অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে প্রকাশিত হলো কবি ও গল্পকার অঞ্জন আচার্যের তৃতীয় গল্পগ্রন্থ ‘বাতাসের তলোয়ার’। বইটি প্রকাশ করেছে বিদ্যাপ্রকাশ। ধ্রুব এষের প্রচ্ছদে বইটির মূল্য রাখা হয়েছে ২০০ টাকা।
Advertisement
এর আগে ২০১৭ সালে ‘দেশ পাবলিকেশন্স’ থেকে লেখকের প্রথম গল্পের বই ‘ঊনমানুষের গল্প’ এবং দীর্ঘ বিরতির পর ২০২২ সালে বিদ্যাপ্রকাশ থেকে দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ ‘চক্রব্যূহ’ প্রকাশ হয়, যা ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পায়।
বিদ্যাপ্রকাশের প্রকাশক মজিবর রহমান খোকা বলেন, ‘অঞ্জন আচার্য এ সময়ের একজন প্রতিশ্রুতিশীল লেখক। তার লেখা বরাবরই নিরীক্ষামূলক ও ভিন্নধর্মী। কোনো সস্তা চটকদার জনপ্রিয়তার পেছনে ছোটা মানুষ তিনি নন। অঞ্জন হলেন লম্বা রেসের ঘোড়া। সমহিমায় সাহিত্য অঙ্গনে দীর্ঘদিন থাকতে এসেছেন। সমকালীন সামাজিক ও রাজনৈতিক যাবতীয় প্রাসঙ্গিক অসঙ্গতি অঞ্জনের লেখায় শৈল্পিকভাবে ফুটে ওঠে। এ বইয়ের গল্পগুলোতেও এর ব্যত্যয় ঘটেনি।’
আরও পড়ুন: আদিল মাহমুদের ‘জ্যোতির্ময় এক আশ্চর্য মুখফুল’
Advertisement
বইয়ের বিষয়বস্তু সম্পর্কে অঞ্জন আচার্য বলেন, ‘প্রতিটি জীবনই আলাদা! আঙুলের ছাপের মতো আলাদা। তবুও মিলে যায় অন্য কারো সঙ্গে। যেভাবে মিল থাকে অচেনা কারো চেহারার আদলে। তবে যার যার মতো অন্যরকম। সাদা পাতায় সবাই কষে যায় নিজের জীবনের নকশার অঙ্ক। ফলাফল কখনো মেলে, কখনো-বা থাকে অসমাপ্ত। বইয়ের গল্পগুলোও তেমনই। রিপুতাড়িত মানুষের জীবনের রসায়ন-আখ্যান। তারই সমীকরণ মেলানোর প্রাণান্ত চেষ্টা। তারপরও কোথাও নিষ্পত্তি নেই। তাই বলে সব গল্পই কি অমীমাংসিত? না, সেটাও নয়। সমাপ্তি-দাঁড়ির পর বাকিটুকু টেনে নেবেন পাঠকেরা। হয়তো ‘কোথাও মায়া রহিয়া গেল’।’
অঞ্জন আচার্য আরও বলেন, ‘বইটিতে অন্তর্ভুক্ত ১৫টি গল্পের প্রতিটি চরিত্র ও ঘটনাই কাল্পনিক। কোনো দেশের কোনো মানুষের বা বাস্তব কোনো ঘটনার সঙ্গে যদি এর মিল খুঁজে পাওয়া যায়, সেটা নিতান্তই কাকতালীয়।’
‘বাতাসের তলোয়ার’ বইটি পাওয়া যাচ্ছে বইমেলায় বিদ্যাপ্রকাশের ৩০৭-৩১০ নম্বর স্টলে, বাংলাবাজারে বিদ্যাপ্রকাশের নিজস্ব শো-রুমে এবং অনলাইন বুকশপগুলোয়।
আরও পড়ুন: আসছে রনি রেজার ‘খালুইভর্তি হাহাকার’
Advertisement
অঞ্জন আচার্যের এ পর্যন্ত প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৫টি। এর মধ্যে কাব্যগ্রন্থ ৫টি: জলের উপর জলছাপ (শুদ্ধস্বর), আবছায়া আলো-অন্ধকারময় নীল (বিজয় প্রকাশ), তুমুল কোলাহলে কুড়াই নৈঃশব্দ্য (অনুপ্রাণন প্রকাশন), নামহীন মৃত্যুর শিরোনাম (অনুপ্রাণন প্রকাশন), স্বপ্নের চোখে ঘুম (বেহুলাবাংলা)।
গল্পগ্রন্থ ৩টি: ঊনমানুষের গল্প (দেশ পাবলিকেশন্স), চক্রব্যূহ (বিদ্যাপ্রকাশ), বাতাসের তলোয়ার (বিদ্যাপ্রকাশ)।
গবেষণা-প্রবন্ধ গ্রন্থ ১টি: রবীন্দ্রনাথ: জীবনে মৃত্যুর ছায়া (মূর্ধন্য)। একই বই সংশোধিত ও পরিমার্জিতরূপে পশ্চিমবঙ্গের আত্মজা পাবলিশার্স প্রকাশ করে ‘রবির জীবনে মৃত্যুশোক’ নামে।
জীবনীগ্রন্থ ২টি: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় (কথাপ্রকাশ), একই বই আত্মজা পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত হয় ‘আমি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়’ নামে, আমিই অ্যালবার্ট আইনস্টাইন (উৎস প্রকাশন)।
আরও পড়ুন: রাব্বী হোসেনের দ্বিতীয় উপন্যাস ‘নিশিদিন’
প্রবন্ধগ্রন্থ ১টি: কথাপ্রসঙ্গে যৎসামান্য (অগ্রদূত অ্যান্ড কোম্পানি)। এছাড়া দুই বাংলার লেখক-প্রকাশক-সম্পাদক-চিত্রশিল্পীদের একটি ডিরেক্টরি সম্পাদনা করেন ‘সংযোগ-সূত্র’ (দ্যু প্রকাশন) নামে।
সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ এখন পর্যন্ত অঞ্জন আচার্য পেয়েছেন ‘শতকথার শতগল্প সেরা লেখক ২০১৮’, ‘অনুপ্রাণন লেখক সম্মাননা ২০২২’, ‘বামিহাল তরুণ লেখক সাহিত্য পুরস্কার ২০২২’, ‘ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিল (ডিএসইসি) লেখক সম্মাননা ২০২২’।
এসইউ/এমএস