ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও ২০০২ সালে গুজরাটে সংঘটিত হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা নিয়ে ‘দ্য মোদি কোশ্চেন’ নামে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। সেখানে বলা হয়, গুজরাটের ওই দাঙ্গা উসকে দিয়েছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
Advertisement
১৭ জানুয়ারি প্রকাশের পর তথ্যচিত্রটিকে মোদীবিরোধী প্রপাগাণ্ডা হিসেবে আখ্যা দিয়ে ভারতে এটির প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হয়। এবার ওই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছেন দেশটির কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিক।
ওই আপিলের বিপরীতে আগামী সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) নিষেধাজ্ঞা নিয়ে শুনানির দিন ধার্য্য করেছেন সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার (৩০ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
জানা যায়, আপিলকারীদের মধ্যে রয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবি এমএল শর্মা, সিইউ সিং। তারা জরুরিভিত্তিতে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে শুনানির আপিল করেন। ভারতের প্রধান বিচারপতি ধনাঞ্জয়া চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ আপিল আমলে নেন।
Advertisement
আপিলকারীদের মধ্যে আরও রয়েছেন প্রবীণ সাংবাদিক এন রাম, অধিকারকর্মী প্রশান্ত ভূষণ ও তৃণমূল কংগ্রেস এমপি মহুয়া মৈত্র।
জেষ্ঠ্য আইনজীবি এমএল শর্মা বলেন, তথ্যচিত্রের ওপর দেওয়া এ নিষেধাজ্ঞা বিধিবহির্ভূত ও অসাংবিধানিক। তথ্যচিত্রটিতে ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গার অনেক তথ্য-প্রমাণ রয়েছে। এগুলো যাচাই-বাছাই করে দাঙ্গার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনা সম্ভব।
তিনি আরও বলেছেন, তারা আদালতের কাছে একটি সাংবিধানিক প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। এখন আদালতের নির্ধারণ করতে হবে, সংবিধানের ১৯ এর এক ও দুই ধারা অনুযায়ী জনসাধারণ গুজরাট দাঙ্গার খবর, তথ্য ও প্রতিবেদন দেখতে পারবে কি না।
এদিকে, এ আপিলকে ‘আদালতের সময় নষ্ট করা’ দাবি করে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, হাজার হাজার সাধারণ নাগরিক তাদের মামলা নিষ্পত্তির কিংবা দাখিলের অপেক্ষায় রয়েছেন, অথচ আপিলকারীরা সুপ্রিম কোর্টের মূল্যবান সময় নষ্ট করছেন।
Advertisement
২১ জানুয়ারি ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় টুইটার ও ইউটিউব কর্তৃপক্ষকে বিবিসির ওই তথ্যচিত্রটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়। তাছাড়া, বিষয়টি নিয়ে করা অন্তত ৫০টি টুইট মুছে ফেলতে বলা হয়। তবে ভারতে নিষিদ্ধ করা হলেও, অন্যান্য উপায়ে দেশটির সাধারণ শিক্ষার্থীরা তথ্যচিত্রটি দেখছেন। এমনকি বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তথ্যচিত্রটি প্রদর্শন করা হয়।
সূত্র: এনডিটিভি
এসএএইচ