ধর্ম

বরকতময় মেরাজের মাস ‘রজব’

‘রজব’ হিজরি (আরবি) বছরের সপ্তম মাস। যুদ্ধ-বিগ্রহ ও রক্তপাত নিষিদ্ধ হওয়া ৪ মাসের একটিও রজব। রহমতের বার্তাবহী মাস রজব। রমজানের প্রস্তুতি নেওয়ার মাস রজব। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার ও মুসলিম উম্মাহর জন্য বরকতময় মাসও রজব।

Advertisement

আজ (২৪ জানুয়ারি) থেকে শুরু হলো পবিত্র রজব মাস। সে হিসেবে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি (২৬ রজব) দিবাগত রাতে পালিত হবে ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত পবিত্র শবে মেরাজ। রজব মাসের ২৬ তারিখ ছিল বিশ্ব নবির জন্য সেরা উপহার ও মুসলিম উম্মাহর জন্য বরকতময় দিন। এ দিনে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতে গিয়েছিলেন। আর উম্মতের জন্য পেয়েছিলেন সেরা ইবাদত নামাজ।

রজব মাস আল্লাহর কাছে অনেক মর্যাদার মাস। কুরআন এবং হাদিসে এ মাসকে পবিত্র এবং নিরাপত্তার মাস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘নিশ্চয় আসমানসমূহ ও জমিন সৃষ্টির দিন থেকে আল্লাহ তা’আলার বিধান ও গণনায় মাস বারটি। তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান; সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না।’ (সুরা তাওবাহ : আয়াত ৩৬)

Advertisement

হাদিসে পাকে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বর্ণনা করেন-

হজরত আবু বাকরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, বার মাসে বছর। তার মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। তিনটি মাস ধারাবাহিক, আর তা হচ্ছে- যিলক্বদ, যিলহজ, মহররম আর চতুর্থ মাসটি হল- রজব, যা জমাদিউল আখির ও শাবান মাসের মধ্যবর্তী মাস।’ (বুখারি)

রজবে নবিজির বরকতের দোয়া

রজব ও শাবান মাস এলেই পবিত্র রমজানের আগমনী ঘোষিত হয়। বেশি ফজিলত ও মর্যাদার কারণে রজব ও শাবান মাসজুড়ে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্দিষ্ট একটি দোয়াটি বেশি বেশি পড়তেন। যে দোয়ায় রজব ও শাবান মাসের বরকত ও পবিত্র রমজান পর্যন্ত হায়াত বৃদ্ধির আবেদন ফুটে উঠেছে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে এ দোয়াটি পড়তেন এবং মুসলিম উম্মাহকেও পড়তে বলেছেন-

Advertisement

اَللهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِىْ رَجَبَ وَ شَعْبَانَ وَ بَلِّغْنَا رَمَضَانَ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা বারাকলানা ফি রাজাবা ওয়া শাবান; ওয়া বাল্লিগনা রামাদান।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনি রজব ও শা’বান মাসকে আমাদের জন্য বরকতময় করুন এবং আমাদেরকে রমজান মাস পর্যন্ত (হায়াত দিন) পৌঁছে দিন।’ (মিশকাত, বায়হাকি)

রজব ও শাবান মাসে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ দোয়াটি বেশি বেশি পড়তেন। যা মুসলিম উম্মাহর জন্য অনুকরণীয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল।

বিশেষ করে

রজব মাস সব ঝগড়া-ফাসাদ, অন্যায় ও অনাচার থেকে মুক্ত। কুরআন-হাদিসে এ মাসসহ আশহুরে হারাম মাসে সব ধরনের রক্তপাত, যুদ্ধ-বিগ্রহ বন্ধ ঘোষণা করেছেন। এ মাসের শিক্ষাকে বছরের বাকি মাসগুলোতে বাস্তবায়নের প্রশিক্ষণও এ মাস।

সুতরাং যাবতীয় অন্যাচয়-অনাচার ও অত্যাচার থেকে মুক্ত থাকতে এ মাসের প্রশিক্ষণে নিজেদের শরিক করা জরুরি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাদের জন্য বরকতময় মাস রজবে ধৈর্য ও সংযম পালনের মাধ্যমে প্রিয় নবি ঘোষিত বরকত লাভ এবং রমজান পর্যন্ত হায়াত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এএসএম