প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজস্ব সম্মেলন হলো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) একটি চমৎকার উদ্যোগ, ব্যতিক্রমধর্মী প্রয়াস। এ সম্মেলনের মাধ্যমে রাজস্ব আহরণে আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে পারস্পরিক মতবিনিময় এবং সহযোগিতা সম্প্রসারণের ক্ষেত্র বাড়বে। রাজস্ব সম্মেলনের মাধ্যমে কর আহরণে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও চ্যালেঞ্জগুলো ফুটে উঠবে এবং তা উত্তরণে সংশ্লিষ্ট সবাই সততা, একাগ্রতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
Advertisement
‘রাজস্ব সম্মেলন’ উপলক্ষে রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) দেওয়া বাণীতে এ কথা বলেন তিনি।আরও পড়ুন>> ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনা চেয়েছে এনবিআর
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এনবিআরের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী ‘রাজস্ব সম্মেলন-২০২৩’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। একই সময়ে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নবনির্মিত রাজস্ব ভবনের উদ্বোধন হচ্ছে, যা রাজস্ব সম্মেলনকে আরও অর্থবহ এবং স্মরণীয় করে রাখবে। এ শুভক্ষণে আমি দেশের জনগণ, করদাতা, রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং ধারাবাহিক উন্নয়নের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল দেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে ১৯৭২ সালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।আরও পড়ুন>> রোববার রাজস্ব ভবন ও সম্মেলন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
Advertisement
আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৪ বছরের ধারাবাহিক উন্নয়ন এবং নিরলস প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ এবং উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে বিশ্বের বিস্ময়। বর্তমান সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির জনকের স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে আমরা দ্বিতীয় পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-২০৪১) বাস্তবায়ন করছি এবং একটি সমৃদ্ধ রাজস্ব ভাণ্ডার গড়ে তোলার ওপর প্রাধান্য দিচ্ছি। এর সঙ্গে প্রয়োজনীয় পেশাগত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর, দক্ষ, যুগোপযোগী ও জনবান্ধব রাজস্ব প্রশাসন গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, রাজস্ব আয় থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়েই সরকার উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও সেবা নেওয়ার ব্যয় নির্বাহ করে থাকে। তাই অভ্যন্তরীণ রাজস্ব ব্যবস্থা সুসংহত করার মাধ্যমে অর্থনীতির চাকা সচল রাখার পাশাপাশি সরকারি ব্যয় নির্বাহ ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আনয়নে এনবিআরের গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশ শিগগির এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে যাচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে এনবিআর রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় আধুনিকীকরণের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর জন্য কাজ করছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অংশ হিসেবে ‘লক্ষ্যমাত্রা ১৭ দশমিক ২’ বাস্তবায়নে আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।আরও পড়ুন>> আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এনবিআরের ভূমিকা অনস্বীকার্য: রাষ্ট্রপতি
রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান সংঘাতের ফলে বৈশ্বিকসহ বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও নানাবিধ বিরূপ প্রভাব পড়ছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক এ প্রেক্ষাপটে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্য এনবিআর আরও উদ্যমী হয়ে কাজ করবে বলে আমি আশা করি। আমি ‘রাজস্ব সম্মেলন-২০২৩’ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি।
এইচএস/এমএএইচ/
Advertisement