বিএনপির আন্দোলনের দৈর্ঘ্য কম, প্রস্থ বেড়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপির আন্দোলন জোয়ার থেকে ভাটার দিকে যাচ্ছে। ভুয়া জোট গঠন করা বিএনপিও ভুয়া। জনগণ তাদের বিশ্বাস করে না। বিএনপির ছেড়ে দেওয়া ছয় আসনে উপ-নির্বাচনে আজকের ভোট অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশে আবারও গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে।
Advertisement
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় শহীদ শেখ রাসেল পার্কের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নৈরাজ্য, অপরাজনীতি ও অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এ শান্তি সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও সুজিত রায় নন্দী। সঞ্চালনা করেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক চৌধুরী সাইফুন্নবী সাগর এবং দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির রাজনীতি ঘোমটা পরা রাজনীতি। ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। বিএনপির আন্দোলনে সরকার ভয় পায়নি, উল্টো বিএনপিই ভয় পেয়েছে। বিএনপির ষড়যন্ত্রমূলক সমাবেশ প্রতিরোধ নয়, সর্তক থাকবে আওয়ামী লীগ। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে পর্যন্ত আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ করে যাবে।’
Advertisement
আরও পড়ুন>> বিএনপি জোটের আন্দোলন চলে অদৃশ্য রিমোট কন্ট্রোলে: কাদের
গণঅভ্যুত্থান, লাল কার্ড আর সরকার পতনের আন্দোলন থেকে বিএনপি কেন অন্তিম পদযাত্রায় প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ভয় পায় না, ভয় পাচ্ছে বিএনপি। কর্মসূচি নরম হচ্ছে, ছোট হয়ে যাচ্ছে তাদের পৃথিবী।
কাদের বলেন, বিএনপি এখন পথহারা পথিকের মতো দিশেহারা। মাত্র সূচনা করেছি আমরা, খেলা এখনও শুরু করিনি। বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি সবই ভুয়া। মির্জা ফখরুল লাল কার্ড দেখাতে গিয়ে শূন্য হাতে ফিরলো। সরকার পতন, ৫৪ দল, ২৭ ও ১০ দফা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার সবই ভুয়া। বিএনপির হাঁকডাক, মশার কয়েল, সাতদিন আগ থেকে সমাবেশের প্রস্তুতি, সবই ব্যর্থ।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনে কে জিতলো, কে হারলো সেটা মূল বিষয় না। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। উপ-নির্বাচনে সব আসনেই ঘোমটা পরা প্রার্থী দিয়েছে বিএনপি। জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করে বিএনপি কত বড় ভুল করেছে, যতই দিন যাবে ততই অনুধাবন করতে পারবে।
Advertisement
আরও পড়ুন>> কাদেরের মন্তব্যকে ‘অদ্ভুত’ বললেন ফখরুল
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি জনগণকে বারবার ধোঁকা দিয়েছে। তাদের আর জনগণ বিশ্বাস করে না। নির্বাচন বানচালের ব্যর্থ চেষ্টা করে কোনো লাভ হবে না। আগামী নির্বাচনে জনগণ আবারও আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করে একাত্তরের ঘাতকদের বিতাড়িত করবে। আমাদের একটাই লক্ষ্য, সরকার ও বিরোধী দল দুটি থাকবে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বিএনপির লক্ষ্য দেশকে অস্থিতিশীল করে ক্ষমতা দখল করা। তারা কখনই জনগনের ভোটের সমর্থন আর পাবে না। তাই আবারও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। বিএনপির আন্দোলনের খেলা ১০ ডিসেম্বরের পরই শেষ হয়ে গেছে। এখন নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন>> বিএনপির পদযাত্রা নয়, মরণযাত্রা শুরু হয়ে গেছে: কাদের
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, বিএনপির আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে পদযাত্রা শুরু করেছে। কিন্তু মানুষ তাদের সঙ্গে নেই। তারা নির্বাচনেও ব্যর্থ হবে।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল, মিজবাউর রহমান ভূইয়া রতন, শরফুদ্দিন আহমেদ সেন্টু ও হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদার ও গোলাম সরোয়ার কবির প্রমুখ।
এসইউজে/এএএইচ/এএসএম