দেশজুড়ে

আজ ফুলবাড়ী হানাদার মুক্ত দিবস

৪ ডিসেম্বর ফুলবাড়ী হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়। এদিন উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা ও ভারতীয় মিত্রবাহিনী ১০০ এমটিএম রেজিমেন্ট, পাকিন্তানী দখলদার খান সেনাদের সঙ্গে প্রানপণ যুদ্ধ করে দখলদার পাকিন্তানী খান সেনাদের হাত থেকে ফুলবাড়ী উপজেলাকে শত্রুমুক্ত করে।চূড়ান্ত বিজয়ের ১২ দিন পূর্বে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব গৌরব আজো স্বরণ করে এই উপজেলার মানুষ। এরপর থেকেই ৪ ডিসেম্বর ফুলবাড়ী হানাদার মুক্ত দিবস হিসেবে পালন হয়ে আসছে।

Advertisement

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মুক্তিযোদ্ধা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ জানা গেছে, আজকের এই দিনে ভোর থেকে উপজেলার সীমান্ত এলাকা আটপুকুর, আমড়া ও জলপাইতলী এলাকা দিয়ে এক যোগে খানসেনাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করে মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী ও ভারতীয় মিত্র বাহিনী। মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সংঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে দাঁড়াতে না পেরে, খান সেনারা বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পিছু হটতে শুরু করে। অবশেষে তাদের নিশ্চিত পরাজয় ভেবে, ফুলবাড়ীতে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্র বাহিনীর প্রবেশ রোধ করতে ফুলবাড়ী শহর দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট যমুনা নদীর উপর লোহার ব্রিজটির পূর্ব অংশ বেলা ২টার সময় ডিনামাইন্ড দিয়ে উড়িয়ে দেয় খান সেনারা। এতে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্র বাহিনীদের পূণরায় অস্থায়ী ব্রিজ তৈরি করে ফুলবাড়ীতে প্রবেশ করতে খানিকটা বিলম্ব হয়। এই সুযোগে ফুলবাড়ীতে অবস্থান করা খান সেনারদল ও তাদের সহযোগী রাজাকারেরা একটি ট্রেন যোগে ফুলবাড়ী থেকে সৈয়দপুরের উদ্দ্যেশে পালিয়ে যায়। ঐ সময় মুক্তিযোদ্ধারা ট্রেনটিকে ঠেকাবার জন্য চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিল।এরপর ঐ দিন বিকেল ৫টায় ফুলবাড়ীতে মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী ও মিত্রবাহিনী প্রবেশ করে ফুলবাড়ীকে শত্রুমুক্ত বলে ঘোষণা দেন এবং সড়ক ও জনপদের ডাকবাংলায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে। খান সেনাদের উড়িয়ে দেয়া লোহার ব্রিজটি পুনরায় ইট সিমেন্ট দ্বারা নির্মাণ করা হয়, যা আজো মুক্তি যুদ্ধের রনাঙ্গনের সাক্ষি হয়ে দাড়িয়ে আছে। এদিকে দিনটিকে পালন করতে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নানা বর্মসূচি হাতে নিয়েছে।