঝুমা সেন দাবি করেন, নিয়ম অনুযায়ী সব পক্ষকেই মামলার কপি সরবরাহ করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত আদালত আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন। সেক্ষেত্রে আগামী তিন দিনের মধ্যে মূল পক্ষকে ওই মামলার নথি সরবরাহ করতে হবে।
Advertisement
এদিন ঝুমা সেন আরও জানান, যেভাবে এই প্রকল্পের কাজ চলছে, অর্থাৎ বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে বিদ্যুতের খুঁটিগুলো বসানো হয়েছে, তাতে ভারতের বিদ্যুৎ, টেলিগ্রাফ আইন মেনে হচ্ছে না। এগুলো যেন ঠিকভাবে মেনে চলা হয়, সেটি আদালতের কাছে খতিয়ে দেখার আবেদন করছেন তারা।
আরও পড়ুন>> বাংলাদেশে আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ রপ্তানি অনিশ্চিত
বাদী পক্ষের অভিযোগ, যেভাবে গাছ (আম, লিচু) কাটা হয়েছে, তা একদিনে গজিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। এসব গাছের ওপর নির্ভরশীল সেখানকার চাষিরা। এ কারণে ভুক্তভোগীদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের বিষয়েও আদালতের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্রথম দফায় আগামী মার্চের মধ্যে আদানির ঝাড়খণ্ডের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এবং দ্বিতীয় দফায় আগামী এপ্রিল মাসে আরও ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যাবে বাংলাদেশে।
Advertisement
আরও পড়ুন>> আদানির বিদ্যুৎ আসবে মার্চের প্রথম সপ্তাহে: প্রতিমন্ত্রী
এ প্রসঙ্গে আইনজীবী ঝুমা সেন বলেন, এক্ষেত্রে আরও বেশি স্থগিতাদেশ দেওয়া উচিত। কারণ একবার বিদ্যুৎ রপ্তানি শুরু হয়ে গেলে সমস্যা আরও গভীর হবে। জমি বা গাছের ওপর দিয়ে ট্রান্সমিশন লাইন গেলে স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনের ঝুঁকি থাকছে, জমির ক্ষতি হচ্ছে, গাছের ক্ষতি হচ্ছে।
আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি কলকাতা হাইকোর্ট এ বিষয়ে স্থগিতাদেশ না দিলে সর্বোচ্চ আদালতে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী ঝুমা সেন।
কেএএ/