স্বাস্থ্য

প্রথম ধাপের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন, ভালো আছে নুহা-নাবা

মেরুদণ্ড জোড়া লাগানো অবস্থায় জন্ম হয় নুহা ও নাবার। এভাবেই তাদের কেটে যায় ১০ মাস। বিষয়টি জানতে পেরে চিকিৎসার দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মেরুদণ্ড আলাদা করতে শেষপর্যন্ত এই দুই শিশুর প্রথম ধাপের অস্ত্রোপচার হয়। চিকিৎসকরা জানান, অস্ত্রোপচার পরবর্তী অবস্থায় নুহা ও নাবা ভালো আছেন।

Advertisement

রোববার (২৯ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) এই অস্ত্রোপচার হয়। কেবিন ব্লকের অপারেশন থিয়েটারে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত চলে অস্ত্রোপচার।

আরও পড়ুন: শরীরের যেকোনো হাড় ভেঙে গেলে করণীয়

নুহা ও নাবার বাবার নাম আলমগীর। তিনি একজন পরিবহন শ্রমিক। থাকেন কুড়িগ্রামের কাঁঠালবাড়ীতে। তার স্ত্রী নাসরিনের গর্ভে ২০২২ সালের ২১ মার্চ মেরুদণ্ডে জোড়া লাগানো অবস্থায় জন্ম নেয় এই দুই মেয়ে।

Advertisement

এরপর গত বছরের এপ্রিল মাসে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয় নুহা ও নাবাকে। সার্জারি অনুষদের ডিন ও নিউরো স্পাইন সার্জন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেনের অধীনে ভর্তি হয় তারা।

চিকিৎসকরা বলেন, নুহা-নাবার এই সমস্যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে ‘পাইগোপাগাস কনজয়েনড টুইন’ বলে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাদের দেহে টিস্যু বর্ধনকারী ডিভাইস চারটি এক্সপান্ডা সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়।

আরও পড়ুন: অজান্তেই আপনি যেভাবে মেরুদণ্ডের ক্ষতি করছেন

বর্তমানে তাদের বিএসএমএমইউয়ের হাই কেয়ার ইউনিট-এইচডিইউতে রাখা হয়েছে। অস্ত্রোপচারের নেতৃত্ব দেন বিএসএমএমইউয়ের সার্জারি অনুষদের ডিন ও নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন।

Advertisement

অস্ত্রোপচারে অংশগ্রহণ করেন, শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনিস্টিটিউটের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সামন্তলাল সেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নার্সিং অনুষদের ডিন ও অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক ডা. আইয়ুব আলী, শিশু সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একেএম জাহিদ হোসেন, অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. দেবাশীষ বনিকসহ আরও ১০ জন চিকিৎসক।

আরও পড়ুন: মেরুদণ্ডের সমস্যায় করণীয়

এ বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে (৩১ জানুয়ারি) বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, নুহা ও নাবার চিকিৎসার সব খরচ ব্যক্তিগতভাবে বহন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি তাদের সার্বক্ষণিক খবর নিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, বিএসএমএমইউতে বিশ্বমানের সব ধরনের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হবে। এরই মধ্যে সফলভাবে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট, দেশের প্রথম ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। মেরুদণ্ডে জোড়া লাগানো শিশুদের অস্ত্রোপচার সফলভাবে হবে বলে আমি আশাবাদী।

সার্জারি অনুষদের ডিন ও নিউরো সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন বলেন, মেরুদণ্ড ও স্পাইন জোড়া লাগানো এ দুই শিশুর অস্ত্রোপচার অত্যন্ত জটিল। বেশ কয়েক ধাপে এর অস্ত্রোপচার করা লাগবে। নিউরো সার্জন, ইউরোলজিস্টস, শিশু সার্জন, বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জন, এনেস্থিওলজিস্ট, শিশু পুষ্টিবিদসহ বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকের প্রয়োজন হবে। সে অনুযায়ী নেওয়া হয়েছে ব্যবস্থা।

এএএম/জেডএইচ/এমএস