দেশজুড়ে

ইমামকে নগ্ন করে ভিডিওধারণ, সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার

গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানার চান্দরা এলাকায় একটি মসজিদে জুমার বয়ানে মাদকের কুফল নিয়ে আলোচনা করায় ইমামকে মারধর ও নগ্ন করে ভিডিওধারণ করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পর্নোগ্রাফি আইনে গাছা থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ইমাম।

Advertisement

শনিবার (৪ জানুয়ারি) মামলার আসামি সাবেক গাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মশিউর রহমান মুকুলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মামলার প্রধান আসামি মুকুলের ছোট ভাই মফিজুর রহমান টুটুল পলাতক।

গাছা থানার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের চান্দরা আল আকসা জামে মসজিদের ইমামের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

মামলার বাদী মুফতি শফিকুল ইসলাম তালুকদার জানান, তিনি মসজিদ সংলগ্ন দারুল হাবিব নামে একটি মাদরাসা পরিচালনা করেন। ওই মাদরাসার পাশে মাদক কারবারিদের বিভিন্ন অপকর্মসহ মাদকের নিয়মিত আড্ডা বসতো। এতে মাদরাসার ছাত্রদের মনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছিল। তিনি জুমার নামাজের আগে বয়ানে মাদকের কুফল নিয়ে আলোচনা রাখতেন। মাদক নিয়ে আলোচনার কারণে এলাকাবাসীর মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হচ্ছিল। এর জেরে এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারিরা ক্ষুব্ধ হয়ে হুমকিসহ তাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিল।

Advertisement

এসব হুমকি উপেক্ষা করে তিনি মানুষকে মাদকের কুফল সম্পর্কে সচেতন করতে মসজিদে নিয়মিত আলোচনা অব্যাহত রাখেন। এতে একপর্যায়ে গত ২৬ জানুয়ারি জুমার আগের দিন দুপুর ১২টায় এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি মফিজুর রহমান টুটুলের নেতৃত্বে এলাকার মাদক কারবারিরা মসজিদের হুজরাখানায় (ইমামের কক্ষ) দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঢুকে তার ওপর চড়াও হন। এসময় তাকে মারধর ও নগ্ন করে মোবাইলফোনে ভিডিওধারণ করেন।

ইমামের এ বিবস্ত্র ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন অভিযুক্তরা। তিনি মান-সম্মানের ভয়ে গ্রামের বাড়ি থেকে বিকাশে টাকা এনে দিতে বাধ্য হন। এরপর গত ৩১ জানুয়ারি দুপুর সাড়ে ১২টায় মাদরাসার ছাত্রদের মাধ্যমে তাকে ডেকে নিয়ে রাস্তায় ফেলে আবারও বেধড়ক মারধর করেন অভিযুক্তরা। অবশেষে নিরুপায় হয়ে তিনি এলাকার আলেম-ওলামাদের বিষয়টি জানান এবং সবার পরামর্শে শুক্রবার গাছা থানায় মামলা করেন।

এ বিষয়ে গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইব্রাহিম হোসেন বলেন, মসজিদের ভুক্তভোগী ইমাম দুইজনকে আসামি করে পর্নোগ্রাফিসহ ফৌজদারি অপরাধের বিভিন্ন ধারায় থানায় মামলা করেছেন। আমরা এরইমধ্যে মশিউর রহমান মুকুল নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছি। মামলার প্রধান আসামি মফিজুর রহমান টুটুল পলাতক। তাকেও গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।

মো. আমিনুল ইসলাম/এমআরআর/জিকেএস

Advertisement