মাসুকুর রহমান ওরফে রণবীর ওরফে মাসুদ ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র অন্যতম শুরা সদস্য ও সামরিক শাখার প্রধান। ডাকাতির এক মামলায় গ্রেফতারের পর কারাগারে থাকাকালে জঙ্গিদের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয় এবং কারাগারে উগ্রবাদী মতাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়।
Advertisement
জেল থেকে বেরিয়ে বিভিন্ন সময়ে কারাগারে থাকা জেএমবি সদস্য ও তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন। ২০১৭ সালে জামাতুল আনসারের শুরা সদস্য এবং অর্থ ও মিডিয়া শাখার প্রধান রাকিবের সঙ্গে পরিচয় সূত্রে জামাতুল আনসারে যোগদান করেন।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র শুরা সদস্য ও সামরিক শাখার প্রধান রণবীর ও তার সহযোগী বোমা বিশেষজ্ঞ বাশারকে কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এ তথ্য জানায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ( র্যাব)।
আরও পড়ুন>> নিষিদ্ধ হচ্ছে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’
Advertisement
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, গত ২৩ আগস্ট কুমিল্লা সদর থেকে আটজন তরুণ নিখোঁজ হয়। ২৫ আগস্ট তাদের পরিবার কুমিল্লার কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর আট তরুণদের মধ্যে পালিয়ে আসা নিলয়কে র্যাব আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায় গোয়েন্দারা এবং নিলয়কে ডি-রেডিক্যালাইজেশন সেলের মাধ্যমে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন>> জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ৫ সদস্য গ্রেফতার
নিলয়ের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে গত ৫ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে নিখোঁজ হওয়া রিফাতসহ নতুন জঙ্গি সংগঠনের সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়। যাদের জিজ্ঞাসাবাদে দেশে একটি নতুন জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। যার নাম ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’।
Advertisement
কমান্ডার মঈন বলেন, র্যাব ফোর্সেস গোয়েন্দা শাখা এবং র্যাবের বিভিন্ন ব্যাটালিয়ন গত সেপ্টেম্বর ২০২২ থেকে অদ্যাবধি বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে কুমিল্লা থেকে নিখোঁজ হওয়া আট তরুণের মধ্যে চারজনসহ নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র ৩৮ জন বিভিন্ন প র্যায়ের নেতা ও সক্রিয় সদস্য এবং ২০২১ সাল থেকে এ জঙ্গি সংগঠনকে সহায়তা দেওয়া এবং সামরিক প্রশিক্ষণের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অপরাধে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ১৪ জন নেতা ও সদস্যকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন>> জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার দুই অর্থদাতা গ্রেফতার
বিভিন্ন প র্যায়ে গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবের গোয়েন্দা শাখা জানতে পারে, জামাতুল আনসারের আমির মো. আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদ নামক ব্যক্তি। যার নেতৃত্বে উগ্রবাদী সংগঠনটি পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া উগ্রবাদী এ সংগঠনে ৬ জন শুরা সদস্য রয়েছে। যারা দাওয়াতি, সামরিক, অর্থ, মিডিয়া ও উপদেষ্টার দায়িত্বে রয়েছে।
শুরা সদস্য আবদুল্লাহ মাইমুন দাওয়াতি শাখার প্রধান, গ্রেফতার মাসুকুর রহমান রণবীর সামরিক শাখার প্রধান। এরই মধ্যে গ্রেফতার মারুফ আহমেদ সামরিক শাখার দ্বিতীয় ব্যক্তি, মোশারফ হোসেন ওরফে রাকিব অর্থ ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান, শামীম মাহফুজ প্রধান উপদেষ্টা ও প্রশিক্ষণের সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক এবং ভোলার শায়েখ আলেম বিভাগের প্রধান হিসেবে সংগঠনটিতে দায়িত্ব পালন করছে।
এ নতুন জঙ্গি সংগঠনের ৫৫ জন সদস্যকে পাহাড়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফের প্রধান নাথান বম, সামরিক কমান্ডার কথিত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ভাংচুং লিয়ান বম এবং অপর আরেক নেতা মিডিয়া শাখা প্রধান কথিত লেফটেন্যান্ট কর্নেল লালজং মুই ওরফে মাওয়াইয়া এবং কথিত লেফটেন্যান্ট কর্নেল লাল মুন ঠিয়াল ওরফে চির চির ময়’র সরাসরি তত্ত্বাবধানে পার্বত্য চট্টগ্রামে আশ্রয় দিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে।
এ তথ্যের পর বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় র্যাব নব্য জঙ্গি সংগঠনের পাহাড়ে প্রশিক্ষণরত জঙ্গি সদস্য এবং তাদের প্রশ্রয়দানকারীদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান ও নজরদারি চলমান রেখেছে।
আরও পড়ুন>> বান্দরবানে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ৫ সদস্য আটক
গত ২৩ জানুয়ারি ভোর ৫টায় র্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-২, র্যাব-৩ এবং র্যাব-১৫ এর যৌথ অভিযানে কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন ইয়াহিয়া গার্ডেনের গহীন বনাঞ্চল এলাকা থেকে এ সংগঠনের শুরা সদস্য ও সামরিক শাখার প্রধান মাসুকুর রহমান রণবীর (৪৪) ও বোমা বিশেষজ্ঞ আবুল বাশার মৃধা ওরফে আলমকে (৪৪) গ্রেফতার করা হয়।
এসময় উদ্ধার করা হয় একটি বিদেশি পিস্তল, তিনটি পিস্তলের ম্যাগজিন, ১০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, একটি ব্লাঙ্ক কার্টিজ, দুটি একনলা বন্দুক, ১১টি ১২ বোরের কার্তুজ, একটি খালি খোকা, ১০০ রাউন্ড, ২২ বোরের গুলি, একটি মোবাইল, নগদ ২ লাখ ৫৭ হাজার ২৬০ টাকা। পাশাপাশি পার্বত্য অঞ্চলে সামরিক প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর ভিডিও কন্টেন্ট জব্দ করা হয়।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত বছরের ২০ অক্টোবর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা এবং র্যাব-৭ এর বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সমতল থেকে পাহাড়ে আত্মগোপনে থাকা সাত জঙ্গি এবং তাদের সহায়তাকারী তিনজন কেএনএফ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন>> জঙ্গি সংগঠন জামাতুল হিন্দালের ৫ সদস্য দুদিনের রিমান্ডে
এরপর দিন ২১ অক্টোবর গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে বিলাইছড়ি থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। গ্রেফতার সাত আসামির মধ্যে নব্য জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সামরিক শাখার উপ-প্রধান সৈয়দ মারুফ আহমেদ মানিক ছিলেন।
গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিলাইছড়ি থানায় রুজু করা মামলার তদন্তকারী অফিসার আদালতে ৫ জন আসামির রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত সংগঠনটির সামরিক শাখার উপ-প্রধান সৈয়দ মারুফ আহমেদ ওরফে মানিকসহ ৫ আসামির ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সৈয়দ মারুফ আহমেদকে জিজ্ঞাসাবাদে সংগঠনটির সামরিক শাখার প্রধান মাসুকুর রহমান ওরফে রণবীর ওরফে মাসুদের বিভিন্ন কার্যক্রম এবং সম্ভাব্য অবস্থান সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৭ এর ‘এ’ ব্লক জঙ্গি সংগঠনটির সামরিক শাখার প্রধান মাসুকুর রহমান ওরফে রণবীর ওরফে মাসুদ এবং আইইডি বা বোমা বিশেষজ্ঞ মো. আবুল বাশার মৃধা ওরফে আলম গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার মাসুকুর রহমান রণবীর সম্পর্কে কমান্ডার মঈন বলেন, রণবীর জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ এর অন্যতম শুরা সদস্য ও সামরিক শাখার প্রধান। তিনি ২০০৭ সালের আগে পোস্ট অফিসে চাকরি করতেন। ডাকাতি এক মামলায় গ্রেফতারের পর কারাগারে থাকাকালে জঙ্গিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং জেএমবির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়।
জেল থেকে বের হওয়ার পর তিনি বিভিন্ন সময়ে কারাগারে থাকা জেএমবি সদস্য ও তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন। ২০১৭ সালে জামাতুল আনসারের শুরা সদস্য এবং অর্থ ও মিডিয়া শাখার প্রধান রাকিবের সঙ্গে পরিচয় হয়। তিনি প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য হিসেবে জামাতুল আনসারে যোগদান করেন।
রণবীর সিলেট অঞ্চলে সংগঠনের দাওয়াতি ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমসহ সামরিক শাখার সদস্য নির্বাচন কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করতেন। সংগঠনের সামরিক শাখার বিভিন্ন নীতি নির্ধারণী বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি সংগঠনের আমিরের নির্দেশনায় কুমিল্লার পদুয়ার বাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি শুরা কমিটির মিটিংয়ের আয়োজন করেন।
এসব সভায় সংগঠনের সামরিক শাখার কার্যক্রমসহ বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী বিষয়ে সিদ্বান্ত গৃহিত হয়। এছাড়া ২০০১ সালে পাহাড়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রশিক্ষণ সেন্টারের সঙ্গে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার চুক্তিপত্র সইয়ের সময় বৈঠকে রণবীরসহ অন্যান্য শুরা সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে গ্রেফতার রণবীর পাহাড়ে সামরিক প্রশিক্ষণের রূপরেখা নির্ধারণ করেন।
আরও পড়ুন>> র্যাবের সঙ্গে গোলাগুলি, ‘জামাতুল আনসারের’ সামরিকপ্রধান আটক
২০২১ সালের নভেম্বরে সিলেট থেকে ৪ তরুণের নিখোঁজের ঘটনায় তিনি জড়িত ছিলেন। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ শেষে নিখোঁজ ওই চার তরুণকে সে সামরিক শাখায় নিযুক্ত করেন। প্রায় এক বছর আগে সে সংগঠনের সামরিক শাখা প্রধানের দায়িত্বগ্রহণ করেন। তার সামরিক কার্যক্রমের দুটি শাখা ছিল, যার একটি পাহাড়ে এবং অপরটি সমতলে। সমতলে সামরিক শাখার কার্যক্রম তার নেতৃত্বে পরিচালিত হতো। তিনি দেশব্যাপী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত সদস্যদের সামরিক সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ ও সামরিক শাখার সদস্য নির্বাচন কার্যক্রম দেখভাল করতেন। তার নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে পাহাড়ে সামরিক শাখার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অপর একজন সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণের জন্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ ক্রয় করা হতো। তিনি বিভিন্ন সময়ে প্রশিক্ষণ প্রদান ও তদারকির জন্য পার্বত্য অঞ্চলে গমন করতেন।
পাহাড়ে র্যাবের অভিযান শুরু হলে তিনি সিলেট, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আত্মগোপন করেন এবং কিছুদিন আগে আত্মগোপনের উদ্দেশ্যে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নেন।
গ্রেফতার আবুল বাশার মৃধা ওরফে আলম হাটহাজারীর একটি মাদরাসা থেকে পড়াশোনা শেষে সেখানেই শিক্ষকতা করতেন। তার সাংগঠনিক নাম আলম। নিখোঁজ ৫৫ জনের তালিকায় আবুল বাশারের নাম রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হুজির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
হুজি সংগঠনে থাকাকালীন সময়ে ঝালকাঠির নলসিটি এলাকায় সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমের জন্য দায়ের করা নাশকতার মামলায় ২০১৩ থেকে ২০৬ সাল পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন বছর কারাভোগ করেন। ২০১৬-১৭ সালের দিকে জামাতুল আনসারের আমির মাহমুদের মাধ্যমে জামাতুল আনসারে যোগ দেন।
পাহাড়ে প্রশিক্ষণের জন্য ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে বাড়ি ত্যাগ করেন এবং ২ মাস সমতলের বিভিন্ন জায়গায় প্রশিক্ষণ নেন। পরে তিনি রণবীর ও রাকিবের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য পার্বত্য অঞ্চলে যান। তিনি আইইডিসহ বিভিন্ন ধরনের বোমা তৈরিতে দক্ষ ছিলেন। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছ থেকে বোমা তৈরির বিষয়ে বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ নেন। জামাতুল আনসারের পাহাড়ে প্রশিক্ষণার্থীদের সে বিভিন্ন ধরনের বোমা তৈরিবিষয়ক প্রশিক্ষণ দিতেন।
বয়সে বড় হওয়ায় পাহাড়ে প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত নীতিনির্ধারণী বৈঠকে যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণে সে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন। পাহাড়ে র্যাবের অভিযান শুরু হলে তিনি ৫৫ জনের দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পালিয়ে সিলেটে যান। তিনি সামরিক শাখার প্রধান রণবীরের সঙ্গে সিলেট, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেন। কিছুদিন আগে তিনি রণবীরের সঙ্গে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় আত্মগোপন করেন।
পাহাড়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফের প্রধান নাথান বম কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত সেপ্টেম্বরের পর থেকে নাথান বমের সঙ্গে রণবীর কোনো যোগাযোগ নেই। জামায়াতুল আনসারের আমিরের সন্ধান ও আইনের আওতায় আনা সম্ভব হলে নাথান বম সম্পর্কে জানা যাবে।
কারাগারে গিয়ে নতুন জঙ্গি সংগঠনে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন রণবীর। এর আগে অনেকে কারাগারে গিয়ে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। কারাগার কী তবে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধকরণের নিরাপদ জায়গা? এখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো কার্যক্রম বা নজরদারি রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও কারা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। রণবীর জিজ্ঞাসাবাদে কারাগারে থাকাকালেই জামাতুল আনসারে উদ্বুদ্ধ হওয়ার কথা বলেছেন। এরকম অনেকেই উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। ২০০৫-০৬ সালের দিকে এটি বেশি হয়েছে। নতুন করে কারাগারে যাতে এ সুযোগ তৈরি না হয়, সেজন্য কারা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এক প্রশ্ন জবাবে খন্দকার আল মঈন বলেন, ২০১৭ সাল থেকে নতুন এ জঙ্গি সংগঠনের কাজ শুরু হলেও ২০২১ সাল থেকে এরা কর্যক্রম শুরু হয়। এদের কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ হয়ে অর্ধশতাধিক মানুষ পাহাড়ে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। এ সংগঠনের ৪০ জনের অধিক মানুষ এখনো আত্মগোপনে রয়েছে। এর আগে র্যাব থেকে ৫৫ জনের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। অনেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সমতলে ফিরেছেন। আবার অনেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রশিক্ষণ করাচ্ছেন।
আরেক প্রশ্নের জবাবে আল মঈন বলেন, শুরা সদস্য রণবীরের কাছ থেকে একটি ভিডিও পাওয়া গেছে। সেই ভিডিও নিজেদের মধ্যে প্রচার করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। নতুন কর্মীদের প্রশিক্ষণে উদ্বুদ্ধ করার জন্য এ ভিডিও তৈরি করা হয়। প্রশিক্ষণে অস্ত্রগুলো আনা হতো অর্থের বিনিময়ে। এছাড়া নতুন জমি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারে র্যাবের গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য সংস্থা কাজ করছে।
টিটি/এমএএইচ/জিকেএস