আরব আমিরাতের ব্যাটিংয়ের দুর্বলতা ভালোই জানা আছে বাংলাদেশের বোলারদের। শ্রীলংকার ১২৯ রান তাড়া করতে গিয়ে তাদের টপঅর্ডার কিভাবে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়েছিল সেটা মাশরাফিরা ভালোভাবেই দেখেছেন। সুতরাং, ১৩৪ রানের লক্ষ্য দিয়ে আরব আমিরাতকে বেধে রাখার মন্ত্রটাও যেন জানা বাংলাদেশ দলের বোলারদের।১৩৩ রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়ার পর অবশেষে আরব আমিরাতকে ৮২ রানের মধ্যেই বেধে রাখলো বাংলাদেশের বোলাররা। ফলে আরব আমিরাতকে ৫১ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে ঘুরে দাঁড়ালো বাংলাদেশ। মুস্তাফিজ, মাশরাফি, সাকিব আল হাসান এবং মাহমুদুল্লাহ নেন ২টি করে উইকেট। আল আমিন হোসেন আর তাসকিন নেন ১টি করে উইকেট।ভারতের কাছে ৪৫ রানের বড় ব্যবধানে হারের পর কোনঠাসা হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে আরব আমিরাতের বিপক্ষে এই ম্যাচটিতে জয় ছাড়া কোন বিকল্প ছিল না মাশরাফিদের সামনে। কিন্তু টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটসম্যানরা প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। ওপেনিং জুটিছাড়া সেভাবে ভালো করতে পারেনি কেউ। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ২৭ বলে ৩৬ রান না করলে লজ্জাতেই পড়তে হতো বাংলাদেশকে। শেষ পর্যন্ত সংগ্রহটা দাঁড়ালো ১৩৩ রানের।তবে মাশরাফিরা জানতেন, আরব আমিরাতের বিপক্ষে কিভাবে ১৩৩ রানকেও রক্ষা করতে হয়। সেভাবেই কিন্তু শুরু করেছিল বাংলাদেশ দল। ইনিংসে দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসেই আমিরাতের ব্যাটসম্যানদের ওপর আঘাত হেনেছেন আল আমিন। ওভারের তৃতীয় বলেই মাশরাফির হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন প্রতিপক্ষের ওপেনার মোহাম্মদ কলিমকে। দলীয় ২ রানেই ফিরে গেলেন তিনি।আল আমিনের আঘাতের পর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা আরব আমিরাতের। রোহান মোস্তফা আর মোহাম্মদ শেহজাদের ২৩ রানের জুটি সে চেষ্টারই বহিঃপ্রকাশ। তবে এরই ফাঁকে ইনিংসের চতুর্থ ওভারে মুস্তাফিজের অসাধারণ ক্যাচ সত্ত্বেও বেঁচে গেলেন রোহান মোস্তফা। প্রথমে আউট দিলেও রিপ্লেতে দেখা গেছে নাকি মুস্তাফিজের ক্যাচটা মাটি ছুঁয়ে গেছে।তবে মুস্তাফিজের বলে ক্যাচ না দিলেও মাশরাফি তোপের মুখে পড়ে ইতিমধ্যে কাঁপতে শুরু করেছে আরব আমিরাত। ইনিংসের পঞ্চম ওভারের শেষ বলেই রোহান মোস্তফাকে মুস্তাফিজের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন মাশরাফি। নিজের পরের ওভারেই (দলীয় ৭ম ওভারে) সাইমান আনোয়ারকে ফিরিয়ে দিলেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক। ৪ বলে ১ রান করা আরব আমিরাতের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাটসম্যানটিকে মাহমুদুল্লাহর হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করলেন মাশরাফি।এরপর আর মুস্তাফিজকে আটকানো গেলো না। আবারও রিটার্ন ক্যাচ নিলেন মুস্তাফিজ। তার বলে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে তুলে দেন মোহাম্মদ শেহজাদ। ক্যাচটা তালুবন্দী করেন মুস্তাফিজই। পরের বলে আবারও ক্যাচ। এবারও ব্যাটের কানায় লাগিয়ে বল তুলে দেন আরব আমিরাতের ব্যাটসম্যান স্বপ্নিল পাতিল। মাশরাফি ধরেন ক্যাচটা। ৩৪ রানেই পড়লো আরব আমিরাতের ৫ উইকেট।হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরী হয় মুস্তাফিজের। কিন্তু পরের বলটাতে আর উইকেট নিতে পারলেন না তিনি। এরপর নিয়মিত বিরতিতে আরব আমিরাতের উইকেট নিতে থাকে বাংলাদেশের বোলাররা। মিডল অর্ডার মোহাম্মদ উসমানই শুধু ৩০ রান করেছিলেন। এছাড়া ওপেনার রোহান মুস্তফা করেছিলেন ১৮ রান। শেষ পর্যন্ত ১৭.৪ ওভারে ৮২ রানে অলআউট আরব আমিরাত।বাংলাদেশ পরের ম্যাচে ২৮ ফেব্রুয়ারি মুখোমুখি হবে শ্রীলংকার।
Advertisement
আইএইচএস/