অমর একুশে বইমেলার দ্বিতীয় দিনেই ঢল নেমেছে পাঠক ও দর্শনার্থীর। মেলার বাংলা একাডেমি চত্বর ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান দুই অংশই মুখর হয়ে উঠেছে দর্শনার্থীদের পদচারণায়। তবে, মেলার ভেতরে এখনো চলছে ঠকঠক শব্দ আর ধুলায় ধূসর হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন আগত দর্শনার্থী, পাঠক ও প্রকাশকরা।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাংলা একাডেমির সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। প্রবেশপথগুলোতে রয়েছে মানুষের সারি। ভেতরে প্রবেশের সময় প্রথমেই চোখে পড়বে মেলার সুন্দর সাজানো স্টল ও প্যাভিলিয়নের। সেইসঙ্গে সৌন্দর্য ম্লান করে দেবে মেলা প্রাঙ্গণের ধুলোবালি। চারদিকে উড়তে থাকা ধুলোবালি যে কারও বিরক্তির কারণ হবে। সৌন্দর্যবর্ধনের জায়গায় থাকা ময়লার স্তূপ দেখেই নেতিবাচক ধারণা আসবে মেলার আয়োজকদের নিয়ে।
আরও পড়ুন>> বইমেলায় প্রথম দিন বিক্রি কম হলেও মানুষের ভিড় ছিল বেশি
Advertisement
সমতট প্রকাশনীর এক বিক্রয়কর্মী জানান, এবারের বইমেলায় শুরুতেই ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। শুরুর দিকেই বই কিনছেন পাঠকরা। এটা ইতিবাচক মনে হচ্ছে।
অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বইপ্রেমীদের ঢল/ছবি: মাহবুব আলমহাওলাদার প্রকাশনীর প্রকাশক মোহাম্মদ মাকসুদ জানান, এবারের বইমেলায় মানুষের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। বইয়ের প্রতি মানুষের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বাড়ছে। আজ ছুটির দিন না হলেও অনেক মানুষ বইমেলায় এসেছে। এবার বই বিক্রি অন্যবারের চেয়ে বেশি হবে বলে মনে হচ্ছে।
মেলায় আগত শেখ আরমান নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানান, মেলায় আজ অনেক মানুষ দেখেছি। তবে, মেলায় ঢুকতেই ধুলোবালি, ময়লার স্তূপ, বৈদ্যুতিক তার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে, দেখে খারাপ লাগছে। মেলা শুরুর আগেই এসব শেষ করা উচিত। প্রতিবারই দেখা যায় মেলা শুরুর প্রথম সপ্তাহজুড়ে কাজই চলতে থাকে। মেলার ভেতরে যে পরিমাণ ধুলোবালি উড়ছে তাতে ঠান্ডা-কাশি হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন>> বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী
Advertisement
মেলার অব্যবস্থাপনায় কঠোর হচ্ছে বাংলা একাডেমিমেলা প্রাঙ্গণে ধুলোবালি, ময়লার স্তূপ, অগোছালো স্টল-প্যাভিলিয়ন, অব্যবস্থাপনাসহ নানা বিষয়ে কঠোর হওয়ার কথা জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির সদস্য সচিব কেএম মুজাহিদুল ইসলাম। দু-একদিনের মধ্যে মেলার পরিবেশ ফিরে আসবে। মেলার শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।শিশু আর অভিভাবকদের আনাগোনায় প্রাণচঞ্চল বইমেলা/ছবি: মাহবুব আলমজাগো নিউজকে তিনি বলেন, আমরা এবার খুব সুন্দর একটি বইমেলা উপহার দিতে চাই। এজন্য আমাদের যা যা করা দরকার তাই করবো। মেলা প্রাঙ্গণে ধুলোবালি, অগোছালো স্টল ও অব্যবস্থাপনার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের ডেকে সতর্ক করেছি।আগামীকাল দুপুরের মধ্যে মেলার ব্যবস্থাপনা না গোছাতে পারলে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) কোনো স্টলের কাজ বাকি থাকলে তাদের কালো তালিকাভুক্ত করা হবে। এছাড়া ধুলোবালি নিবারণের জন্য মেলার ভেতরে পানির ব্যবস্থা রয়েছে।
আরও পড়ুন>> ভাষা-সাহিত্য চর্চাও ডিজিটাল করার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর
আগামী দু-একদিন পর মেলায় আর কোনো অব্যবস্থাপনা থাকবে না জানিয়ে বাংলা একাডেমির সদস্য সচিব বলেন, মেলায় কোনো অব্যবস্থাপনা হলে এর দায় বাংলা একাডেমির ওপরই আসে। যার জন্য বাংলা একাডেমি মেলার সৌন্দর্য বাড়াতে ও পরিবেশ সুন্দর রাখতে যা যা করার তাই করবে।
আল-সাদী ভূঁইয়া/এমএএইচ/জেআইএম