আন্তর্জাতিক

খড়ের গাদায় পাওয়া গেলো ক্ষুদ্রাকায় সেই তেজষ্ক্রিয় ক্যাপসুল

অবশেষে হারিয়ে যাওয়া সেই ছোট্ট তেজষ্ক্রিয় ক্যাপসুল খুঁজে পেয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়। বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) দেশটির জরুরি সেবা বিভাগ একটি খড়ের গাদা থেকে ৮ মিলিমিটার আর ব্যাস মাত্র ৬ মিলিমিটার লম্বা ওই ক্যাপসুলটি খুঁজে পাওয়ার কথা জানায়। এর মাধ্যমে গত কয়েক দিনের চরম উদ্বেগ থেকে মুক্ত হলো অস্ট্রেলিয়া।

Advertisement

এ বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি একটি খনি থেকে সড়কপথে নিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ি থেকে পড়ে গিয়ে নিউম্যান ও পার্থ শহরের মধ্যেবর্তী স্থানে হারিয়ে যায় ক্যাপসুলটি। এ দুই শহরের দূরত্ব প্রায় ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার (৮৭০ মাইল)। হারিয়ে যাওয়ার পরপরই ক্যাপসুলটি মানবস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে সতর্কতা জারি করে অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্য বিভাগ।

আরও পড়ুন> শতাব্দীর ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল

দেশটির স্বাস্থ্যবিভাগ জানায়, ক্যাপসুলটিতে খুব অল্প পরিমাণে সিজিয়াম-১৩৭ তেজস্ক্রিয় উপাদান আছে। খনির কাজে ব্যবহার করা এ ক্যাপসুল স্পর্শ করলেও মারাত্মক অসুস্থতা দেখা দিতে পারে বলে জানানো হয়। এমনকি এ থেকে নির্গত তেজস্ক্রিয়তা থেকে ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি হতে পারেও বলে সতর্ক করা হয়। ক্যাপসুলটি হারিয়ে যাওয়ার জন্য ক্ষমা চায় খনি কোম্পানি রিও টিনটো।

Advertisement

এর আগে ক্যাপসুলটি দেখতে কেমন তার একটি ছবিও প্রকাশ করে অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের ডিপার্টমেন্ট অব ফায়ার অ্যান্ড ইমারজেন্সি সার্ভিসেস (ডিএফইএস)। আকারে খুব ছোট হওয়ায় খুঁজে পেতে বেশ বেগ পেতে হয় উদ্ধারকারীদের।

আরও পড়ুন> মাঝ আকাশে দুই হেলিকপ্টারের সংঘর্ষ, নিহত ৪

জানা যায়, বিশেষ যন্ত্রাংশে সজ্জিত একটি গাড়ি ক্যাপসুলটির তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এরপর শনাক্তকরণ যন্ত্র দিয়ে ক্যাপসুলটির অবস্থান শনাক্ত করা হয়। রাস্তার পাশে প্রায় সাত ফুট দূরত্বে এটির সন্ধান মেলে। পরে সিরিয়াল নাম্বার দেখে ক্যাপসুলটিকে সঠিকভাবে শনাক্ত করা যায়।

স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, এটিকে এখন সীসার একটি কন্টেইনারে রাখা হবে। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) আগে পার্থ শহরের একটি নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের আগে ক্যাপসুলটি নিউম্যান শহরের একটি নিরাপদ স্থানে রাখা হবে।

Advertisement

ক্যাপসুলটি দিয়ে মূলত খনির ঘনত্ব পরিমাপ করা হয়, যা পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চল পিলবারা অঞ্চলে রিও টিন্টোর গুদাই-দারি খনিতে ব্যবহার করা হচ্ছিল।

আরও পড়ুন> ডলফিনের ওপর হাঙরের আক্রমণ, সমুদ্রসৈকত বন্ধ

খনি কর্তৃপক্ষের লৌহ আকরিক বিভাগের প্রধান সাইমন ট্রট বলেন, সরল সত্য হলো, ক্যাপসুল হারিয়ে ফেলাটা ছিল দুঃখজনক ও লজ্জাজনক। তবে শেষ পর্যন্ত অবিশ্বাস্যভাবে সেটি উদ্ধার করায় সরকারি কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। এখন সরকার যদি অনুসন্ধানের খরচ দিতে বলে, আমরা তা আনন্দের সঙ্গে পরিশোধ করবো।

এদিকে, অস্ট্রেলিয়ান কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে বিদ্যমান আইন পর্যালোচনা করে দেখার কথা জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমাদের দেশে তেজস্ক্রিয় পদার্থ নিরাপদে বহনে ব্যর্থতার বর্তমান জরিমানা হাস্যকরভাবে কম। এটি বাড়ানো হলে, ভবিষ্যতে কোম্পানিগুলো এ ধরনের পদার্থ বা ডিভাইস পরিবহনে বর্তমানের তুলনায় বেশি সচেতন ও সতর্ক হবেন।

সূত্র: বিবিসি

এসএএইচ