জাতীয়

প্লাস্টিকমুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়তে এসডো’র বিশেষ উদ্যোগ

টেকসই পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন-এসডো ‘প্লাস্টিকমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার উদ্যোগ’ গ্রহণ করেছে।

Advertisement

রোববার (২২ জানুয়ারি) ঢাকার একটি হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হলো মানবস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর প্লাস্টিকের বিষাক্ততা সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মকে সচেতন করা, পরবর্তী প্রজন্মের নেতৃত্ব তৈরি এবং তরুণ শিক্ষার্থীদের একবার-ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জনে উদ্বুদ্ধ করা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার।

তিনি বলেন, প্লাস্টিকদূষণ বিশ্বে পরিবেশগত সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি। কারণ একবার-ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যগুলোর ক্রমবর্ধমান উৎপাদন এবং এসব পণ্যের ব্যবহার দেশকে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত সমস্যার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এসডো এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের ‘প্লাস্টিকমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার উদ্যোগ’ প্রকল্পটি মূলত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বিশ্বব্যাপী একবার-ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকদূষণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং বাংলাদেশে করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (সিএসআর) বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

Advertisement

আরও পড়ুন>>> ফের বায়ুদূষণে শীর্ষে ঢাকা

উপমন্ত্রী আরও বলেন, প্লাস্টিক সম্পর্কে শিশু-কিশোরদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি ও পরিবেশগত স্থিতিশীলতা নিশ্চিতের মাধ্যমে পরবর্তী তরুণপ্রজন্ম একবার-ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দ্রব্য প্রত্যাখ্যান করতে উদ্বুদ্ধ হবে। এই উদ্যোগ বাংলাদেশ এবং বিদেশে উভয় ক্ষেত্রেই আমাদের উৎপাদন ও ব্যবহারের পরিবেশগত প্রভাব কমাতে সাহায্য করবে এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন সীমিত করবে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি এসডো’র চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ বলেন, প্লাস্টিকদূষণ শুধুমাত্র পরিবেশের জন্যই নয়, মানুষের স্বাস্থ্যের জন্যও বিপর্যয়কর পরিণতি ডেকে আনে। শিক্ষার্থীদের টেকসই মূল্যবোধ গ্রহণ করতে অনুপ্রাণিত করা এবং একবার-ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জন করার জন্য তাদের প্রস্তুত করা আমাদের দায়িত্ব, যা তাদের ভবিষ্যৎ গঠনে সহায়তা করবে।

ন্যাশনাল কারিকুলাম অ্যান্ড টেক্সটবুক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ ফরহাদুল ইসলাম অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে প্লাস্টিক বর্জ্য এবং দূষণ কমাতে এটি একটি চমৎকার ধারণা এবং এনসিটিবি এটিকে বাস্তবায়িত করতে সহায়তা করার অঙ্গীকার করেছে।

Advertisement

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিকদূষণ এবং একবার-ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক প্যাকেজিং আমাদের জলবায়ুর জন্য হুমকি। আশা করি স্টেকহোল্ডারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা একটি টেকসই বাস্তুতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবো।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের (এমটিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, এমটিবিএল প্লাস্টিকদূষণ কমানোর পাশাপাশি জলবায়ু সংকট মোকাবিলা করার জন্য অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশসহ সমাজের সব দিকের ওপর পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে সচেতন। করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা এবং এসডিজি অর্জনে বাংলাদেশকে সহায়তা করার ক্ষেত্রে এমটিবিএল অবদান রাখবে।

আরও পড়ুন>>> ট্রাফিক পুলিশ-রিকশাচালকদের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট

এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, এই প্লাস্টিকমুক্ত ক্যাম্পাস প্রকল্পটি একবার-ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে আমরা প্রতিটি স্টেকহোল্ডারের সহযোগিতা আশা করছি। ১৯৯০ সাল থেকে আমরা প্লাস্টিকদূষণের ওপর বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। ভবিষ্যতেও এই কার্যক্রম অব্যহত থাকবে।

এসডো’র নির্বাহী পরিচালক সিদ্দীকা সুলতানার বলেন, প্লাস্টিক পণ্যগুলোতে বিপজ্জনক, নিষ্কাশনযোগ্য যৌগগুলোর জটিল সংমিশ্রণ রয়েছে। একবার-ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ইস্যুটি বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশগত সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি। আমাদের সবার উচিত একবার-ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকপণ্য বর্জন করা এবং পরবর্তী প্রজন্মের জন্য টেকসই উন্নত জীবন নিশ্চিত করা। প্রতারণামূলক অবাস্তব সমাধানের দিকে যাবেন না।

এসডো’র প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট সুরাইয়া আক্তার এবং প্রজেক্ট অ্যাসোসিয়েট জান্নাতুল ফেরদৌস জুবলির উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সরকারি, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ৈর প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্কুল, গার্ল গাইড স্বেচ্ছাসেবক, মিডিয়া এবং এসডো টিমের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এনএইচ/ইএ/জেআইএম