দেশজুড়ে

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ময়মনসিংহের সুলতান ফকির গ্রেফতার

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে হত্যা, নির্যাতন, অপহরণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সুলতান মাহমুদ ফকিরকে (৬৪) গ্রেফতার করেছে র‌্যপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

Advertisement

রোবাবর (৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের বিয়াতা গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে রাত ১১টার দিকে র‌্যাব-১৪-এর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) র‌্যাব-১৪-এর সদরদপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

গ্রেফতার সুলতান মাহমুদ ফকির বিয়াতা গ্রামের মৃত আসমত আলী ফকিরের ছেলে। গত ২৩ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তার সঙ্গে আরও পাঁচজনকে একই দণ্ড দেন আদালত। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম এ রায় ঘোষণা করেন।

এ মামলায় আসামি ছিলেন মোট ৯ জন। তাদের মধ্যে দুজন গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। কারাগারে তাদের মৃত্যু হয়। এছাড়া পলাতক আরেক আসামিও মারা গেছেন। মামলার বাকি ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল।

Advertisement

আরও পড়ুন>> মানবতাবিরোধী অপরাধ: ত্রিশালের মুকুলসহ ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড

আসামিদের বিরুদ্ধে আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়। ২০১৮ সালের ১২ জুলাই এসব অভিযোগ দাখিল করা হয়। একই বছরের ৫ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিচার কার্যক্রম।

সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ (আইও) রাষ্ট্রপক্ষের মোট ১৯ জন সাক্ষ্য দেন। এরপর ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি সাক্ষ্য শেষে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন হয়, যা শেষ হয় ৫ ডিসেম্বর। এরপর ২৩ জানুয়ারি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।

আরও পড়ুন: শীর্ষ ছয় আসামির ফাঁসি কার্যকর, অভিযোগ ছয় শতাধিক

Advertisement

এর আগে ২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি তদন্ত শুরু হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ত্রিশালের জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য মো. আনিছুর রহমান মানিকসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হয়। যাতে তাদের বিরুদ্ধে আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়। একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর তদন্ত শেষে প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

ওইদিন রাজধানীর ধানমন্ডিতে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন সংস্থার তৎকালীন প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান। এসময় তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এম সানাউল হক, মামলার (আইও) তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন: জনবল সংকটে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজে ধীরগতি

তখন আব্দুল হান্নান খান বলেছিলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের চারটি অভিযোগে তদন্ত হয়েছে। এর মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা দুজন ও পলাতক একজন মারা গেছেন। এখন মামলার বাকি সব আসামিই পলাতক। তাদের মধ্যে গ্রেফতার হয়েছিলেন সুলতান ফকির ও এবিএম মুফাজ্জল হুসাইন। তারা সবাই ১৯৭১ সালে মুসলিম লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সানাউল হক বলেছিলেন, ১৯৭১ সালের জুন-জুলাই থেকে একই বছরের ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে ময়মনসিংহের ত্রিশালের আহম্মদাবাদ উচ্চবিদ্যালয় রাজাকার ক্যাম্প, কানিহারী ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় অপরাধ সংগঠিত করেন আসামিরা।

মঞ্জুরুল ইসলাম/এএএইচ