আইন-আদালত

এমপিওভুক্ত ইনডেক্সধারী ৬৬ শিক্ষককে আবেদনের সুযোগ দিতে নির্দেশ

এমপিওভুক্ত ইনডেক্সধারী ৬৬ শিক্ষককে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

Advertisement

মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে এ সংক্রান্ত রিটের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ মাহমুদ বাশার।

আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন রিটকারীদের আইনজীবী ছিদ্দিক উল্লাহ। তিনি জানান, বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে ৬৬ রিট পিটিশনারকে এনটিআরসিএ’র চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আরও পড়ুন: চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি: তথ্য গোপন করে আবেদন থেকে হুঁশিয়ারি

Advertisement

আইনজীবী বলেন, আমি আশা করি, এই আদেশের পর রিটকারী শিক্ষকদের বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে আবেদন করার জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবে কর্তৃপক্ষ।

এর আগে ২০২২ সালের এনটিআরসিএ’র গণবিজ্ঞপ্তির ১২ নম্বর শর্ত এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের (মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ) পরিপত্র অনুযায়ী রিটকারীদের বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে আবেদনের সুযোগ বাতিল করা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ১৬ জানুয়ারি জারি করা ওই রুলে জনবল কাঠামো নীতিমালা অনুযায়ী রিটকারীদের চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।

এতে বিবাদী করা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় (মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ) সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব (কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ), এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যান ও এনটিআরসিএ’র সদস্য (যুগ্মসচিব) শিক্ষাতত্ত্ব ও শিক্ষামানকে।

আরও পড়ুন: চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে বিভাগীয় প্রার্থীদের আবেদনে বাধা কাটলো

Advertisement

আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে অনুসরণীয় পদ্ধতি’ বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই পরিপত্রের ৭.০. নম্বর ক্রমিকে উল্লেখ আছে যে, কর্মরত কোনো শিক্ষক যদি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পেতে আবেদন করেন, তবে তাকেও অপরাপর আবেদনকারীদের একইরূপ মেধাক্রমের ভিত্তিতে নিয়োগের জন্য বিবেচনা করা হবে।’

আর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদরাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ (২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত সংশোধিত)-এর ধারা ১২, এবং বেসরকারি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ (২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত সংশোধিত)-এর ধারা ২৩.১-এ উল্লেখ্য আছে, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে সমপদে বা উচ্চতর পদে নিয়োগের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

আরও পড়ুন: শিক্ষক নিয়োগে একাধিক আবেদন পদ্ধতি বন্ধ হচ্ছে

আইনজীবী আরও বলেন, আগের প্রতিষ্ঠান হতে ছাড়পত্র ও দায়মুক্তি সাপেক্ষে নতুন প্রতিষ্ঠানে এমপিও প্রাপ্য হবে, অর্থাৎ কর্মরত ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের অন্য প্রতিষ্ঠানে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে আবেদন করার সুযোগ আছে। কিন্তু বিগত ১৪ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় অপর একটি পরিপত্র জারি করে ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর পরিপত্রের ৭.০. নম্বর ক্রমিক সাময়িকভাবে স্থগিত ঘোষণা করে। পরবর্তীতে ২০২২ সালের ২১ ডিসেম্বর এনটিআরসিএ’র চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, যাতে ১৪ নভেম্বর পরিপত্রের বিষয় উল্লেখ করে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের অন্য প্রতিষ্ঠানে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে আবেদন করার সুযোগ বাতিল করা হয়।

আরও পড়ুন: জাল সনদ ধরতে তৎপর এনটিআরসিএ

ওই গণবিজ্ঞপ্তি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১৪ নভেম্বর পরিপত্রের ওপর সংক্ষুব্ধ হয়ে ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা রিট করলে চলতি মাসের ১৬ জানুয়ারি প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট রুল জারি করেন।

রিটকারীরা হলেন মো. মফিজুর রহমান, মোসা. পপি আক্তার, মো. আব্দুল বারেক, মো. সোহেল রানা, মো. নেয়ামত শেখ, মো. আনিসুর রহমান ও মো. আলগীর হোসেনসহ বিভিন্ন জেলার মোট ৬৬ ইনডেক্সধারী শিক্ষক।

এফএইচ/জেডএইচ/এমএস