খেলাধুলা

আমিরাতের বিপক্ষে বাংলাদেশকে কষ্ট করে জিততে হবে

শুরুতেই বলবো, দুর্ভাগ্য আরব আমিরাতের। শ্রীলঙ্কার মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে জয়ের দারুণ একটা সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারলো না। এখানেই স্পষ্ট হয়ে গেছে অভিজ্ঞতা আর অনভিজ্ঞতা, পেশাদারিত্ব আর অপেশাদারিত্বের মধ্যে পার্থক্য কী! শ্রীলঙ্কাকে ১২৯ রানে বেঁধে ফেলার পরও জয়টা তারা তুলে নিতে পারেনি তারা। হেরেছে ১৪ রানের ব্যবধানে।আরব আমিরাতের দলটি পুরোপুরি পেশাদার নয়। তারা অন্য জব করে। সুযোগ পেলে ক্রিকেট খেলে। তবুও অপেশাদার একটি দল টস জিতে কন্ডিশনের সুবিধা কাজে লাগাতে ফিল্ডিং বেছে নেয়ার সাহস দেখাতে পেরেছে। অবশ্যই এটা প্রশংসনীয়। শুধু তাই নয়, তাদের বোলাররা কিন্তু উইকেট এবং মাঠের সুবিধা ঠিকই আদায় করে নিয়েছে। বোলাররা প্রশংসনীয় বোলিং করেছে। যে কারণে শ্রীলঙ্কার মতো দলকে বেঁধে রাখতে পেরেছিল ১২৯ রানের মধ্যে। তবে আমার মনে হয়, আরব আমিরাতের ফিল্ডিং ছিল কিছুটা দুর্বল। এ জায়গাটায় তারা যদি আরও ভালো করতে পারতো, তাহলে শ্রীলঙ্কার অন্তত আরও ১৫টি রান কম হতো।আরব আমিরাত যে অপেশাদার একটি দল, তা তাদের ব্যাটিং পরিকল্পনা দেখেই বোঝা গেছে। লক্ষ্যটা খুব বেশি বড় ছিল না। তারা যদি শুরুতে একটু রয়ে-সয়ে খেলতো, একটু পরিকল্পনামাফিক ব্যাটিং করতো, তাহলে জয়টা তারাও পেতে পারতো। কিন্তু অপরিকল্পিত ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই দেখা গেলো মালিঙ্গার মতো বোলারের বিপক্ষে মেরে খেলতে গিয়েছিল। যার ফল তারা পেয়েছে হাতে-নাতে। টপ অর্ডারের পাঁচজন ব্যাটসম্যানই খুব বাজেভাবে আউট হয়েছে। ওটাই মূলত আরব আমিরাতকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছে। সেখান থেকে তারা আর বের হয়ে আসতে পারেনি।আরব আমিরাতের এই দলটির বিপক্ষেই আগামীকাল (শুক্রবার) মাঠে নামছে বাংলাদেশ। দু’দলেরই দ্বিতীয় ম্যাচ। প্রথম ম্যাচ দু’দলই হেরেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে আরব আমিরাতের শক্তির পার্থক্য কতটুকু, আগামীকালের ম্যাচে সেটা বিবেচ্য হবে না। কারণ, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে যেকোনো দল যে কাউকে হারিয়ে দিতে পারে। এখানে একটু ভুল করলেই তা কাটিয়ে ওঠা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। ঘুরে দাঁড়াতে হলে আরব আমিরাতের বিপক্ষেও বাংলাদেশকে ভুল করা চলবে না।মিরপুরের উইকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে আরব আমিরাতেরও ভালো করার সামর্থ্য আছে। সুতরাং, তাদের বিপক্ষে ভালো করতে হলে একটা পরিকল্পনা করেই মাঠে নামতে হবে। তাদের যে দুর্বলতাগুলো রয়েছে সেগুলো কাজে লাগাতে হবে। খেলাটা মাত্র ১২০ বলের। সুতরাং, ভালো একটা প্ল্যান করতে হবে। ওরা (আরব আমিরাত) আজ কোনো প্ল্যানই করেনি। তাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা কিংবা সুবিধা যাই বলি, তারা স্ট্রোক খেলা পছন্দ করে। সুতরাং স্ট্রোক খেলতে গিয়ে ভুল তারাই করবে।আর ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ যে ‘লুজ’ বলগুলো দিয়েছিল সেগুলো আরব আমিরাতের বিপক্ষে দেয়া যাবে না। তাহলে, কোনো চেষ্টাই কাজে আসবে না। তারা কিন্তু বোলিংয়ে সুযোগটা বেশ কাজে লাগিয়েছে আজ (বৃহস্পতিবার)। টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে শ্রীলঙ্কাকে ১২৯ রানে বেঁধে রাখতে পেরেছিল। যদি ফিল্ডিংটা আরও একটু ভালো হতো, তাহলে আরও কম রানে বাঁধতে পারতো লঙ্কানদের।সুতরাং, আমার মনে হয়, আরব আমিরাতের বিপক্ষে জিততে হলে বাংলাদেশকে তিনটা ডিপার্টমেন্টেই খুব হার্ডওয়ার্ক করে জিততে হবে। উইকেট থেকে হয়তো বাংলাদেশ সুবিধা পাবে। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে কোনো গ্যারান্টি নেই উইকেটের। এখানে অন্যরাও ভালো করে বসতে পারে। সুতরাং, বাংলাদেশের জন্য জয়টা এতো সহজ হবে না, যদি ওরা এমন পারফরম্যান্স করে থাকে।আরব আমিরাতের বিপক্ষে জিততে হলে কয়েকটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে মাশরাফিদের। তারা খুব বেশি স্ট্রোক খেলা পছন্দ করে। সুতরাং, রাইটসাইডে বল করে, যতো বেশি পারা যায় ডট বল দিতে হবে। তাহলে তাদের মধ্যে একটা প্যানিক তৈরি হবে এবং ভুল করে বসবে। আরেকটা বিষয় হলো, আরব আমিরাতের ফিল্ডিং খুব দুর্বল। এ জায়গাটা বাংলাদেশ কাজে লাগাতে পারে। তবে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তারা কিন্তু অতিরিক্ত রান দেয়নি। এটা তাদের জন্য প্লাস পয়েন্ট। এ জায়গায় বাংলাদেশকেও সতর্ক হতে হবে। না হয় দেখা গেছে এটাই পার্থক্য তৈরি করে দিয়েছে।লেখক: বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক ওপেনার।আইএইচএস/বিএ

Advertisement