অর্থনীতি

রমজানে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান

আসন্ন রমজান মাসে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জাতীয় ভোক্তা-সংরক্ষণ অধিদপ্তর কঠোর অবস্থানে থাকবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে বাজার অস্থির হয়ে যায়।

Advertisement

সরবরাহ সংকটের অজুহাত দেখিয়ে আসন্ন রমজানে যেন পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো না হয় সে বিষয়েও ব্যবসায়ীদের তাগিদ দেন তিনি।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের (আদা, রসুন, হলুদ ও শুকনো মরিচ) সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে আমদানিকারক, পাইকারি এবং খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

আরও পড়ুন>> সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে চাল-আটা-ডাল-বেকারি পণ্যের

Advertisement

এসময় সভায় উপস্থিত ব্যবসায়ীরা তাকে জানান, প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য অস্থিতিশীল ও সরবরাহ সংকট হওয়ার ক্ষেত্রে বিদ্যমান এলসি খোলার ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। এছাড়া অসাধু ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে পণ্য মজুত করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা ও পূর্বের মূল্যে কেনা পণ্য বর্ধিত নতুন মূল্যে বিক্রি করা, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে তাদের সহযোগিতা দিতে হবে।

এরপর মহাপরিচালক বলেন, যেসব সাজেশন ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে এসেছে, তা সুপারিশসহ একটি লিখিত প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

তিনি বলেন, রমজানের আগে আমাদের দেশি পেঁয়াজ উঠবে। এতে করে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কোনো সম্ভাবনা নেই। ৫০ টাকার মধ্যেই থাকবে দাম। কিন্তু আদা-রসুনের বাজার অস্থির। রমজান আসার আগেই দাম বাড়তে শুরু করেছে। হঠাৎ করে আদা-রসুনের দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত কেজিতে বাড়ছে। কিছু পণ্য হয়তো আমদানিনির্ভর, ডলারের দাম বৃদ্ধি অনুসারে ২৫ শতাংশ দাম বাড়তে পারতো। কিন্তু ডলারের বাজারের তুলনায় পণ্যের দাম আরও বেশি বাড়ানো হয়েছে। দাম নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে বাজার আরও অস্থির হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন>> যুদ্ধ ও স্যাংশন সব পণ্যের দাম বাড়ার কারণ: মন্ত্রী

Advertisement

আদা-রসুনের দাম বৃদ্ধি নিয়ে তিনি আরও বলেন, গত সপ্তাহে আমাদের টিম আদা-রসুনের বাজার নিয়ে কাজ করেছে। আমরা কারওয়ানবাজারসহ শ্যামবাজার পাইকারি, খুচরা এবং আড়তে একটু খোঁজ নিলাম। আন্তর্জাতিক এলসি খোলার বিষয়টা খোঁজ নিলাম। যেমন- আদা, রসুন, শুকনা মরিচ এবং হলুদ- এগুলো কিন্তু ইমপোর্ট (আমদানি) নির্ভরতা আছে। সম্পূর্ণভাবে দেশি উৎপাদন দিয়ে বাজার চালানো সম্ভব না। সেক্ষেত্রে এখানে যদি ইমপোর্ট কমে যায়, দেশীয় যে উৎপাদন সেখানে কিন্তু ঘাটতি পড়বে। সামনে রমজানের পরে কিন্তু কোরবানি। তাই এসব পণ্য যদি ইম্পোর্ট স্মুথ (সচল) না রাখতে পারি তাহলে স্থানীয় উৎপাদন দিয়ে এই বাজার ধরে রাখা যাবে না। তাই আমদানি স্বাভাবিক না থাকলে রমজানে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।

এসময় তিনি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি ব্যবসায়ীদের সব আইন মেনে ব্যবসা করা, সঠিকমূল্যে ভোক্তাদের নিকট পণ্য বিক্রি করা, ক্রয়-বিক্রির ভাউচার দোকানে সংরক্ষণ করা ও কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পণ্যের মূল্যবিদ্ধি না করার বিষয়ে আহ্বান জানান।

আরও পড়ুন>> গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ায় দ্রব্যমূল্য কিছুটা বাড়বে

এসময় এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি আমিন হেলালী বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করলে তাদের আইনের আওতায় শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। তিনি ব্যবসায়ীদের সঠিকমূল্যে ভোক্তার নিকট পণ্য বিক্রির অনুরোধ জানান।

সফিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবীর ভূঁইয়া, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিনিধি, ডিজিএফআইয়ের প্রতিনিধি, এনএসআইয়ের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এনএইচ/ইএ/এএসএম