মুহূর্তের মধ্যেই যেন রাস্তার ফকির হতে চলেছেন বিশ্বের সবচেয়ে গতিময় মানব উসাইন বোল্ট। প্রতারণার শিকার হয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ১২ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ১৩৯ কোটি টাকা) হারিয়ে ফেলেছেন বোল্ট। সারা জীবনে যত অর্থনৈতিক উপার্জন বোল্টের তার প্রায় সবই হারিয়ে বসেছেন তিনি।
Advertisement
এতবড় একটি ঘটনার পর অবশ্য মনোবল শক্ত রাখার চেষ্টার করছেন বোল্ট। বলছেন, তিনি ভেঙে পড়েননি। তবে কিছুটা তো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। যে কারণে স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা হতাশা তৈরি হয়েছে।
এত বড় এক ঘটনার পর নিজের বিজনেস ম্যানেজারকে বরখাস্ত করেছেন উসাইন বোল্ট। জ্যামাইকান এই দৌড়বিদের ব্যবসা এবং বিনিয়োগ সংক্রান্ত সবকিছু দেখাশোনা করতেন তার বিজনেস ম্যানেজার।
বিজনেস ম্যানেজারকে বরখাস্ত করার ব্যাপারে বোল্ট নিজে কিছু বলেননি। তিনি বক্তব্য জানিয়েছেন আইনজীবী লিন্টন গর্ডনের মাধ্যমে। বোল্ট বলেছেন, ‘ওই বিনিয়োগ ছিল আমার ভবিষ্যৎ। সবাই জানেন, আমার তিন সন্তান রয়েছে। মা-বাবার দায়িত্ব রয়েছে। তাছাড়া আমি ভালোভাবে বাঁচতে চাই।’
Advertisement
শুক্রবার বিজনেস ম্যানেজারকে বরখাস্ত করেন বোল্ট। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে গর্ডন বলেন, ‘অপ্রত্যাশিত ঘটনার প্রত্যাশিত ফলাফল। এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি কিছু বলার নেই, যা হওয়ার ছিল তাই হয়েছে।’
এরপর কথা বলেছেন বোল্ট নিজেও। জ্যামাইকার পেগাসাস হোটেলে বসে বোল্ট বলেন, ‘একজন মানুষ কঠোর পরিশ্রম করে যা অর্জন করে তা যদি হারিয়ে ফেলে, তাহলে তার জন্য একটি দুঃখজনক পরিস্থিতি তৈরি হবে- এটাই স্বাভাবিক। এটা অবশ্যই আমার জন্য একটা খারাপ পরিস্থিতি এবং আমি খুব হতাশ।’
‘আমি এ নিয়ে খুব বেশি কিছু বলতে চাই না। কারণ, সব সময় আমার মতো কিছু মানুষের খুব বেশি কিছু বলা সাজেও না। আমি অনেকের মন্তব্য পড়েছি। অধিকাংশই এখনও দ্বিধান্বিত। আমিও চাই না এই দ্বিধা বাড়াতে। আমাদের কি ঘটে, সে অপেক্ষায় থাকতে হবে।’
‘তবে আমি ভেঙে পড়িনি। তবে অবশ্যই এই ঘটনা আমাকে একটা জটিল অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।’
Advertisement
অবসর নেওয়ার পর উসাইন বোল্ট তার সব সঞ্চয় একটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে রেখেছিলেন। সেই অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত ছিল শেয়ারবাজারের একটি সংস্থা। সেই সংস্থার প্রতারণার ফলে ১২ মিলিয়ন উইরো বা ১৩৯ কোটি টাকা হারিয়েছেন বোল্ট। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, সংস্থাটি প্রায় এক দশক ধরে প্রতারণা করছে মানুষের সাথে।
ব্যাংক প্রতারণার ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে জ্যামাইকা সরকার। জ্যামাইকার অর্থমন্ত্রী নাইজেল ক্লার্ক বলেছেন, ‘আমরা প্রতারিত হওয়া প্রতিটি মানুষের সঙ্গে কথা বলছি। ডিরেক্টর অফ দ্য ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস কমিশন বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। ব্যাংক অফ জামাইকাও নজর রাখছে। আর্থিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত আইন আরও কঠোর করার কথা ভাবা হচ্ছে।’ এ ধরনের ঘটনায় সরকারের একাধিক সংস্থা এবং বহু প্রবীণ নাগরিক প্রতারিত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জ্যামাইকার অর্থমন্ত্রী।
আইএইচএস/