কক্সবাজার সদরের খরুলিয়া বাজার মসজিদের পাশ ঘেঁষে যাওয়া পিএমখালী সড়ক দিয়ে পৌনে এক কিলোমিটার গেলেই বিস্তীর্ণ ভূমিতে চোখে পড়ে সরিষার হলুদ ফুলের মেলা। শুধু এখানে নয়, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ক্ষেত এবং পতিত জমিতে হলুদের সমারোহ।
Advertisement
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, কক্সবাজারের ৯ উপজেলায় ৯২৫ হেক্টর জমিতে এবছর সরিষার আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে চকরিয়ায় ৫০০ হেক্টর, পেকুয়ায় ১০০ হেক্টর, সদরে ১০০ হেক্টর, রামুতে ১০০ হেক্টর এবং অন্যান্য উপজেলায় বিচ্ছিন্নভাবে ১২৫ হেক্টর জমি সরিষার চাষের আওতায় এসেছে। ধান বা অন্য ফসলের তুলনায় লাভজনক হওয়ায় কৃষকেরা সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
সদরের খরুলিয়া মাস্টারপাড়া গ্রামের চাষি সরওয়ার আলম বলেন, এবার তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। তেমন রোগবালাই নেই। এবার ভালো ফলনের আশা করছেন তিনি।
সরওয়ার আলম বলেন, সেচ, সার, কীটনাশক, শ্রমিক খরচসহ প্রতি বিঘায় খরচ পড়েছে ৫-৬ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে সব খরচ বাদ দিয়ে বিঘাপ্রতি ১০-১২ হাজার টাকা লাভ হবে।
Advertisement
ঝিলংজার খরুলিয়ার হিন্দুপাড়া গ্রামের কিষানি ঝর্ণা শর্মা বলেন, প্রতিবছর বাইরে থেকে ভালো বীজ সংগ্রহ করে সরিষা আবাদ করি। চলতি মৌসুমে তিন কাঠা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। বেশ ভালো ফুল এসেছে। আশা করি ফলন ভালো হবে।
পিএমখালীর পাতলী গ্রামের কৃষক নজির হোসেন বলেন, এবছর আট বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। গতবছর ৩৮০০-৪০০০ টাকা মণে সরিষা বিক্রি করেছিলাম। মোটামুটি লাভ হয়েছিল। আশা করছি, এবারও ভালো ফলন হবে।
রামুর দক্ষিণ মিঠাছড়ি এলাকার শাহাদৎ হোসেন বলেন, আগে ধান কাটার পর জমি পড়ে থাকতো। এখন আর সে দৃশ্য চোখে পড়ে না। প্রায় সব জমিতেই আবাদ হচ্ছে। বৈরী আবহাওয়া ও পোকামাকড়ের উপদ্রব না হলে সরিষা বিক্রি করে ভালো লাভ হবে আশায় আছি।
কথা হয় সদর উপজেলা কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কর্মকর্তা সুপন বড়ুয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাদের ভোজ্যতেলের চাহিদার ৪০ শতাংশ দেশে উৎপাদন নিশ্চিত করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। সরিষা আবাদ বাড়াতে প্রণোদনা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। কৃষক যেন ভালো ফলন পান সেজন্য কৃষি বিভাগের টিম মাঠে কাজ করছে। আশা করছি বাম্পার ফলন হবে।
Advertisement
কক্সবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ কবির হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, জেলায় এবছর ৯২৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। কৃষকদের ভালোমানের বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছে। নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার সরিষার ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি।
এসআর/এমএস