হাইকোর্টের নির্দেশে আব্দুস সালাম মুর্শেদীর নিয়ন্ত্রণে থাকা গুলশানের বাড়ি নিয়ে বানানো দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরিয়েছেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
Advertisement
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) ব্যারিস্টার সুমন গণমাধ্যমকে ভিডিও সরানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে এদিন খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বাফুফের সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীর বাড়ি সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন নিয়ে দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে ব্যারিস্টার সুমনকে অপসারণের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন>>সালাম মুর্শেদীর গুলশানের বাড়ি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকায় নেই
Advertisement
একই সঙ্গে এ বাড়ির বিষয়ে বিচারাধীন রুল নিষ্পত্তি পর্যন্ত মামলার বিষয়বস্তুকে (অন মেরিটে) প্রভাবিত করে এমন ভিডিও তৈরি ও প্রচার না করতেও নির্দেশ দেওয়া হয় তাকে।
ভিডিও অপসারণ চেয়ে সালাম মুর্শেদীর করা আবেদনের শুনানির শেষে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এছাড়াও রুল শুনানির জন্য ৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আদালতে এদিন সালাম মুর্শেদীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও এম. সাঈদ আহমেদ রাজা।
রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অনীক আর হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। রাজউকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন মাসুদ। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
Advertisement
এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক জানান, আব্দুস সালাম মুর্শেদীর পক্ষে তার আইনজীবী হলফনামা দাখিল করেছেন। আর রাজউক, গণপূর্ত ও দুদকের পক্ষেও প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এখন রুল শুনানির জন্য ৮ ফেব্রুয়ারি দিন রেখেছেন আদালত।
আরও পড়ুন>>সালাম মুর্শেদীর গুলশানের বাড়ি: অনুসন্ধানে দুদকের কমিটি
ব্যারিস্টার সুমন জানান, এ বাড়ি সংক্রান্ত রাজউকের প্রতিবেদন নিয়ে দুটি ভিডিও প্রচার করেছিলাম আমার ফেসবুক পেজে। ওই দুটি ভিডিও অবিলম্বে অপসারণ করতে বলেছেন আদালত। আর মামলার মেরিট (বিষয়বস্তুকে প্রভাবিত) টাচ করে এমন ভিডিও না করতে এবং প্রচার না করতেও নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ১ ডিসেম্বর আদালত এ মামলার বিষয়বস্তুকে (অন মেরিটে) প্রভাবিত করে এমন নিউজ বা প্রতিবেদন না করতে সংবাদমাধ্যমকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এর আগে গত ৩০ অক্টোবর রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে প্রয়োজনীয় নথি দাখিলে রাজউক ও গণপূর্তকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর গুলশান-২-এর ১০৪ নম্বর সড়কে সি ই এন (ডি)-২৭-এর ২৯ নম্বর বাড়িটি ১৯৮৬ সালের অতিরিক্ত গেজেটে ‘খ’ তালিকায় পরিত্যক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত। কিন্তু আব্দুস সালাম মুর্শেদী সেটি দখল করে বসবাস করছেন।
আরও পড়ুন>>ব্যারিস্টার সুমনকে সালাম মুর্শেদীর বাড়ির ভিডিও সরানোর নির্দেশ
রিটে ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল, ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি ও চলতি বছরের ৪ জুলাই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যানকে দেওয়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তিনটি চিঠি যুক্ত করা হয়েছে।
২০১৫ ও ২০১৬ সালে দেওয়া চিঠিতে পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে বাড়িটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও আব্দুস সালাম মুর্শেদী কীভাবে বাড়িটি দখল করে আছেন, রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে এ ব্যাখ্যা চেয়েছিল পূর্ত মন্ত্রণালয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সে চিঠি আমলে না নেওয়ায় ফের ৪ জুলাই চিঠি দেওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে ভবনটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও কীভাবে রাজউক চেয়ারম্যানের দপ্তর থেকে সেটির নামজারি ও দলিল করার অনুমতি দেওয়া হলো, সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সে ব্যাখ্যা দিতে অনীহা দেখিয়েছেন।
এফএইচ/ইএ/জিকেএস