দেখতে খুব সাদামাটা কিন্তু খুবই মজার একটি ফল হলো সফেদা। মেটে বাদামি রঙের গোলাকার ফলটি দেখে বোঝার কোনো উপায় নেই ফলটি এত গুণের। মুখে দেয়ার আগ পর্যন্ত বরং একটা অনীহাই কাজ করবে। যাঁরা মিষ্টি খেতে পছন্দ করেন অথচ ফ্যাটের ভয় পান, তাঁদের জানিয়ে রাখছি, সফেদা একদম ফ্যাটমুক্ত ফল। তাই যাঁরা মিষ্টি পছন্দ করেন তাঁরা নির্দ্বিধায় খেতে পারেন সফেদা।সফেদা গাছ চির সবুজ বৃক্ষ। এটি আমাদের দেশি ফল হিসেবে পরিচিত হলেও এর আদি নিবাস মেক্সিকোর দক্ষিণ অংশ, মধ্য আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় অঞ্চল। পেটেনেস ম্যানগ্রোভ ইকো-অঞ্চলের উপকূলীয় অঞ্চলে এই গাছ প্রাকৃতিকভাবে বিস্তার লাভ করে। স্প্যানিশ উপনিবেশের সময়ে এটি ফিলিপাইনে নেওয়া হয়েছিল। পরে সেখান থেকে সফেদা ছড়িয়ে পড়ে। মেক্সিকো, বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে সফেদার ব্যাপক উত্পাদন হয়।সফেদা গাছ বেশ লম্বা হয়। এটি ৩০ মিটার বা তার চেয়েও উঁচু হতে পারে। এর বাকলে প্রচুর সাদা আঠালো কষ থাকে যা `চিকল` নামে পরিচিত। এক সময় চুইংগামের কাঁচামাল ছিল এর কষ। গাছের পাতা মাঝারি আকারের, সবুজ ও চকচকে।সফেদার রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ। যেমন - ১) শরীরের কোষের ক্ষতিসাধন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।২) নিয়মিত সফেদা খেলে ঘন ঘন ঠাণ্ডা লাগার সমস্যা কমে যায়।৩) ত্বকে বয়সের ছাপ দূর করতে সফেদা সহায়দা করে।৪) শরীরের ওজন কমাতে চাইলে নিয়মিত সফেদা খেতে পারেন।৫) শ্বাসকষ্ট দূর করতে সাহায্য করে এবং ফুসফুস ভালো রাখে।৬) সফেদার বীজের নির্যাস কিডনির রোগ সারাতে সাহায্য করে।৭) সফেদায় রয়েছে প্রচুর খাদ্যআঁশ যা কোষ্ঠাকাঠিন্য দূর করে এবং হজমে সাহায্য করে।৮) আধাপাকা সফেদা পানিতে ফুটিয়ে কষ বের করে খেলে ডায়রিয়া ভালো হয়।৯) সফেদায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি রয়েছে। নিয়মিত সফেদা খেলে মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায় ও দাঁত ভালো থাকে।১০) পাকা সফেদায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, কপার, ফোলেট ও নিয়াসিন।সফেদার প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যযোগ্য অংশে রয়েছে -খাদ্যশক্তি ৮৩ কিলোক্যালরিশর্করা ১৯.৯৬ গ্রামআমিষ ০.৪৪ গ্রামভিটামিন বি২ ০.০২ মিলিগ্রামভিটামিন বি৩ ০.২ মিলিগ্রামভিটামিন বি৫ ০.২৫২ মিলিগ্রামভিটামিন বি৬ ০.০৩৭ মিলিগ্রামফলেট ১৪ আইইউভিটামিন সি ১৪.৭ মিলিগ্রামক্যালসিয়াম ২১ মিলিগ্রামআয়রন ০.৮ মিলিগ্রামম্যাগনেসিয়াম ১২ মিলিগ্রামফসফরাস ১২ মিলিগ্রামপটাশিয়াম ১৯৩ মিলিগ্রামসোডিয়াম ১২ মিলিগ্রামজিংক ০.১ মিলিগ্রাম
Advertisement