তুরস্ক ও সিরিয়ায় আঘাত হানা ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়েছে। দুই দেশে এ পর্যন্ত তিন হাজার ৫৫ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শুধু তুরস্কেই মারা গেছেন এক হাজার ৭৬২ জন। সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৯৩ জনে। খবর বিবিসি ও আল-জাজিরার।
Advertisement
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, তুর্কি দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত এক হাজার ৭৬২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ১২ হাজার ৬৮ জনকে। দেশটিতে অন্তত পাঁচ হাজার ৬০৬টি বহুতল ভবন ধসে পড়েছে।
অন্যদিকে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ভূমিকম্পে অন্তত এক হাজার ২৯৩ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দেশটির সরকারনিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে ৫৯৩ জন এবং বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকায় ৭০০ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া সিরিয়ার এ দুই অঞ্চলে যথাক্রমে এক হাজার ৪১১ জন এবং দুই হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: তুরস্কে ৭ দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করলেন এরদোয়ান
Advertisement
এদিকে, ভূমিকম্পে হতাহতদের স্মরণে সাতদিনে জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। স্থানীয় সময় সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে এক টুইটবার্তায় তিনি এ ঘোষণা দেন।
টুইটবার্তায় প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান লেখেন, ‘সাতদিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। এসময়ে আমাদের জাতীয় পাতাকা অর্ধনমিতভাবে উত্তোলন করা হবে। আগামী রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) সূর্যাস্ত পর্যন্ত এ শোক পালন করা হবে। দেশে ও বিদেশে তুরস্কের বিভিন্ন অফিসে হতাহতদের প্রতি শোক জানিয়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতভাবে উত্তোলনের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: ভূমিকম্পের পর তুরস্কে ঘানার জাতীয় দলের ফুটবলার নিখোঁজ
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোররাত সোয়া ৪টার দিকে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল ও সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। ৪০ সেকেন্ড ধরে চলা এ ভূমিকম্পের কম্পন পৌঁছায় লেবানন ও সাইপ্রাসেও।
Advertisement
ধারণা করা হচ্ছে, সোমবার ভোরে আঘাত হানা ভূমিকম্পে ধসে পড়া ভবনগুলোতে অসংখ্য মানুষ আটকা পড়েছে। কর্মীরা ধ্বসংস্তূপের মধ্য থেকে আটকে পড়াদের উদ্ধারে তৎপরতা জোরালো করেছে।
আরও পড়ুন: তুরস্কে ১০ শহর ক্ষতিগ্রস্ত, কিছু এলাকায় এখনও পৌঁছেনি উদ্ধার দল
ভয়াবহ এ ভূমিকম্পে তুরস্কের অন্তত ১০টি শহর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব শহর দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। আল-জাজিরার সাংবাদিক সিনেম কোসেওগ্লু ইস্তাম্বুল থেকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
১৯৯৯ সালের পর এটাই তুরস্কে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই বছরের আগস্টে সাত দশমিক ছয় মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প তুরস্কের দক্ষিণে ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল মারমারায় আঘাত হানে। ১৯৯৯ সালের ভূমিকম্পে দেশটিতে সাড়ে ১৭ হাজার মানুষ নিহত হয়।
এএএইচ