কৃষি ও প্রকৃতি

ঈশ্বরদীর গ্রামীণ সড়কের দুপাশে সবজির সমারোহ

সড়কের দুপাশে সবজির সমারোহ। সারি সারি দেশীয় ফলের গাছ ও শাক-সবজির মাচা। সবজি গাছে সবুজ লতাপাতা, ফুল-ফলে মাচাগুলো ভরে গেছে। এসব সবজি ও দেশীয় ফল-মূল কৃষকদের পুষ্টি চাহিদা মেটাচ্ছে। পাশাপাশি উৎপাদিত সবজি বাজারে বিক্রি করে কৃষকরা বাড়তি উপার্জন করছেন।

Advertisement

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জমি অনাবাদি না রেখে চাষাবাদের আওতায় আনতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণের জন্য কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। রাস্তার দুপাশে, বসতবাড়ির আশপাশে ও ক্ষেতের আইলে সবজি ও দেশীয় ফলের আবাদের জন্য কৃষি কর্মকর্তারা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলার বেশকিছু গ্রামীণ সড়কের দুপাশে ও ক্ষেতের আইলে সবজি আবাদ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি সড়ক ও মহাসড়কের দুপাশে দেশীয় সবজি ও দেশীয় ফলের আবাদ করার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে কিছু কিছু স্থানে দেশীয় ফল কলা ও পেঁপের গাছ লাগানো হয়েছে।

পৌর শহরের ইস্তা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের কৃষকরা সড়কের দুপাশে মাচা দিয়ে লাউ ও শিমের আবাদ করেছেন। কলা ও পেঁপের গাছ লাগিয়েছেন। ক্ষেতের আইলে বেগুন ও ঢ্যাঁড়শ রোপণ করেছেন। এ ছাড়াও উপজেলার মারমী, সুলতানপুর, বক্তারপুর, মুলাডুলি, মিরকামারী, কামালপুর, আড়পাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামের সড়কের দুপাশে শিম, লাউ, ঝিঙে, মিষ্টি কুমড়া, শসা, সজিনার চাষ চোখে পড়ে।

আরও পড়ুন: জয়পুরহাটে বেগুনি ফুলকপি চাষে সফল দম্পতি

Advertisement

ইস্তা এলাকার কৃষক রেজাউল করিম বলেন, ‘সড়কের পাশে গভীর নলকূপের সেচ নালা। এ নালার ওপর মাচা দিয়ে লাউ ও শিমের আবাদ হয়েছে। পাশাপাশি নালার আইলে বেগুন ও মরিচের চারা লাগানো হয়েছে। এখানে উৎপাদিত সবজি পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে আশপাশের মানুষের কাছে বিক্রি করা হয়।’

কৃষক আলিমুজ্জামান চান্না বলেন, ‘সড়কের দুপাশে ও আইলের ওপর শিম, লাউ, বেগুন ও মরিচসহ বিভিন্ন সবজির আবাদ করেছি। সড়কের দুপাশে ও আইলসহ কোনো জমি যেন পতিত না থাকে, সেজন্য নিজেরা এসব পরিত্যক্ত জমিতে আবাদ শুরু করেছি। অন্যদের আবাদের জন্য পরামর্শ দিচ্ছি।’

দাশুড়িয়ার বারোহাসিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ সড়কের পাশে শিমের আবাদ করেছেন। তিনি জানান, রাস্তার ধারে মাচা দিয়ে শিমের আবাদ করে লাভবান হয়েছেন। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে এ শিম বিক্রি করে অর্থ উপার্জন হয়েছে। তাই প্রতি বছরই রাস্তার পাশে সবজি আবাদ করেন।

আরও পড়ুন: যমুনার বালুচরে সূর্যমুখীর হাসি

Advertisement

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুজন কুমার রায় জাগো নিউজকে বলেন, ‘গ্রামের কৃষকরা সেচ নালার ওপর মাচা দিয়ে লাউ, শিম, বরবটির আবাদ করেছেন। রাস্তার দুপাশে পেঁপে, সজিনা, বেগুন, মরিচ, টেমেটো আবাদ করেছেন। কৃষকরা চাইলে এক ইঞ্চি জমিও পতিত থাকবে না। এর উদাহরণ হতে পারে ইস্তার সড়কের দুপাশের সবজির আবাদ। চাষের জন্য কৃষি অফিস তাদের সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছে। সবজির চারা দিয়েও সহযোগিতা করা হয়।’

ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার জাগো নিউজকে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শনা অনুযায়ী, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে; সেজন্য সড়কের দুপাশে সবজি ও ফলদ বৃক্ষ রোপণের জন্য কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এরই মধ্যে বেশকিছু সড়কের দুপাশে সবজি ও দেশীয় ফলের আবাদ শুরু হয়েছে।’

শেখ মহসীন/এসইউ/এএসএম