শিক্ষা

গভর্নিং বডি বর্জনের ঘোষণা আইডিয়াল কলেজের শিক্ষকদের

অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে বর্তমান গভর্নিং বডিতে ‘অনাস্থা’ জানিয়ে তাদের বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের শিক্ষকরা। একই সঙ্গে গভর্নিং বডি গঠনে নতুন করে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা। তারা বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন।

Advertisement

শনিবার (২৮ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনী মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা এ দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মীর নাসরিন শবনম।

আরও পড়ুন>> বই লিখছি, জীবিত অবস্থায় প্রকাশ হলে ছেলেশুদ্ধ আমাকে মেরে ফেলবে

Advertisement

শিক্ষকরা অভিযোগ করে বলেন, ‘করোনাকালে আমাদের কলেজের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু এই সময়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা ১১ কোটি টাকা গভর্নিং বডি আত্মসাৎ করেছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নামে টাকা আত্মসাৎ হয়েছে। শিক্ষার্থীদের হোস্টেল থেকে আদায়কৃত টাকা আত্মসাৎ হয়েছে। ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের ১ কোটি টাকাও আত্মসাৎ হয়েছে। ড্রেসের নাম করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিনা রশিদে টাকা নেওয়া হয়েছে। ভালো লেখকের বই বাদ দিয়ে গভর্নিং বডির যোগসাজশে সাবেক অধ্যক্ষ পছন্দের প্রকাশনীর লেখকের বই পাঠ্য করেছেন।’

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের গভর্নিং বডির বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য। দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর যাবৎ তিনি এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছেন। গভর্নিং বডিতে অন্য সব পদে কিছুটা পরিবর্তন এলেও সভাপতির পদটিতে গত ১৪ বছর কোনো পরিবর্তন আসেনি।’

এতে বলা হয়, ‘কিছুদিন আগে বিভিন্ন অনিয়ম করে ও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন খাত থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটপাট ও আত্মসাৎ করে সাবেক অধ্যক্ষ জসিম উদ্দীন আহম্মেদ, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক তৌফিক আজিজ চৌধুরী ও বাংলা বিভাগের শিক্ষক তরুণ কুমার গাঙ্গুলী সুপ্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সুনাম চরমভাবে নষ্ট করেছেন। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ও কতিপয় সদস্য প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকায় এগুলো কখনই প্রকাশ হয়নি এবং এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি।’

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে সাময়িক বরখাস্ত অধ্যক্ষ ও অপর দুই শিক্ষকের অনিয়ম ও দুর্নীতিগুলো প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ প্রাথমিক তদন্তের পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক তদন্ত কাজের জন্য তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া দীর্ঘ প্রায় পাঁচ মাস ধরে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা ও আইনগত জটিলতায় আটকে আছে। এ তদন্তকাজ বাধাগ্রস্ত করতে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন, যেখানে অন্য আরও ছয়জনের পাশাপাশি কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতিকে প্রতিপক্ষ করা হলেও অজানা কারণে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’

Advertisement

আরও পড়ুন>> এমপি গোলাপের বিরুদ্ধে দুদকে ব্যারিস্টার সুমনের অভিযোগ

বর্তমান গভর্নিং বডি বাতিল করে নতুন গভর্নিং বডি গঠনের ব্যবস্থা নিতে এবং তাদের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি জোর দাবি জানানো হয় শিক্ষকদের পক্ষ থেকে।

কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের প্রভাষক মারুফ নেওয়াজের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জীববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাজমুল হুদা, ইংরেজি বিভাগের সেগুপ্তা ইসলাম ও রাজু আহম্মেদ, ব্যবস্থাপনা বিভাগের নাজমুল ইসলাম প্রমুখ।

এমএইচএম/ইএ/জেআইএম