খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি নিয়ে অভিযোগ অনুসন্ধানে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করেছে দুর্নীতি দমন (দুদক)। হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে কমিটি গঠন সংক্রান্ত দুদকের নথি।
Advertisement
নথিতে বলা হয়েছে, আব্দুস সালাম মুর্শেদীর বাড়ি-১০, গুলশান-২, ঢাকা ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে রাজউকের চেয়ারম্যানের সহায়তায় পরিত্যক্ত বাড়ি দখলের প্রাপ্ত অভিযোগটি দুই সদস্য বিশিষ্ট টিমের মাধ্যমে অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে মহাপরিচালক (তদন্ত-১) বরাবর পত্র প্রেরণের জন্য কমিশনের ০৩/২০২৩ নম্বর সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
এমতাবস্থায়, উক্ত সিদ্ধান্ত অনুসারে অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
দুদকের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান আদালতকে জানান, অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুদকের কমিটি অনুসন্ধান শুরু করেছে।
Advertisement
এদিকে সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি সংক্রান্ত রাজউকের প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সালাম মুর্শেদির গুলশানের বাড়ি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকায় নেই।
আরও পড়ুন: উন্নয়নের নজির স্থাপনের ঘোষণা সালাম মুর্শেদীর
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। প্রতিবেদন দাখিল করেন রাজউকের আইনজীবী জাকির হোসেন মাসুদ। আজ এই প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে, গত ১৬ জানুয়ারি সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি সংক্রান্ত মূল নথি ও এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন এফিডেভিট করে এক সপ্তাহের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। গত ১৬ জানুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট একই বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
Advertisement
আদালতে এদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। সালাম মুর্শেদীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। রাজউকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন মাসুদ।
আরও পড়ুন: দুর্নীতি হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না: হাইকোর্ট
গত ১২ ডিসেম্বর সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি সংক্রান্ত নথি ও প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও রাজউককে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। একই সঙ্গে সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি নিয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন দুদককে দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
গত ১৩ নভেম্বর সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি সম্পর্কিত কাগজপত্র হাইকোর্টে দাখিল করা হয়। সেদিন সালাম মুর্শেদীর পক্ষে কাগজপত্র দাখিল করেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা।
গত ১ নভেম্বর সরকারের সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিয়ে বাড়ি বানানোর অভিযোগে সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে এ সম্পত্তি সম্পর্কিত সব কাগজপত্র ১০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে রাজউক, গণপূর্ত বিভাগ ও সালাম মুর্শেদীকে নির্দেশ দেন আদালত। হাইকোর্টের একই বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
তারও আগে সরকারের সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিয়ে বাড়ি বানানোর অভিযোগে সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে রিট করা হয়। ৬ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এ রিট দায়ের করেন। রিটে দুদকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
এফএইচ/এমএইচআর/জিকেএস