বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাস্থ্য নিয়ে তার পরিবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এছাড়া কারা কর্তৃপক্ষ তার বিষয়ে কোনো তথ্য দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেছেন রিজভীর স্ত্রী আঞ্জুমান আরা আইভী।
Advertisement
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) আঞ্জুমান আরা আইভী বলেন, আমি তাদের বারবার ফোন দিলেও ফোন ধরছেন না। আজ কারাগারে গিয়ে যোগাযোগ করলে জেল সুপার দেখা করেননি। ডেপুটি জেলার আমিনুর রহমান আমাকে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রেখে বলেন- ‘রিজভী সাহেব ভালো আছেন। তাকে চিকিৎসকরা দেখাশুনা করছেন। আপনি চলে যান’।
আরও পড়ুন: কারাগারে থেকেই আইনের মাস্টার্স পরীক্ষায় বসছেন রিজভী
এর আগে মঙ্গলবার রাতে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালে ভর্তির দাবি জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
Advertisement
কারাগারে রুহুল কবির রিজভী গুরুতর অসুস্থ হওয়ার সংবাদে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রিন্স বলেন, অবিলম্বে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য কারাগারের বাইরে বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালে হস্তান্তর করার ও নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান তিনি। অন্যথায় অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনার দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে। একই সঙ্গে কারাগারে তার বিষয়ে স্পষ্ট করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠার সঙ্গে জানাচ্ছি যে, কারান্তরীণ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গত ২দিন ধরে মারাত্মকভাবে অসুস্থ। আমরা জানতে পেরেছি তিনি বর্তমানে কারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন এবং কোনো খাবার খেতে পারছেন না। রুহুল কবির রিজভীর স্ত্রী আমাদেরকে জানিয়েছেন, তিনিও এ বিষয়ে বারবার যোগাযোগ করে কোনো কিছু জানতে পারছেন না।
আরও পড়ুন: বিশেষায়িত হাসপাতালে রিজভীর চিকিৎসার দাবি
রিজভী আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন জানিয়ে প্রিন্স বলেন, স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে তিনি হরতালে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। সে সময় এবং পরবর্তীতে সড়ক দুর্ঘটনায় তার শরীরে অপারেশন হয়। গত ২ বছরে তিনি হৃদরোগে ও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি বেশ কিছু জটিল রোগে আক্রান্ত।
Advertisement
তিনি বলেন, এর আগেও তিনি যখন কারাগারে বন্দি অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তখন তাকে বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল। কারা হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করানো সম্ভব ছিল না বলেই বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: কারাগারে থাকা রিজভীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
গত ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। ওইদিনই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে সাড়ে চার শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। সেদিন রুহুল কবির রিজভীকেও আটক করে কারাগারে নেওয়া হয়। সম্প্রতি তাকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তিনি কারাগারে যাওয়ার আগে দলের বিভিন্ন বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলতেন। বিশেষ করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ও হামলা-মামলা নিয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলন করতেন রিজভী।
এরমধ্যে কারাগারে থেকেই গত ১৯ জানুয়ারি এলএলএম (মাস্টার্স) পরীক্ষা শেষ করেন বিএনপির এ সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। কারাগারে থেকে মোট তিনটি পরীক্ষা দেন তিনি।
কেএইচ/কেএসআর/এএসএম