খেলাধুলা

আত্মবিশ্বাস ছিল বলেই বাংলাদেশের জয়

প্রথমত জয়ে ফেরায় বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের অভিনন্দন। ভারতের কাছে পরাজয়ের পর আরব আমিরাতের বিপক্ষে এই ম্যাচে জয়ে ফেরা খুব প্রয়োজন ছিল। শেষ পর্যন্ত আত্মবিশ্বাসের জোরে বলিয়ান হওয়ার কারণেই মাশরাফিদের হাতে জয়টা ধরা দিয়েছে।   তবে, বাংলাদেশ জিতলেও এই ম্যাচে বেশ কিছু প্রশ্নবোধকতার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের ব্যাটিং নিয়ে। সন্দেহ নেই, আরব আমিরাতের বোলাররা ভালো বোলিং করেছে। তবে আমাদের ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিংও ছিল খুব বাজে, চোখে পড়ার মত। যেভাবে ব্যাটিং করা দরকার ছিল, আমরা সেভাবে ব্যাটিং করতে পারিনি। লুজ দল ছিল বলেই হয়তো পার পেয়ে গেছি। ভালো দলের বিপক্ষে আরও শক্তিশালি ব্যাটিং করা প্রয়োজন। না হয়, সামনে এগুনো যাবে না।    তবে সবচেয়ে বড় কথা, উইকেট কিন্তু এতটা সহজ ছিল না। এমন উইকেটে যে প্রতিটি বলে স্ট্রোক খেলতে হবে এমন নয়। টি-টোয়েন্টিতে ৫-৭টা বলই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারে। এমন উইকেটে সেই লুজ বলগুলোর জন্যই অপেক্ষা করা ভালো। তখন স্ট্রোক খেলতে পারলে অটোমেটিক ১৩০-১৪০ হয়ে যায়। যখন উইকেটে বোলারদের জন্য থাকে, বিশেষ করে গত তিন ম্যাচেই দেখলাম উইকেট অনেকটাই বোলারদের সহযোগিতা করছে, তখন ওভাবেই ব্যাটিং করতে হবে, যেটা আমরা করতে পারিনি। ওপেনাররা ভালো সূচনা এনে দিলেও, সেটা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারিনি। মধ্যখানে এসে এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল।    তবুও বোলিংয়ে এসে আমরা ভালো কামব্যাক করতে পেরেছি। আমি মনে করি ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ খুব বাজে বোলিং করেছিল। এই ম্যাচে এসে সেটা ভালোভাবে রিকভার করতে পেরেছে। বোলিংটাই আমাদের ভালো হয়েছে। আজ মাঠে প্রবেশের পরই প্রধান নির্বাচক বলুন আর বোর্ডের কর্মকর্তা বলুন, সবাই বলছিল- বোলিংয়ের ওপরই আমাদের আস্থা বেশি। চারটা সিমার নিয়ে খেলেছি আমরা। ইতিহাসে এই প্রথম সম্ভবত পেস বোলারদের ওপর আস্থা রেখে বাংলাদেশ ম্যাচ খেলতে নামছে। ভারতের বিপক্ষে ক্লিক না করলেও আরব আমিরাতের বিপক্ষে বোলাররা নিজেদের সামর্থ্যরে প্রমাণ দিয়েছে। সঙ্গে যদি ব্যাটিংটা ভালো করতে পারি, তাহলে আরও সামনে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।    যদিও আমাদের জন্য একটা মাইনাস পয়েন্ট হয়ে যাচ্ছে সাকিবের পারফরম্যান্স। সাকিব বলতে গেলে একেবারেই ছন্দে নেই। তার মত ক্যালিভারের, যোগ্যতাসম্পন্ন খেলোয়াড়ের অফফর্মে থাকাটা দলের জন্যও ক্ষতিকর। আমি মনে করি, সে যদি একটি ইনিংস খেলতে পারে, তাহলে অবশ্যই দ্রæত ফিরে আসতে পারবে। কারণ, সে মাথায় খেলে। এটা ওর জন্য খুব বেশি পজিটিভ। আর তার ছন্দে ফেরাটা বাংলাদেশ দলের জন্যও খুব বেশি প্রয়োজন। সাকিব যদি ফর্মে ফেরে, তাহলে দলের অন্যদের জন্যও কাজটা সহজ হয়ে যাবে। ব্যাটিংয়ের মাঝখানে কিন্তু একটা গ্যাপ তৈরী হয়ে গেছে যে, সাকিব রান পাচ্ছে না। বাংলাদেশ যদি অনেক দুর যেতে চায়, তাহলে তার ফর্মে ফেরাটা খুব বেশি দরকার। যদিও দলে পারফরমার আরও আছে। কিন্তু সাকিব অফ ফর্মে থাকার কারণে, দলটাকেও বেশি অনুজ্জল দেখাচ্ছে।    আগামীকাল এশিয়া কাপের সবচেয়ে বড় ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। পরস্পর মুখোমুখি হচ্ছে ভারত-পাকিস্তান। সব সময়ই উত্তেজনাপূর্ণ একটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় এ দু’দেশের মধ্যে। মিরপুরে বোলারদের জন্য যেহেতু উইকেটের সহযোগিতা আছে, সে জন্য আমি মনে করি যে দল সাবধানে খেলবে, তারাই ভালো করবে। গত ম্যাচগুলোতে এই উইকেট থেকে বোলাররা ভালোভাবেই সহযোগিতা পাচ্ছে। ১২০ বলের খেলা। মারমার-কাটকাট করতে গেলেই বিপদ আছে। এই উইকেটে ধৈয্য ধরে খেললে কিছু বল লুজ পাওয়া যাবেই। তখন রান বাড়ানো যাবে এবং ১৩০-১৪০ সহজেই হয়ে যাবে। এটাকে সেফ স্কোর বলবো না, তবে ফাইটিং স্কোর হবে। আর এই ফরম্যাটে কাউকে এগিয়ে রাখা যায় না। যে দলের পরিকল্পনা যত সুন্দর ও গোছালো হবে, যে উইকেটকে বেশি পড়তে পারবে, তারই জয়ের সম্ভাবনা বেশি থাকবে।     লেখক: বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক ওপেনার  আইএইচএস/এসকেডি

Advertisement