শহরের ব্যস্ততা আর ক্লান্তি ভুলে একটু জিরিয়ে নিতে সবাই ছুটে যাচ্ছেন নতুন গড়ে উঠা পর্যটন স্থান পুষ্প কাননে। উপভোগ করছেন পুষ্প কাননের সৌন্দর্য। তুলছেন সেলফি, সময় কাটাচ্ছেন নিজের মতো করে। শুধু তাই নয় চাইলে পাওয়া যাচ্ছে প্রফেশনাল ফটোগ্রাফারও। এতে আয়ের নতুন উৎস তৈরি হয়েছে নারী উদ্যোক্তা জাহানারা বেগমের।
Advertisement
সুনামগঞ্জের সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের লালপুর গ্রামে প্রায় ১০০ শতাংশ জমি চার মাসের জন্য ১২ হাজার টাকা দিয়ে ভাড়া নিয়ে বাগান করেছেন জাহানারা বেগম। নাম দিয়েছেন পুষ্প কানন। বাগানে রয়েছে সূর্যমুখী, গাঁদা, সিলভিয়া, কুসুমসহ ২০ ধরনের ফুল।
বাগানের উদ্বোধন হয় ১ জানুয়ারি। এরপর থেকে বাগান দেখতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। ২০ টাকায় টিকেট কিনে বাগানে প্রবেশ করতে হয়। প্রতিদিন ১৫০-২০০ দর্শনার্থী ঘুরতে আসেন। ফলে দৈনিক আয় হচ্ছে তিন থেকে চার হাজার টাকা। সব ঠিক থাকলে আগামী চার মাসে এখান থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকা আয়ের আশা করছেন এ উদ্যোক্তা।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটির দ্বীপ-হ্রদ পাড়ে তাঁবুবাসে ঝুঁকছেন পর্যটকরা
Advertisement
জানা যায়, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার এ উদ্যোক্তা ছোটখাটো নার্সারি ব্যবসায় জড়িত। গত ১৬ জুনের বন্যায় নার্সারির ব্যাপক ক্ষতি হয়। তাই এ বছর বিকল্প আয়ের পথ তৈরি করেছেন তিনি। বগুড়া থেকে তিন হাজার বিভিন্ন ধরনের ফুলের চারা কিনে এনেছেন। একই সঙ্গে দর্শনার্থীদের কথা ভেবে নির্মাণ করেছেন ওয়াশরুম, ক্যান্টিন, বাঁশের সেতু ও ছবি তোলার বিভিন্ন স্পট। সব মিলিয়ে এ বাগানটিতে খরচ হয়েছে প্রায় তিন লাখ টাকা। তবে পুষ্প কাননে ফোটা লাল, হলুদ ও সবুজ ফুল দর্শনার্থীদের খুব সহজেই আকৃষ্ট করছে। ফলে লাভ হবে বলে আশা করছেন উদ্যোক্তা জাহানারা।
দর্শনার্থীরা বলছেন, এখানের ফুলগুলো খুব সুন্দর। তাই অনেকেই টিকটক ভিডিও করতে এসেছেন। স্থানটাও অসাধারণ। ২০ টাকায় টিকেট কিনে বাগানে আসা সার্থক হয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্যাংক ঋণে ‘ভোগান্তি’, এনজিওতে ঝুঁকছেন হাওরের কৃষক
দর্শনার্থী কবির মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, সামাজিক মাধ্যমে এতদিন শুধু ছবি দেখেছি। এবার বাস্তবে দেখতে এসেছি। সত্যিই খুব সুন্দর জায়গা।
Advertisement
দর্শনার্থী উর্মি আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, পুষ্প কানন অনেক সুন্দর। পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে এসে খুব ভালো লাগছে।
দর্শনার্থী সিউলি চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, পুরো বাগান বিভিন্ন ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। হাওরের মাঝখানে এমন স্পটে সময় কাটাতে খুব ভালো লাগছে।
আরও পড়ুন: ‘একজন মানুষও কি নেই আমার শেষ ইচ্ছাটা পূরণ করবে’
নারী উদ্যোক্তা জাহানারা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ করে বাগানটি করেছি। নাম দিয়েছি পুষ্প কানন। এখানে যে ফুল গাছ রয়েছে সেগুলো বগুড়া থেকে এনেছি। এখন পর্যটক আসেন। প্রতিদিন তিন থেকে চার হাজার টাকা আয় হয়। আশা করি ভালো লাভ হবে।
তিনি আরও বলেন, নারীরা এ রকম উদ্যোগ নিলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সুনামগঞ্জ আরও চাঙ্গা হতো।
লিপসন আহমেদ/জেএস/এমএস