চিকিৎসার মান অনুসারে সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ক্যাটাগরি করে ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এজন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
Advertisement
রোববার (২৯ জানুয়ারি) সচিবালয়ে নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব, হাসপাতালের ক্যাটাগরি নির্ধারণ নিয়ে আয়োজিত সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, দেশে হাসপাতালের সংখ্যা অনেক হয়েছে। এখন সেবার মান বাড়াতে চাচ্ছি। যে হাসপাতালে যে চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলে জনগণ জানেন, তা নিশ্চিত করতে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। হার্ট ফাউন্ডেশনে হার্টের চিকিৎসা বেশি হয়, আবার জেনারেল হাসপাতালে সব ধরনের সেবা কম-বেশি থাকে। বিশেষায়িত সেবা যেখানে দেওয়া হয়, সেখানে অন্য সেবা বেশি থাকে না। মানুষ যাতে সঠিক স্থানে গিয়ে সঠিক চিকিৎসা নিতে পারেন, তা মাথায় রাখতে হবে।
আরও পড়ুন>> নিপাহ ভাইরাসে মারা গেছেন ৫ জন, আক্রান্ত ৮: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
Advertisement
জাহিদ মালেক বলেন, মানুষের সঠিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে। ক্যাটাগরি হবে এ, বি, সি আকারে। হাসপাতালের মান এবং সেখানে কোন ধরনের সেবা দেওয়া হয়, মানুষ যাতে তা সহজে জানতে পারেন, এমন একাধিক কারণেই ক্যাটাগরি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এতে চিকিৎসার ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও সজাগ থাকবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ক্যাটাগরি দেখেই হাসপাতালে সেবা নিতে যাবে জনগণ। পাশাপাশি হাসপাতালে যে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়, তার মূল্যও আমরা নজরে আনতে পদক্ষেপ নিচ্ছি। সব হাসপাতালের চিকিৎসামূল্য এক রকম হবে না। যাদের বড় হাসপাতাল, বড় বিনিয়োগ, সুযোগ-সুবিধা ও মান যাদের ভালো, সেখানে মূল্যটা একটু বেশি হবে।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘এ’ ক্যাটাগরির এক রকম সুবিধা, ‘বি’ ক্যাটাগরির এক রকম সুবিধা এবং ‘সি’ ক্যাটাগরি হাসপাতালগুলোর মানভেদে এবং সুযোগ-সুবিধা উল্লেখসহ সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট ফি নির্ধারণ করা থাকবে। এতে মানুষ আগে থেকেই জানতে পারবে কোন হাসপাতালে গেলে কী কী সুবিধা পাওয়া যাবে এবং চিকিৎসা বাবদ কত ব্যয় হবে।
আরও পড়ুন>> সরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্যক্তিগত রোগী দেখার সুযোগ চিকিৎসকদের
Advertisement
তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকদের প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাকটিসের ওপরও আমরা জোর দিচ্ছি। আমরা এ সংক্রান্ত কাজ করে যাচ্ছি। একটি পাইলট স্কিম হিসেবে আগামী মার্চ থেকে এটা শুরু হবে। দেশের মানুষ যাতে যথাযথমূল্যে কাঙ্ক্ষিত সেবা পান, তা নিশ্চিত করতেই এসব উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
‘এতে বিদেশে না গিয়ে দেশেই চিকিৎসা নিতে সবাই উৎসাহিত হবেন। হাসপাতালের মান বৃদ্ধি ও আস্থা অর্জন করতে না পারলে মানুষকে বিদেশ যাওয়া থেকে বিরত রাখা যাবে না।’
দেশে বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৭২৬টি। এর মধ্যে হাসপাতাল আছে চার হাজার ৫২৮টি। ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে ৯ হাজারের মতো। প্রাইভেট খাতে ব্লাডব্যাংক আছে ১৭৭টি বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন>> নতুন বছরে একদিনও বিশুদ্ধ বাতাস পায়নি ঢাকাবাসী
জনবলের কিছু ঘাটতি আছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, এখন জনবল বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
সভায় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মিলন, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুবিন খান, মহাসচিব ও সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানসহ বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরএমএম/ইএ/জেআইএম