নেপাল ও মালদ্বীপ ছাড়া সার্কভুক্ত অন্য দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে সার্কভুক্ত দেশের মধ্যে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ১২ হাজার ৬৬৫ দশমিক ৯৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। একই অর্থবছরে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ১৯ হাজার ৩৫৩ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
Advertisement
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে সরকারি দলের সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এ তথ্য জানান।
মন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী আফগানিস্তানের সঙ্গে ৭ দশমিক ৮৭ মিলিয়ন বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। ভুটানের সঙ্গে ২৫ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন, ভারতের সঙ্গে ১১ হাজার ৯২৯ দশমিক শূন্য এক মিলিয়ন, পাকিস্তানের সঙ্গে ৬৯৫ দশমিক ২১ মিলিয়ন, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ১১০ দশমিক ৯৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। অপরদিকে নেপালের সঙ্গে ৯৯ দশমিক ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ও মালদ্বীপের সঙ্গে তিন দশমিক ১৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাণিজ্য উদ্বৃত্ত হয়েছে বাংলাদেশের।
মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ছিল ১৫ হাজার ৫৬৫ দশমিক ১৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে তা ৪৫ হাজার ৩৬৭ দশমিক ১৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। ফলে এক যুগের ব্যবধানে রপ্তানি আয় তিনগুণ বেড়েছে।
Advertisement
এম আব্দুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি জানান, করোনার ধাক্কা সামলে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে দেশের পণ্য রপ্তানি করে ৫ লাখ ২৬ হাজার ১৮৮ কোটি ৭ লাখ টাকা আয় হয়েছে। এটি আগের অর্থবছরের চেয়ে যা এক লাখ ৪১ হাজার ৪২৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা বেশি।
এম আব্দুল লতিফের অপর এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, বর্তমানে বাংলাদেশের ১৮৩টি তৈরি পোশাক কারখানা ইউএস গ্রিন কাউন্সিল থেকে সবুজ কারাখানার স্বীকৃতি পেয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যাসরকারি দলের সংসদ সদস্য হাবিব হাসানের প্রশ্নের জবাবে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান জানান, পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০১৩ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী শ্রমে নিয়োজিত মোট শিশুর সংখ্যা এক দশমিক ৭ মিলিয়ন। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যা এক দশমিক ২ মিলিয়ন। এর আগে ২০০৩ সালের সমীক্ষায় শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ছিল তিন দশমিক ৪ মিলিয়ন।
দেশে খাদ্য ঘাটতি নেইসরকারি দলের আবুল কালাম আজাদের প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, দেশে বর্তমানে কোনো খাদ্য ঘাটতি নেই। গত অর্থবছরে ৩৮০ দশমিক ৪৮ লাখ মেট্রিক চন চাল ও ১০ দশমিক ৮২ লাখ মেট্রিক টন গমসহ ৩৯১ দশমিক ৩০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উৎপাদিত হয়েছে। চলতি অর্থবছরেও দেশে খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা নেই বলেও মন্ত্রী দাবি করেন।
Advertisement
কোন দেশে যেতে কত খরচবিশ্বের ১৫টি দেশে অভিবাসনে কী পরিমাণ খরচ হয় সেই তথ্য সংসদকে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গার প্রশ্নের জবারে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
মন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী জি-টু-জি পদ্ধতিতে (সরকারিভাবে) তিনটি দেশে অভিবাসনের সুযোগ রয়েছে। এ হিসাবে জর্ডানে মহিলা কর্মী ১৮ হাজার ২৪০ টাকায় ও পুরুষ কর্মী ২৬ হাজার ৮শ টাকায় পাঠানোর সুযোগ আছে। এছাড়াও, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৩৬ হাজার ৮৬০ টাকায় ও মালয়েশিয়ায় শূন্য খরচে অভিবাসনের সুযোগ রয়েছে।
মন্ত্রীর দেওয়া তথ্য মতে, অভিবাসনে সিঙ্গাপুরে দুই লাখ ৬২ হাজার ২৭০ টাকা, সৌদি আরবে এক লাখ ৬৫ হাজার টাকা, মালয়েশিয়ায় ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা, লিবিয়ায় এক লাখ ৪৫ হাজার ৭৮০ টাকা, বাহারাইন ৯৭ হাজার ৭৮০ টাকা খরচ হয়। এছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাতে এক লাখ ৭ হাজার ৭৮০ টাকা, কুয়েতে এক লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা, ওমানে এক লাখ ৭৮০ টাকা, ইরাকে এক লাখ ২৯ হাজার ৫৪০ টাকা, কাতারে এক লাখ ৭৮০ টাকা, জর্ডানে এক লাখ ২ হাজার ৭৮০ টাকা, মিশরে এক লাখ ২০ হাজার ৭৮০ টাকা, রাশিয়ায় এক লাখ ৬৬ হাজার ৬৪০ টাকা এবং মালদ্বীপে এক লাখ ১৫ হাজার ৭৮০ টাকা খরচ হয়।
সৈয়দ আবু হোসেনের প্রশ্নের জবাবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছরে এ পর্যন্ত (১ জুলাই ২০২২ থেকে ১৭ জানুয়ারি ২০২৩) ৫ লাখ ৭৭ হাজার ১১৪ জন বাংলাদেশি কর্মীর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এই সংখ্যা এক লাখের বেশি।
এইচএস/কেএসআর/জিকেএস