আইন-আদালত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাবেন বার কাউন্সিল নেতারা

জেলা আইনজীবী সমিতির সঙ্গে আদালতের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বর্ধিত সাধারণ সভা ডেকেছে সারাদেশের আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিল। ওই সভায় আইনজীবী নেতাদের ডাকা হয়েছে। এজন্য কাউন্সিলের নেতারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা বারে যাবেন।

Advertisement

সেখানে আইনজীবীদের সঙ্গে বসে শান্তিপূর্ণ সমাধান করার কথা জানিয়েছেন বার কাউন্সিলের কমপ্লায়েন্ট অ্যান্ড ভিজিলেন্স কমিটির চেয়ারম্যান সিনিয়র অ্যাডভোকেট এম. সাঈদ আহমেদ রাজা।

আরও পড়ুন>>> ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনজীবীদের আচরণে হতাশ হাইকোর্ট

বিচারকের বিরুদ্ধে স্লোগানের অভিযোগের তলবে ২১ আইনজীবী হাজিরের পর সোমবার (২৩ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এমন তথ্য জানানো হয়।

Advertisement

এসময় আইনজীবীদের পক্ষে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় চান সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির। এরপর আদালত ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দেন। ওইদিন আইনজীবীদের হাজির থাকতে হবে।

আদালতে সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, আগামী ২৮ জানুয়ারি বার কাউন্সিল একটি বর্ধিত সভা ডেকেছে। এতে জেলা বারের নেতাদের ডাকা হয়েছে। বার কাউন্সিল কমিটির সবাই সেখানে থাকবেন। আমরা মেসেজটা দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাচ্ছি। আশা করি এ ধরনের ঘটনার সমাধান হবে।

রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, বার কাউন্সিলের সদস্য আমাদের সভার কথা জানিয়েছেন। আমাদের মিটিংয়ের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাবো। সেখানে আইনজীবীদের সঙ্গে বসে পরিস্থিতি কাম ডাউন করবো। এজন্য সময় দিতে পারেন। এরপর আদালত ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দেন।

এর আগে, গত ১০ জানুয়ারি তাদের তলব করে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

Advertisement

২১ আইনজীবী হলেন-মিনহাজুল ইসলাম, এমদাদুল হক হাদি, নিজামুদ্দিন খান রানা, আনিছুর রহমান মঞ্জু, মো. জুম্মন চৌধুরী, রাশেদ মিয়া হাজারী, জাহের আলী, মো. আ. আজিজ খান, দেওয়ান ইফতেখার রেজা রাসেল, মো. ছদর উদ্দিন, মাহমুদুর রহমান রনি, মো. মাহবুবুর রহমান, মো. আরিফুল হক মাসুদ, মীর মোহাম্মদ রাইসুল আহম্মেদ, মহিবুর রহমান, মো. জাকারিয়া আহমেদ, মো. মোবারক উল্লা, মো. ফারুক আহমেদ ও সফিক আহমেদ।

আরও পড়ুন>>> ব্যাখ্যা দিতে হাইকোর্টে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ২১ আইনজীবী

গত ২ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে ‘এজলাসে আদালতের বিচারক ও কর্মচারীদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ এবং অশালীন আচরণের জন্য আদালত অবমাননার ব্যবস্থা গ্রহণের প্রার্থনা’ শীর্ষক একটি চিঠি পাঠান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-১ বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুক।

এ চিঠি প্রধান বিচারপতি বরাবরে উপস্থাপন করেন রেজিস্ট্রার জেনারেল। পরে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য প্রধান বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে উপস্থাপনের নির্দেশ দেন।

সে অনুসারে এ বেঞ্চে নথি উপস্থাপন করা হয়। এরপর ৫ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করে সভাপতি অ্যাডভোকেট তানভীর ভূঁইঞা, সম্পাদক (প্রশাসন) অ্যাডভোকেট মো. আক্কাস আলী ও অ্যাডভোকেট জুবায়ের ইসলামকে তলব করেন। ১৭ জানুয়ারি হাইকোর্টে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। পরে ১৭ জানুয়ারি তিন আইনজীবী হাজিরের পর ১৪ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।

আরও পড়ুন>>> বিচারকের সঙ্গে ‘অশালীন আচরণ’: ভিডিও সরাতে বিটিআরসিকে নির্দেশ

এর মধ্যে গত ৫ ও ৮ জানুয়ারি এজলাস চলাকালে কয়েকজন আইনজীবী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা জজ শারমিন নিগারের বিরুদ্ধে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দেন। এতে বিচারকাজ বিঘ্নিত হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিকার চেয়ে জেলা সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর ৯ জানুয়ারি একটি চিঠি পাঠানো হয়।

তারপর বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে উপস্থাপন করেন রেজিস্ট্রার জেনারেল। প্রধান বিচারপতি বিষয়টি বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সে অনুসারে বিষয়টি ১০ জানুয়ারি মঙ্গলবার আদালতে ওঠে।

এফএইচ/এমআইএইচএস/জেআইএম