প্রবাস

লিবিয়া-সিসিলিতে অভিবাসী নির্যাতন, গ্রেফতার ৩ বাংলাদেশি

লিবিয়ার এক বন্দিখানায় অভিবাসী নির্যাতনের অভিযোগে তদন্ত সাপেক্ষে তিন বাংলাদেশি ও দুই সুদানি নাগরিককে গ্রেফতার করেছে ইতালির পুলিশ।

Advertisement

অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগে গত ২৪ জানুয়ারি এই পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ অভিবাসনে সহযোগিতা, চাঁদা আদায়ে অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার কয়েকজনের শরীরে এখনও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। লিবিয়ার ডিটেনশন সেন্টার বা বন্দিখানাটির বেশিরভাগ অভিবাসীকে লাঠি ও বেল্ট দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। এমনকি মাথাতেও আঘাত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এসব অভিবাসীদের নিয়ে গেলো বছরের ২৬ ডিসেম্বর ইতালির দ্বীপ ল্যাম্পেদুসায় পৌঁছান পাঁচ অভিযুক্ত। নির্যাতনের শিকার অভিবাসীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তটি পরিচালনা করে অ্যাগ্রিজেন্তো ও পালেরমো পুলিশের মোবাইল স্কোয়াড।

Advertisement

ইতালির অ্যান্টি-মাফিয়া ইনভেস্টিগেশন ডিরেক্টরেটের (ডিডিএ) পালেরমো শাখা গত ২৪ জানুয়ারি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে রায় দেন এগ্রিজেন্টোর প্রাথমিক তদন্তকারী বিচারক।

দেখা গেছে, নির্যাতনের শিকার অভিবাসীদের বেশিরভাগই বাংলাদেশের নাগরিক। সিসিলির পথে রওনা হওয়ার আগে তাদের লিবিয়ার ‘সেইফ হাউসে‘ রাখা হয়েছিল। সেখানেই তাদের ওপর সহিংসতা চালানো হয়।

গত ২৬ ডিসেম্বর অভিবাসীদের দুটি নৌকা ল্যাম্পেদুসায় ভিড়লে পুলিশ তদন্তটি শুরু করে। ওইসময় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শরণার্থীদের লিবিয়ার উপকূল থেকে ইতালিতে পাচারের তথ্য সংগ্রহ করছিল তদন্ত দলটি।

‘আন্তর্জাতিক অপরাধমূলক নেটওয়ার্ক’

Advertisement

এ ঘটনা আন্তর্জাতিক অপরাধমূলক নেটওয়ার্কের অংশ হিসেবে দেখছে ইতালির পুলিশ।

তদন্তের মাধ্যমে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিরা লিবিয়া পর্যন্ত আসতে প্রয়োজনীয় অর্থ নিজ দেশেই জমা করেছিলেন। সেখান থেকে তাদের নিয়ে ইতালিতে যেতে আরও অর্থ দাবি করা হয়। প্রয়োজনীয় অর্থ না পাওয়া পর্যন্ত ওই অভিবাসন প্রত্যাশীদের বন্দিখানায় আটকে রাখা হয়।

পালেরমো ডিডিএ এই তদন্তের মধ্য দিয়ে নিশ্চিত হয়েছে, এটি একটি আন্তর্জাতিক অপরাধমূলক নেটওয়ার্ক।

লিবিয়ার বন্দিখানায় চাঁদাবাজির জন্য নির্যাতন এবং অপহরণের খবর অবশ্য এটি প্রথম নয়। এর আগেও এগ্রিজেন্তো পুলিশ অভিবাসীদের শরীরে পোড়া, আঘাত এবং ক্ষতবিক্ষত অবস্থার ছবি ও ভিডিওর সন্ধান পেয়েছিল।

এমনকি ‘সেফ হাউস’ নামধারী বন্দিখানায় আটকে রাখা অভিবাসীদের নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ দিয়ে নির্যাতন চালাতেন মানবপাচারকারীরা। যেন তাদের দুর্দশার কথা শুনে আবারও অর্থ পাঠাতে রাজি হয় তার স্বজনরা।

সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস

এমআরএম/এমএস