দেশজুড়ে

৪৫ বছর পর বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের সাইকেলের সন্ধান

দীর্ঘ ৪৫ বছর পর বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ব্যবহৃত বাইসাইকেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তিনি শেষবারের মতো এই সাইকেল চালিয়ে নড়াইলের গ্রামের বাড়িতে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন।বর্তমানে নড়াইল সদরের ডোয়াতলা গ্রামের অলিয়ার রহমানের ছেলে এমদাদুল হক সেই সাইকেলটি ব্যবহার করছেন। সাইকেলটি জাদুঘরে সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।জানা যায়, যুদ্ধের সময় বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ সাইকেলটি এমদাদুল হকের বাবাকে দিয়ে গিয়েছিলেন।সাইকেল ব্যবহারকারী এমদাদুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বাবাব মুখে অনেক বার শুনেছি বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ আমার বাবাকে সাইকেলটি যুদ্ধের সময় দিয়ে গিয়েছিলেন। আমার বাবা এই সাইকেলটি অনেক দিন ব্যবহার করেছেন। এখন বাবা বেঁচে নেই, তাই আমি এই সাইকেলটি ব্যবহার করি।আমি কিছুদিন আগে সাইকেলটি বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের স্ত্রী ফজিলাতুন নেসার কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম, তিনি আমাকে বলেছেন বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ তোমার বাবাকে সাইকেলটি দিয়েছিল আমি সেটা জানি। এখন তুমি এই সাইকেলটি ব্যবহার করো।অপরদিকে, নূর মোহাম্মদের স্ত্রী ফজিলাতুন নেসা বলেন, সাইকেলটি আমার স্বামী ব্যবহার করতেন। আমি জানি তিনি সাইকেলটি অলিয়ার রহমানের কাছে রেখে গিয়েছিলেন। সাইকেল ব্যবহারকারী খুব গরিব মানুষ, তাদের সাইকেলের যথাযথ মূল্য দিয়ে এখন সরকার যদি সাইকেলটি বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ স্মৃতি জাদুঘরে সংরক্ষণ করে তাহলে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লোকজন সাইকেলটি দেখতে পারবে।বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের শ্যালক মশিয়ার রহমান জানান, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যশোর থেকে এই সাইকেলটি চালিয়ে নূর মোহাম্মদ শেখ একবার বাড়িতে দেখা করতে এসেছিলেন। নূর মোহাম্মদ যশোর ফিরে যাওয়ার সময় সাইকেলটি আমার বড় ভাই অলিয়ার রহমানের কাছে রেখে যান। তার পর বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ আর ফিরে আসেনি।প্রসঙ্গত, ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার মহিষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ। তিনি ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোরের গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাক-বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে মৃত্যুবরণ করেন। যশোরের শার্শা থানার কাশিপুর গ্রামে তাকে সমাহিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগের স্বীকৃতি স্বরূপ তাকে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করা হয়। হাফিজুল নিলু/এআরএ/এবিএস  

Advertisement