ডিসেম্বর মাসেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধিতে। চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জন্য ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল গত জুলাইতে। গত ছয় মাসের কোনোটিতেই বাংলাদেশ ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি ব্যাংকখাত। সর্বশেষ গত ডিসেম্বর মাসে এই খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির হার ১২ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
Advertisement
ব্যাংকখাত সংশ্লিষ্টদের মতে, করোনা পরবর্তীসময়ে ঋণের চাহিদা ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে। উদ্যোক্তারা নতুন করে বিনিয়োগ করছেন। আবার ডলারের দাম বাড়ার কারণে বেশি ঋণের প্রয়োজন হচ্ছে। এ কারণে নভেম্বর মাসে কিছুটা বেড়েছে ঋণ প্রবৃদ্ধি।
২০২২ এর ডিসেম্বরে বেসরকারি খাতে ঋণের স্থিতি দাঁড়ায় ১৪ লাখ ২৬ হাজার ১৩৪ কোটি টাকা। এ মাসে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০২১ সালের একই সময়ের (ডিসেম্বর) তুলনায় ১৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ। এই প্রবৃদ্ধির গত নভেম্বরের চেয়েও কম। কারণ নভেম্বরে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
আরও পড়ুন: এখনও লক্ষ্যমাত্রার নিচে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি
Advertisement
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের করা প্রাক্কলনের চেয়েও কম। চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে প্রাক্কলন করেছিল ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। যদিও তা প্রাক্কলিত হারের চেয়ে অনেক কম।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি ছাড়িয়েছিল ১১ শতাংশ। পরের মাসে ফেব্রুয়ারিতে প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়ায় ১০ দশমিক ৭২ শতাংশে। মার্চে সামান্য বেড়ে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ২৯ শতাংশে। এরপর জুলাই মাসে বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশে। আগস্টে ঋণ প্রবৃদ্ধি আরও কিছুটা বেড়ে ১৪ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশে দাঁড়ায়। এর পরের মাস সেপ্টেম্বরে এ প্রবৃদ্ধি কমে ১৩ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে। অক্টোবরে ১৩ দশমিক ৯১ ও নভেম্বরে ১৩ দশমিক ৯৭ শতাংশে দাঁড়ায়।
আরও পড়ুন: তলানিতে সঞ্চয়পত্র বিক্রি, বাড়ছে ব্যাংকঋণ
ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ থাকায় চলতি বছর থেকে ঋণের চাপ বেড়েছে। এ কারণে অনেকেই নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছেন, কেউ কেউ উৎপাদনক্ষমতা বাড়াচ্ছেন। গত চার মাসে ডলারের দাম ২০ শতাংশের বেশি বাড়ায় আমদানিকারকদের ঋণপত্রের মূল্য বেড়ে গেছে। এ কারণে ঋণও বেড়েছে। তাছাড়া চলতি বছর আবাসন, গাড়ি ও ব্যক্তিগত ঋণও বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে ঋণ বিতরণে।
Advertisement
বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি দুই অঙ্কের ঘরে থাকে। ২০১৯ সালের নভেম্বরে প্রথমবারের মতো তা ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশে নেমে আসে। করোনার প্রভাবের পর ব্যাপক হারে কমে গিয়ে ২০২০ সালের মে মাসের শেষে প্রবৃদ্ধি নামে ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশে। এর পরের মাস জুন থেকে আবার ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।
ইএআর/আরএডি