দেশজুড়ে

বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব: চলছে দ্বিতীয় দিনের বয়ান

টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে তাবলীগ জামাতের দ্বিতীয় পর্বের বয়ান চলছে। শনিবার (২১ জানুয়ারি) পর্বের দ্বিতীয় দিন সকাল থেকে দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লির উদ্দেশে চলে পবিত্র কোরআন-হাদিসের আলোকে বয়ান। ইতোমধ্যে ইজতেমা ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে।

Advertisement

চলছে বয়ানদুদিন ধরে সার্বক্ষণিক ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত রয়েছেন মুসল্লিরা। প্রতিদিন ফজর থেকে এশা পর্যন্ত ঈমান, আমল, আখলাক ও দ্বীনের পথে মেহনতের ওপর বয়ান হচ্ছে। তাবলীগের ৬ উসুলের (মৌলিক বিষয়ে) ওপর বাদ ফজর ভারতের হযরত মাওলানা ইয়াকুব ছিলানীর বয়ানের মধ্যদিয়ে শনিবার দ্বিতীয় দিনের বয়ান শুরু হয়। বয়ানের বাংলা অনুবাদ করেন মাওলানা মনির বিন ইউসুফ। বাদ আসর বয়ান করবেন মাওলানা সাদের তিন নম্বর ছেলে মাওলানা ইলিয়াস বিন সাদ। আসরের পর যৌতুক বিহীন বিয়ে সম্পন্ন হবে।

আরও পড়ুন: আম বয়ানের মধ্যদিয়ে বিশ্ব ইজতেমা শুরু

তাশকিলইজতেমা প্যান্ডেলের উত্তর-পশ্চিমে তাশকিলের কামরা স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি খিত্তায় তাশকিলের জন্য বিশেষ স্থান রাখা হয়েছে। বিভিন্ন মেয়াদে আল্লাহর রাস্তায় বের হতে ইচ্ছুকরা নাম তালিকাভুক্ত করে সেখানে অবস্থান করছেন। কাকরাইলের মসজিদের মুরব্বিদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের দেশের বিভিন্ন এলাকায় দ্বীনের মেহনতে পাঠানো হবে।

Advertisement

ইজতেমায় বিদেশি মুসল্লিইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের প্রথম দিনই জর্ডান, লিবিয়া, আফ্রিকা, লেবানন, আফগানিস্তান, ফিলিস্তিন, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, ইরাক, সৌদি আরব, ভারত, পাকিস্তানসহ বিশ্বের ৬০টিরও অধিক দেশ থেকে প্রায় সাত হাজার মুসল্লি আসেন। ভাষাভাষী ও মহাদেশ অনুসারে ময়দানে চার তাবুতে রয়েছেন মেহমানরা। এরমধ্যে রয়েছে ইংরেজি খিমা, উর্দু খিমা, আরবি খিমা ও বাংলা খিমায় তারা অবস্থান করছেন।

নিরাপত্তা ও যান চলাচলআখেরি মোনাজাত উপলক্ষে পুলিশের পক্ষ থেকে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। গাজীপুরে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম জানান, শনিবার মধ্যরাত থেকে মোনাজাত শেষে রোববার বিকাল পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত, টঙ্গী-কালীগঞ্জ সড়কের মিরেরবাজার থেকে স্টেশন রোড পর্যন্ত, কামারপাড়া থেকে আশুলিয়া পর্যন্ত এবং বিমানবন্দর থেকে টঙ্গী ব্রিজ পর্যন্ত সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকবে।

আরও পড়ুন: যেভাবে বাংলাদেশে বিশ্ব ইজতেমা শুরু হলো

তিনি বলেন, ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশ এলাকা কড়া নিরাপত্তার মধ্যে রয়েছে। প্যান্ডেলের ভেতর ও বাইরে মুসল্লিবেশে রয়েছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার পর্যাপ্ত সদস্য। এছাড়া প্রায় ১০ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পুরো ইজতেমা ময়দানকে নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে রেখেছেন।

Advertisement

বিশেষ ট্রেনটঙ্গীর রেলওয়ে স্টেশনের কর্মকর্তা জানান, আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে রেলওয়ে আখাউড়া, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন রুটে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে। মোনাজাতের আগে ও পরে সব ট্রেন টঙ্গী স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে। ইজতেমায় আগত যাত্রীদের কথা বিবেচনায় রেখে টঙ্গী রেলওয়ে জংশনে অতিরিক্ত টয়লেট ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ফ্রি চিকিৎসা সেবাইজতেমায় আগত দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লিদের চিকিৎসাসেবা দিতে ময়দানে রয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে ১২ টি মেডিকেল ডিম, ৬টি বিশেষায়িত মেডিকেল টিম, একটি কন্ট্রোল রুম, একটি স্বাস্থ্য শিক্ষা টিম, রেডিওলজি, প্যাথলজি, ফার্মাসিস্ট টিম ও ১১টি স্যানেটারি ইন্সপেক্টর টিম গঠন করা হয়েছে। এসব টিমে ১২ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, ৫১ জন চিকিৎসক, চারজন ডেন্টাল সার্জনসহ কর্মকর্তা কর্মচারী মিলে ১৯৬ জন কাজ করছে। এছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে অর্ধশতাধিক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান প্রতিদিন হাজার হাজার মুসল্লিকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে।

মো. আমিনুল ইসলাম/আরএইচ/এমএস