ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্ক-সিরিয়া। গোটা বিশ্বে আলোচনার প্রধান বিষয় এখন এটাই। দুই দেশ মিলিয়ে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা প্রায় দেড় হাজারে দাঁড়িয়েছে। কেবল তুরস্কেই মারা গেছেন এক হাজারের বেশি মানুষ। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এই পরিস্থিতিকে গত ৮৪ বছরের মধ্যে তুরস্কে সবচেয়ে বড় বিপর্যয় বলে অভিহিত করেছেন।
Advertisement
তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ১৯৩৯ সালের পর থেকে তুরস্কে এটাই সবচেয়ে বড় বিপর্যয়। ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে দেশটিতে অন্তত ২ হাজার ৮১৮টি ভবন ধসে পড়েছে।
আরও পড়ুন>> ভূমিকম্পে কেবল তুরস্কেই নিহত ৯১২
১৯৩৯ সালে এরজিনকানে আঘাত হানা যে ভূমিকম্পের কথা তুর্কি প্রেসিডেন্ট উল্লেখ করেছেন, সেটির আঘাতে ৩৩ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন বলে মনে করা হয়। আহত হয়েছিলেন এক লাখের বেশি। এছাড়া ১৯৯৯ সালে দেশটিতে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্পে নিহত হন ১৭ হাজারের বেশি মানুষ।
Advertisement
তবে ২১ শতকে এ পর্যন্ত এমন সাতটি ভূমিকম্পের ঘটনা রয়েছে, যেখানে প্রতিটিতে প্রাণ হারিয়েছেন ২০ হাজারের বেশি মানুষ।
আরও পড়ুন>> বেঁচে যাওয়াদের মুখে ভয়াবহতার বর্ণনা
২০০১ সালের জানুয়ারিতে ভারতের গুজরাটে ভূমিকম্প এবং ২০১১ সালের মার্চ মাসে জাপানের টোহোকুতে ভূমিকম্প ও সুনামি উভয় ঘটনাতেই ২০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
২০০৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইরানের বাম শহরে ভূমিকম্পের আঘাতে নিহতের সংখ্যা ছিল ২৬ হাজারের বেশি।
Advertisement
আরও পড়ুন>> সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে গোটা বিশ্ব
২০০৮ সালে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত চীনের সিচুয়ান। ছবি সংগৃহীত
২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি দুটি ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ছিল ৮৭ হাজার করে। এর একটি ঘটে ২০০৫ সালের অক্টোবরে কাশ্মীরে। এর প্রভাব পড়েছিল ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তানেও। দ্বিতীয়টি ঘটেছিল ২০০৮ সালের মে মাসে চীনের সিচুয়ানে।
২১ শতকে দুই লাখের বেশি প্রাণহানি হয়েছে এমন ভূমিকম্প হয়েছে অন্তত দু’বার। যদিও দুটি ঘটনাতেই হতাহতের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
আরও পড়ুন>> আফটারশক চলতে পারে কয়েকদিন, এমনকি মাসও: বিশেষজ্ঞ
২০১০ সালের জানুয়ারিতে হাইতির ভূমিকম্পে দ্বীপরাষ্ট্রটিতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছিল। এতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ২ লাখ ২০ হাজারে।
তবে চলতি শতাব্দীতে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে প্রাণঘাতী প্রাকৃতিক দুর্যোগের রেকর্ড ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বরে। ওইদিন ভারত মহাসাগরে প্রবল ভূমিকম্প ও তার জেরে সৃষ্ট সুনামিতে প্রাণ হারান অন্তত ২ লাখ ২৫ হাজার মানুষ। সেই ভূমিকম্পের মাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল রিখটার স্কেলে ৯ দশমিক ১ থেকে ৯ দশমিক ৩, যা পৃথিবীর এযাবৎকালের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ। অত্যন্ত ভয়াবহ ভূমিকম্পটির স্থায়িত্বও ছিল বেশি, প্রায় আট থেকে ১০ মিনিট।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ানকেএএ/