খেলাধুলা

আনুষ্ঠানিভাবে মাশরাফিকে শুভেচ্ছা দূত ঘোষণা ইউএনডিপির

জাতিসংঘের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের দলের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার নাম ঘোষণা করা হলো আজ। বৃহস্পতিবার রাজধানির হোটেল লা মেরিডিয়ানে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন ইউএনডিপির আবাসিক সমন্বয়ক রবার্ট ওয়াটকিনস। আনুষ্ঠানিকভাবে এদিন বাংলাদেশ অধিনায়কের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরও করে তারা।মাশরাফিকে শুভেচ্ছা দূত ঘোষণা করে ওয়াটকিনস বলেন, ‘আমরা ইউএনডিপি জাতীয় শুভেচ্ছা দূত হিসেবে মাশরাফি বিন মর্তুজাকে নিয়োগ দিচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের কার্যক্রমে যুক্ত করার জন্য সবচেয়ে আদর্শ ব্যক্তিকেই বেছে নিয়েছি। যে মাঠ ও মাঠের বাইরে দুর্দান্ত পারফর্মার। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ভাবমূর্তি উন্নত করার জন্য মাশরাফি দারুণ ভূমিকা রাখছেন। মাঠের বাইরেও তিনি একজন নেতা। আমরা বিশ্বাস করি, তার ইতিবাচক ভাবমূর্তি তরুণদের অনুপ্রাণিত করতে দারুণভাবে কাজে দিবে।’আজ (বৃহস্পতিবার) জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) ৫০তম বার্ষিকী। ১৯৬৬ সালে ইউএনডিপি যাত্রা শুরু করে। এখন পর্যন্ত ৮৫টির বেশি দেশ এই কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত রয়েছে। ১৯৭২ সাল থেকে এই কর্মসূচি বাংলাদেশে চলছে। তখন থেকেই তারা সরকারের সঙ্গে একাত্ম হয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন বলে জানান ওয়াটকিনস।বাংলাদেশের তরুণদের কর্মসংস্থান খুজে পেতে মাশরাফিদের সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৪৪ শতাংশই তরুণ। এদের মধ্যে ৭০ শতাংশেরই কর্মসংস্থান নেই। আমরা বিশ্বাস করি, তাদেরকে কর্মসংস্থান খুঁজে পেতে মাশরাফির মাধ্যমে আমরা সহায়তা করতে পারবো। তরুণদের নিয়ে আমরা যে কাজ করি, মাশরাফিদের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে সেই কাজটা আরো গতি পেলো বলে বিশ্বাস করি। যোগাযোগ প্রযুক্তি, নতুন প্রযুক্তি বা এ ধরনের আধুনিক পেশার সঙ্গে আমরা এ দেশের তরুণদের যোগাযোগ করিয়ে দিতে চাই। মাশরাফির সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তিনি তরুণদের সম্ভাবনা বের করে আনতে কাজ করার জন্য দারুণ আগ্রহী। সুতরাং, মাশরাফিকে ইউএনডিপি পরিবারের সঙ্গে যুক্ত করতে পেরে আমি ব্যক্তিগতভাবে খুবই খুশি।’ইউএনডিপির শুভেচ্ছাদূত ঘোষণা করায় দারুণ খুশি বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাও। ইউএনডিপিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তরুণদের নিয়ে কাজ করার সুযোগ করে দেয়ার জন্য ইউএনডিপিকে ধন্যবাদ। আমার সব সময় স্বপ্ন ছিলো বাংলাদেশের তরুণদের নিয়ে কাজ করার। সে হিসেবে এটা আমার জন্য খুব ভালো একটা সুযোগ। আমার মনে হয়, খেলাধুলার পাশাপাশি আমি কাজটা করতে পারবো। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সহায়তায় কিংবা নিজের উদ্যোগেও আমি তরুণদের জন্য কিছু করতে চাই। এ জন্য প্রস্তাবটা আসার পরই আতি তা খুব আগ্রহভরে গ্রহণ করেছি। আমার কাছে এটি স্বপ্ন পূরণ হওয়ার মতো ব্যাপার। চেষ্টা করবো আমার সেরাটা দেয়ার। আমাদের দেশের তরুণদের প্রতি আমার প্রবল বিশ্বাস আছে। আশা করছি তরুণরাই উন্নয়নশীল দেশ থেকে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে উন্নীত করবে। ক্রিকেট খেলার পরও অনেক সময় থাকে। তখনই আমি এটা করতে পারবো। মনে হয় না- খুব কঠিন কাজ হবে।’বাংলাদেশে তরুণদের কর্মসংস্থানের প্রক্রিয়ার পরিকল্পনা বর্ণনা করে ইউএনডিপির লামিয়া ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এই কার্যক্রমে বেশ কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন উদ্যোগ আছে। আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হলো তরুণদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা। বাংলাদেশের তরুণদের প্রযুক্তি নির্ভর বিভিন্ন বিষয়ে আমরা প্রশিক্ষণ দিতে চাই। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো, অনলাইন চাকুরির মাধ্যমে বাংলাদেশি তরুণদের পুরো বিশ্বের সঙ্গে মেলবন্ধন সৃষ্টি করা। বাংলাদেশে এখন আড়াই লাখের বেশি ফ্রিল্যান্সার আছেন। যারা অনলাইনে অসংখ্য কাজও পাচ্ছেন। এদের জন্য প্রশিক্ষণ দরকার। আমরা এই প্রোজেক্টের মাধ্যমে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিবো। কারণ এখনো প্রচুর কাজের সুযোগ আছে। এই মেসেজটা পুরো বাংলাদেশের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই। এ জন্যই আমরা সবচেয়ে সেরা পছন্দ মাশরাফিকে বেছে নিয়েছি।’আইএইচএস/এবিএস

Advertisement