হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী পলোবাইচ। উপজেলার আতুকুড়া গ্রামের বড়য়ান বিলে মাছ ধরার এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন হাজারো মানুষ।
Advertisement
শনিবার (২৮ জানুয়ারি) ভোর থেকে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মৎস্য শিকারীরা পলো নিয়ে বিলের পানিতে একের পর এক ঝাঁপ দিতে থাকেন। হৈ-হুল্লোড় করে ছন্দের তালে তালে তারা মাছ শিকার করতে থাকেন তারা। এসময় বিলে চিরচেনা গ্রামবাংলার অপরূপ এক দৃশ্যের অবতারণা হয়। সৌখিন এ পলোবাইচে অংশ নেয় শিশুরাও।
স্থানীয়রা জানান, এক সময় জেলার নবীগঞ্জ, বাহুবল, আজমিরীগঞ্জ, লাখাই ও বানিয়াচং উপজেলায় পলোবাইচ প্রতিযোগিতার প্রচলন ছিল। তখন বিভিন্ন নদী, বিলে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হতো। এটি কেবল মাছ ধরা নয়, গ্রাম বাংলার একটি উৎসবের মাধ্যমও বটে।
তবে বর্তমানে পলোবাইচ হারিয়ে যেতে বসলেও আতুকুড়া গ্রামবাসী তাদের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। প্রতিবছরের মতো এ মৌসুমে নির্ধারিত দিনে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সৌখিন মৎস্য শিকারীরা জাল, পলোসহ মৎস্য শিকারের অন্য সরঞ্জাম নিয়ে বিলের পাড়ে হাজির হন।
Advertisement
শনিবার সকালে আতুকুড়া, সুবিদপুরসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ বিলের পাড়ে একত্রিত হয়ে মাছ শিকারে নামেন। প্রায় দুই/তিন ঘণ্টা চলে মাছ শিকার। তবে সবাই মাছ না পেলেও আনন্দের সীমা ছিল না তাদের মধ্যে। বিলগুলোতে বিষ দিয়ে মাছ নিধন করায় আর আগের মতো মাছ মিলছে না বলেও জানালেন স্থানীয়রা।
পলোবাইচ আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মহিবুল হোসেন উজ্জ্বল জানান, যুগ যুগ ধরে তাদের গ্রামের এ বিলটিতে পলোবাইচ প্রতিযোগিতা হয়ে আসছে। সে ঐতিহ্য তারা এখনো ধরে রেখেছেন।
তিনি বলেন, বিষ দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মাছ পাবে না। আবার গ্রামের ঐতিহ্যগুলোও হারিয়ে যাবে। পাশাপাশি মাছের বংশবিস্তারও নষ্ট হয়ে যাবে। তাই সরকারকে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।
সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/জেআইএম
Advertisement