দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপ একটি পর্যায় পর্যন্ত গিয়ে থমকে যায় বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষমতাসীন জোটের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
Advertisement
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন।
মেনন বলেন, ‘দুর্নীতি উন্নয়নের অনুষঙ্গ। কিন্তু যেসব দেশ উন্নয়নের পথে রয়েছে, তারা দুর্নীতি নিরোধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। চীন তার পার্টির দেড় লাখ সদস্যকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়েছে। যার মধ্যে পলিটব্যুরো সদস্যও রয়েছেন। ভিয়েতনাম তাদের উপ-প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করেছে। কিন্তু আমরা মন্ত্রী-আমলাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নিতে পেরেছি? পারিনি।’
আরও পড়ুন>>ডলার সংকটে বাদই দিতে হলো পদ্মা-যমুনার ওপর সঞ্চালন লাইন)
Advertisement
তিনি বলেন, আমি আজ আর খেলাপি ঋণ ও অর্থপাচার নিয়ে বিশেষ কথা বলবো না। এ নিয়ে সংসদে অনেক কথা হয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারের ভাবখানা এমন যে, ‘বক আর ঝক যত কানে দিয়েছি তুলো, মার আর ধর যত পিঠে বেধেছি কুলো।’
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধকে কেন্দ্র করে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও পশ্চিমা বিশ্ব যে পুরো যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছে, তা পৃথিবীকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে এগিয়ে দিচ্ছে। তাদের এই যুদ্ধ চক্রান্তে বাংলাদেশকে তারা জড়াতে চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এর থেকে এখন পর্যন্ত দূরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। আর এ কারণেই সেসব শক্তি আমাদের নির্বাচন, গণতন্ত্র নিয়ে এত সোচ্চার। আমরা সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশের গণতন্ত্র, নির্বাচন নিজেদের ব্যাপার। তারা বরং নিজের ঘর সামাল দিক, পরে অন্যের কথা বলুক।’
আরও পড়ুন>>ভয়ে নির্বাচনে আসতে চাইছে না বিএনপি, ষড়যন্ত্রের জাল পাকাচ্ছে: মেনন)
তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎখাতের দুর্নীতি নিয়ে সংসদে বহু আলোচনা হয়েছে। পুনরাবৃত্তি করতে চাই না। কারণ এতে সরকার কেবল অস্বস্তিবোধ করেন না, রাগান্বিতও হন। এটা ঠিক যে এই সরকার শতভাগ গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, এ নিয়ে কোনো জবাবদিহি চাওয়া যাবে না। সর্বশেষ সরকার বিদ্যুৎ আইনের যে সংশোধনী এনেছে, তা এই ক্ষেত্রে জনগণের প্রশ্নের অধিকারকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’
Advertisement
আরও পড়ুন>>দেশ মেট্রোরেল যুগে প্রবেশ করলেও মানুষের সংকট কাটেনি: মেনন)
মাদক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাদক সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আছে বলে দাবি করলেও ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে দেশের তরুণদের বড় অংশ তাদের হতাশা ঢাকতে মাদকে আশ্রয় নিচ্ছে। মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হলেও কোনো কার্যকর ফলাফল দেখা যাচ্ছে না। মাদকাসক্তি দেশের অর্থনৈতিক-সামাজিক অগ্রগতিকে টেনে ধরছে, আরও ধরবে। মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের নিকট দাবি জানান তিনি।’
এইচএস/ইএ/জিকেএস